ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর গ্রামের গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২ মে দুপুরের দিকে ঈশান গোপালপুর গ্রামের স্থানীয় ঈশান সরকারের জমিদার বাড়িতে ওই বাড়ির সদস্য, গ্রামবাসী ও আশ্রয় নেওয়া ২৮ ব্যক্তিকে একত্রিত করে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
 
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন আশুতোষ সরকার, যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, গৌরগোপাল ঘোষ, বাবলু ঘোষ প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফরিদপুর শহরের সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য ওই সরকার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাকিস্তানী বাহিনীর এ গণহত্যায় মদদ দিয়েছিল ওই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকার স্বাধীনতা বিরোধীরা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২১ এপ্রিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ফরিদপুরে প্রবেশ করে। ফরিদপুরে প্রবেশের পথে শহরের গোয়ালচামট মহল্লার শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে কীর্তনরত নয় সাধুকে হত্যা করে। ২ মে ঈশান গোপালপুর গ্রামের জমিদার বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ছিল বৃহত্তর ফরিদপুরের প্রথম পরিকল্পিত গণহত্যা। হত্যাকাণ্ডের পর পাকসেনারা চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী সরকার বাড়ির পুকুর পাড়ে ২৮ জনের মৃতদেহ গণসমাধি দেয়।
 
শহীদ পরিবারের সন্তান বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা চিত্ত ঘোষ বলেন, ২০১০ সালের ২ মে শহীদ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে সেখানে ২৮ শহীদের নাম ফলকসহ একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করার হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে সরকারের উদ্যোগে গণহত্যার শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

এ গণহত্যার স্মরণে আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় সমাধি ফলকের কাছে স্থাপিত মন্দিরে গীতাপাঠ ও নারায়ণ পূজার আয়োজন করা হয়। গীতা পাঠ ও পূজা করেন দীপক ঠাকুর। পরে সম্বলিত সৌধে ফুল অর্পণ করে এবং মোমবাতি প্রজ্বলন করে শহীদদের আত্মার সগতি কামনা করা হয়। বেলা ১১টার দিকে উপস্থিত ব্যক্তিদের মাঝে পূজার প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্য ক্ষিতিশ বিশ্বাস, অভী ঘোষসহ স্থানীয় গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণহত য পর ব র র র সদস য গণহত য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না : নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করে নাই, ভবিষ্যতেও কোনো দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করবে না। অনতিবিলম্বে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এখনও রাজপথে শহীদদের রক্ত শুকায়নি, শহীদ ও আহত পরিবারের কান্না থামেনি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। 

শামীম ওসমানদের আমলে নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল। সেই শামীম ওসমানরা ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার পরিবর্তনের পর পালিয়ে যায়। কিন্তু আবার নব্য শামীম ওসমানরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না।

শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বিসিকে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুব অধিকার পরিষদের উদ্যোগে এ সমাবেশ হয়।

নুরুল হক নুর বলেন, যে গণঅভ্যুত্থানে দুই সহস্রাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে, ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে, ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটিয়েছে সেই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ প্রশ্নে ও গণহত্যার বিচারের প্রশ্নে বিগত ৮ মাসে আমরা কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করিনি। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, এ বিষয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৬ বছরে লড়াই সংগ্রাম করলেও জনগণ সেভাবে সে লড়াইয়ে শামিল হয়নি। কারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডের প্রতি অবিশ্বাস। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি মানুষের সন্দেহ সংশয় রয়েছে।

তাই গণঅধিকার পরিষদ প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে রাজনীতিতে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষকে রাজনীতিতে ফেরার আহ্বান করেছে। অল্পসময়ের মধ্যে গণঅধিকারের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পরেও আমাদের রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের মাঝে পুরোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশের কোথাও চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব বিস্তার বন্ধ হয়নি।

এগুলো চললে কেন এতগুলো মানুষ জীবন দিলো, সেই জবাব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দিতে হবে। কোনো কোনো দল যদি ভাবেন আমরা একাই একশ, আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করবো, আমরাই সব হর্তাকর্তা, তাদের বলবো আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নিন।

এসময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোহরাওয়ার্দীতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ শুরু 
  • গণহত্যার বিচারে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে
  • নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না : নুর
  • আ. লীগ নিষিদ্ধের জন্য পাড়ায়-মহল্লায় জনতার আদালত তৈরি করব: নাহিদ ইসলাম
  • আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে: নাহিদ
  • নারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের
  • গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ
  • ‘ফুল স্টপ মারেন’—মানবিক করিডর প্রসঙ্গে সরকারকে নুরুল হক