হজযাত্রীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনার হজক্যাম্প। সোমবার ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নারী-পুরুষ হজক্যাম্পে অবস্থান করছেন। সন্ধ্যা ৭টায় হজযাত্রা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। পরে রাত ২টায় সৌদির একটি বিমানে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে ৪১৯ জনের। এছাড়া রাত ৩টায় সরকারি ব্যবস্থপনায় বিমানের প্রথম ফ্লাইট একই সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবে। 

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এদেশের হজযাত্রীরা যাতে যৌক্তিক খরচে হজ পালন করতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা তৎপর আছি। হাজীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে সব প্রক্রিয়া কীভাবে আরও সহজ করা যায়, তা নিয়েও আমরা কাজ করছি। পরে ধর্ম উপদেষ্টা হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
 
ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, সচিব নাসরীন জাহান, বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আবদুল আজিজ ফাহাদ এম আল ইব্রাহিম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবির ভূইয়া, হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে হজ কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

হজ অফিসের কর্মকর্তারা জানান, হজযাত্রা উদ্বোধন শেষে যাত্রীরা বাসে চড়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে যাবেন। জানা যায়, এ বছর ধীর গতিতে ভিসা হচ্ছে হজযাত্রীদের। সৌদির ভিসা সার্ভার সমস্যার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভিসা থেকে বাদ পড়ার কোনো শঙ্কা নেই জানান কর্মকর্তারা।

আজ হজক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, হজ গমনেচ্ছুরা দোয়া-দরুদ পড়ে যার যার মতো ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছেন। কেউ নামাজ পড়ছেন, তাসবিহ তাহলিল করছেন। আবার কেউ পরিবার-পরিজনকে বিদায় জানাচ্ছেন। বিগত বছরগুলোতে হজযাত্রীরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হলেও চলতি বছরে নির্বিঘ্নে হজে যেতে পারছেন বলে জানান প্রথম ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকা কয়েক যাত্রী।
  
কুষ্টিয়া থেকে আসা হজযাত্রী শরীফুল ইসলাম সন্ধ্যায় জানান, রাত ৩টায় বিমানের প্রথম ফ্লাইটে যাত্রা করবেন তিনি। ভিসাসহ সবকিছু প্রস্তুত আছে তার। আশরাফুল ইসলামসহ কয়েক যাত্রী জানান, হজক্যাম্প সড়কে নির্মাণকাজ চলছে। এজন্য হজক্যাম্প এলাকায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। 

হজ ক্যাম্পের পরিচালক লোকমান হোসেন সমকালকে জানান, হজযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বছর সরকারি–বেসরকারি ব্যবস্থপনায় মোট হজযাত্রী ৮৭ হাজার ১০০ জন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হজয ত র হজয ত র র উপদ ষ ট ব যবস থ ফ ল ইট সরক র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ