কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির দুটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংকান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে মোট ব্যয় হবে ৪৫২ কোটি ১ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ৫ম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানি করা হবে। বিএডিসির সৌদি আরব থেকে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুনরায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরব থেকে ৫ম লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৩ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হবে। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৬৮৪ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসির ডিএপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭৯ লাখ মেট্রিক টন, এ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে  ৫.৯৩ লাখ মেট্রিক টন।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ সার আমদানির  প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সভায় কমিটি সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএডিসির রাশিয়া হতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় চুক্তি পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে রাশিয়া হতে ১০ম লটে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। যার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ৯৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৮ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।  প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সার ৩২৩ মার্কিন ডলার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিএডিসি কর্তৃক এমওপি সার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৭৯ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে ২.৭২ লাখ মে.টন। এ পর্যন্ত আমদানি ২.১৮ লাখ মেট্রিক টন।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ম ট র ক টন স র আমদ ন র প রস ত ব উপদ ষ ট আরব থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা