রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমন করতে ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কেএম সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে ১০ জন শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের নামে বরিশালের বন্ধর থানায় জিডি করেন । 

ববি রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অশালীন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা রবিবার (২৭ এপ্রিল) রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দেন। পরে উপাচার্যের চাপে পড়ে সহকারী রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করতে বন্ধর থানায় যান। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধ না থাকায় থানা মামলা না নেওয়ায় জিডি করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কণ্ঠরোধ করতে জিডি এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এর আগেও তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন, যা এখনো বহাল রয়েছে।

জিডিতে লেখা হয়েছে, বিবাদীগণ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র। তারা বিভিন্নভাবে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে বেড়ায়। বিধানীগণ সংঘবদ্ধ হওয়ায় তাদের ভয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তটস্থ থাকে এবং তারা তাদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় অজ্ঞাতনামা বিবাদীসহ তারা রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে গ্রান্ড মাইকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে রেজিস্ট্রার এর কার্যালয়ে প্রবেশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে তালাবদ্ধ করে। এতে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়।

আড়াইটার দিকে কেউ গেট খুললে তাদের ক্যাম্পাসে থাকতে দেবে না বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের আচরণে ধারণা করা হচ্ছে, তারা যেকোনো সময় বড় কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে।

বন্ধর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে আপাতত ১০ জন শিক্ষার্থীর নামে সাধারণ ডায়েরি ( জিডি) করা হয়েছে।”

জিডিতে উল্লেখ করা শিক্ষার্থীরা হলেন, রাকিন খান (ইংরেজি বিভাগ), নাজমুল ঢালী (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), মোকাব্বেল শেখ (লোকপ্রশাসন বিভাগ), তরিক হোসেন (আইন বিভাগ), মিজানুর রহমান (ইংরেজি বিভাগ), এনামুল হক (ইংরেজি বিভাগ), এমডি শিহাব (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ), তরিকুল ইসলাম (ইংরেজি বিভাগ), স্বপ্নীল অপূর্ব রকি (কোষ্টাল স্টাডিজ বিভাগ) ও রফিক (রসায়ন বিভাগ)।

জিডির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.

সোনিয়া খান সনি বলেন, “আমিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ