সিকৃবির ক্যাফেটেরিয়া: খাবারের দাম বেশি, মান খারাপ
Published: 30th, April 2025 GMT
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের উচ্চমূল্য এবং মান নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনের খাবারের জন্য অতিরিক্ত টাকা গুণতে হলেও খাবারের স্বাদ, গুণগত মান এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাফেটেরিয়ায় রান্নার জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন খাবারের দাম মাত্রাতিরিক্ত। অথচ ক্যাম্পাসের বাইরের দোকানগুলোত একই দামে ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর থেকে দেওয়া খাবারের মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, ভাতের প্যাকেজ মাছ/মুরগি ও সবজিসহ ৫৫ টাকা, সেখানে সবজি হিসেবে সামান্য আলু ছাড়া কিছুই দেওয়া হয় না। এছাড়াও মাছ মাংসের সাইজ যথেষ্ট ছোট। তালিকায় ডিম মামলেটের দাম ধরা হয়েছে ২০ টাকা, যা ডিমের বাজার মূল্যের দ্বিগুণ।
এছাড়াও গরুর মাংসের কথা উল্লেখ থাকলেও কখনো এগুলো রান্না কিংবা পরিবেশন করতে দেখেননি শিক্ষার্থীরা। এমনকি পরোটা, সিঙ্গারা, সমুচা,জিলাপির দাম আকার অনুযায়ী বেশি।
ক্যাফের পরিবেশ নিয়েও রয়েছে শিক্ষার্থীদের বিস্তর অভিযোগ। শিক্ষার্থীরা জানান, আগে থেকে কয়েকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এখনো কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি। অনেকেই বলছেন, নিয়মিত তদারকি এবং কঠোর ব্যবস্থাপনা ছাড়া এ সমস্যা কাটবে না।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে, নিরাপদ খাবার পানি এবং পানির গ্লাস পরিষ্কার রাখা, সর্বোচ্চ পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, খাবারের মাঝে অপ্রত্যাশিত কোনো কিছু যেন না থাকে, খাবারের গুণগত মান বাড়ানো, খাদ্য তালিকায় উল্লেখিত খাবারের পর্যাপ্ততা, গরুর মাংস, রোস্ট, অন্যান্য সবজি, বিভিন্ন ভর্তার ব্যবস্থা করা, ওয়াশরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা এবং ক্যান্টিনের বেসিনে হ্যান্ডওয়াশের ব্যাবস্থা করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেটেরিনারি অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, “একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া হিসেবে আমাদেরটা মানসম্মত নয়। আমাদের ক্যাফেতে বসার পরিবেশ মোটামুটি ঠিক থাকলেও খাবার মান খুবই নিম্নমানের । বিশেষ করে বেকারি থেকে যে খাবারগুলো আনা হয়, সেগুলো ভালোভাবে দেখে আনা হয় না। খাবারে অনেক সময় পিপঁড়া পাওয়া যায়। এছাড়া আমাদের ক্যাফেতে কোনো বহুমাত্রিকতা নাই । সকাল ও বিকেলে খাবারের মেনুতে নুডুলস, চটপটিসহ বহুমাত্রিক চার্ট যুক্ত করা প্রয়োজন।”
শিক্ষার্থী মো.
অভিযোগের বিষয়ে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক নুরে আলম শাহিন বলেন, “খাবারের মূল্য ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আগে মুরগিসহ ভাতের প্যাকেজ ৬০ টাকা ছিল, সেটা কমিয়ে ৫৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খাবারের তালিকায় মুরগির রোস্ট যুক্ত করা হয়েছে। এ দামে ভালো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
খাবারের মান ও ক্যান্টিনের পরিছন্নতা নিয়ে তিনি বলেন, “আমি নিজেই প্রতিদিন রাতে ক্যাফেটেরিয়া পরিষ্কার করি। আমরা হলের ডাইনিং থেকেও ভালো চাল ব্যাবহার করি। সবজি হিসেবে আলু ভাজা, বেগুন ভাজা দিচ্ছি। অন্যান্য সবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকলে সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করব।”
সিকৃবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার বলেন, “গত সপ্তাহে ক্যাফেটেরিয়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আমরা মিটিং করে খাবারের মূল্যের একটি তালিকা দিয়েছি, যা পূর্বে ছিল না। এখানে যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট না। শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও বাজারের মূল্যের ওপর নির্ভর করে এই তালিকা আমরা পরিবর্তন করব।”
ক্যাফেটেরিয়ার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি, যেন খাবার পরিবেশনের জায়গাসহ সম্পূর্ণ ক্যাফে পরিষ্কার রাখা হয়। এতে কোনো ব্যত্যয় হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/আইনুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ষ ক র র পর ব শ ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’