আধিপত্যের দ্বন্দ্বে সংঘর্ষে প্রাণ গেল বিএনপিকর্মীর, আহত ২১
Published: 30th, April 2025 GMT
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঝিনাইদহে প্রাণ গেছে একজনের। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ফুরসুন্দি ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। নিহত মোশাররফ হোসেন মোল্লা (৪৫) দিঘিরপাড়ের সমশের আলী মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক। স্থানীয়রা জানান, বিবদমান দুটি পক্ষই আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল। ৫ আগস্টের পর তারা বিএনপিতে যোগ দেয়।
জানা গেছে, মোশাররফের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার। তারা দু’জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর মোশাররফ স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহাবুর রহমান ও আলিম উদ্দিনের পক্ষে যোগ দেন। কুদ্দুস সমর্থন করেন তাদের প্রতিপক্ষ রেজোয়ান, জাহিদ বিশ্বাস ও মাহাবুর আলী মল্লিকের পক্ষকে।
এলাকাবাসী জানায়, দু’জনই বিএনপিতে যোগ দেওয়ায় জমির বিরোধ দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক রঙ পায়। বুধবার সকালেই তাদের লোকজন দিঘিরপাড় গ্রাম ও পাশের মাগুরা জেলার সানদা-লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টার দিকে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২১ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে মোশাররফসহ জাহাঙ্গীর, নাহিদ, মিজানুর, মোহাম্মদ আলী, আনিচুর, মতিয়ার, জাহানারা ও সুফিয়া বেগমকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক মোশাররফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যরা সেখানে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের আরএমও ডা.
মোশাররফের ভাবি আন্না বেগমের ভাষ্য, ‘দুই পক্ষের মধ্যে তিন-চার দিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। আমাদের লোকজন মাঠে কাজে যেতেও পারে না। সকালে প্রথমে ওদের কয়েকশ লোক আমাদের মাঠে কামলাদের (শ্রমিক) ওপর আক্রমণ করে। তারা পালিয়ে গেলে বাড়িতে এসে মোশাররফ ভাইকে কুপিয়ে মেরে রেখে যায়। তাদের সঙ্গে মাগুরার সানদা গ্রামের অনেক মানুষ ছিল।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএনপি নেতা শাহাবুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমার লোকজন মারামারি করেছে, এটা মিথ্যা কথা। যে ঘটনায় মোশাররফ মারা গেছেন, তা সামাজিক বিরোধ।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বিকেলে বলেন, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কাউকে আটক করা হয়নি। এখন পরিস্থিতি শান্ত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ব এনপ ন হত ম শ ররফ স ঘর ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস