মে দিবসে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
Published: 2nd, May 2025 GMT
মে দিবসে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকালের বিক্ষোভে হাজারো মানুষ অংশ নেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনে অভিবাসী ও ফেডারেল কর্মীদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। খবর সিএনএন, এএফপির
লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক সিটি, ডেনভার, শিকাগো, ওয়াশিংটনসহ দেশের সব বড় বড় শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। ছোট শহরগুলোর রাস্তাতেও বিক্ষোভকারীরা সমবেত হন। মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা অভিবাসী, শ্রমিক ও বিদেশি ছাত্রদের কথা বলার স্বাধীনতার অধিকারের দাবি জানান।
বিক্ষোভ ‘৫০৫০১’ আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজন করা হয়। বামঘেঁষা কিছু গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত এই সংগঠনের নামের ব্যাখ্যা হলো ৫০ অঙ্গরাজ্যে ৫০টি বিক্ষোভ এবং একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। এরা আগেও বেশ কয়েকবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল।
এই সংগঠন ‘সংবিধান সমুন্নত রাখার এবং নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করার লড়াইকে সমর্থন করে। সংগঠনটি জানায়, মে দিবসের এই বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজারের বেশি জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার কোটিপতি মুনাফাখোররা শ্রমিকদের মজুরি, সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা নিচে নামানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আন্দোলনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে- ‘এই মে দিবসে আমরা লড়াই করছি। আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে আমাদের পরিবারগুলোকে তাদের ভাগ্যের উপরে প্রাধান্য দেওয়া হবে-বেসরকারি লাভের উপরে পাবলিক স্কুল, হেজ ফান্ডের উপরে স্বাস্থ্যসেবা, মুক্ত বাজার রাজনীতির উপরে সমৃদ্ধি।’
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ৫৪ বছর বয়সী শেন রিডল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, অতি ধনীরা দেশকে দখল করে নিচ্ছে এবং শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে দমন করছে।’
ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি শিক্ষা ইউনিয়নে কর্মরত রিডল আরও বলেন, ‘আমাদের নাগরিকেরা যদি এই প্রেসিডেন্ট ও তার ধনকুবের মিত্রদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারে পরিণত হতে পারে।’
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বার্নার্ড স্যাম্পসন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে বলেন, এই অভিবাসীরাই ‘তোমার রেস্তোরাঁয় কাজ করে, তোমার ঘরবাড়ি নির্মাণ করে’।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, ফ্রান্স থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আয়োজিত মে দিবসের র্যালিতে ট্রাম্পবিরোধী বার্তা দেখা গেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ সম ব শ র উপর
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ১০০০ মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
ভারত ও পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরে এক হাজারের বেশি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হামলার আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ হামলায় পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ভারত অভিযোগ করে আসছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির সেনাবাহিনীকে ওই হামলার জবাব দিতে ‘সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন, যাতে তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।
পাকিস্তান অবশ্য পেহেলগামের হামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনা সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হামলার ব্যাপারে তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ রয়েছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘যেকোনো আগ্রাসনের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।’
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গতকাল বুধবার সকালে এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেন, ‘আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই হামলা হতে পারে।’
আতঙ্কে মানুষ, বাংকার তৈরির প্রস্তুতি
সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কায় পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক হাজারের বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের প্রধান হাফিজ নজির আহমদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা কাশ্মীরের সব মাদ্রাসা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছি।’
দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সীমান্তে উত্তেজনা ও সম্ভাব্য সংঘর্ষের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানকার অনেক মানুষ মাটির নিচে বাংকার তৈরি করছেন। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা সেগুলো সিমেন্ট দিয়েও মজবুত করছেন।
এলওসির কাছে চাকোঠি এলাকায় বসবাসরত ৪৪ বছর বয়সী দোকানি ইফতেখার আহমদ মির বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমরা সব সময় আতঙ্কে আছি, বিশেষ করে আমাদের বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
ইফতেখার বলেন, ‘ওরা স্কুল বা মাদ্রাসা শেষে আর বাইরে যাতে ঘোরাফেরা না করে সরাসরি বাড়ি ফিরে আসে, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করি।’
পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর মুজাফফরাবাদে জরুরি সেবাকর্মীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশুদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে হামলা হলে কী করতে হবে, প্রশিক্ষণে সেগুলো শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
১১ বছর বয়সী আলি রেজা বলে, ‘আমরা শিখেছি কীভাবে আহত কাউকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হয়, কীভাবে স্ট্রেচারে বহন করতে হয় আর আগুন নেভাতে হয়।’