বন্দরে বাড়ি সিমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় ৫ মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবধূ আমেনা বেগম (২৫) মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে। স্থানীয়রা আহত গৃহবধূকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে। 

এ ঘটনায় আহত গৃহবধূ মা ফেরদৌসি বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ওই দিন দুপুরে হামলাকারি লেডি সন্ত্রাসী হাফেজা বেগম, আরমান, জুম্মান, রোজিনা, হালিমা, ইয়াসমিন ও নাজিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত  আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর আগে শুক্রবার (২ মে) সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলার ঘারমোড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

অভিযোগে বাদি উল্লেখ করেন, একই এলাকার নাজিম উদ্দিন মিয়ার স্ত্রী হাফেজা বেগমের দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ি সিমানা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এর ধারাবাহিকতা শুক্রবার (২ মে)  সকাল ১১টায় বন্দর উপজেলার ঘারমোড়া সাকিনস্থ আমাদের বসত বাড়ীতে অবস্থানকালে আমার স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদীদের সহিত বিরোধ থাকায় স্থানীয় গন্যমান্য ও জনপ্রতিনিধিগন বিরোধীয় সম্পত্তির বিষয়ে সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের সীমানা নির্ধারন করে দেন। 

আমরা আমাদের সীমানা পিলার স্থাপনের সময় সবার উপস্থিতেতে বিবাদীগন পূর্ব পরিকল্পনা বেআইনী জনতাবদ্ধে অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া নাজিম উদ্দিন মিয়ার হুকুমে অন্যান্য বিবাদীগন অভিযোগের বাদিনীসহ তার পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। 

অভিযোগের বাদিনী বিবাদীদের গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে বিবাদীগন ক্ষিপ্ত হইয়া বাদিনী ফেরদৌসি বেগম এবং তার ৫ মাসের গর্ভবতী মেয়ে আমেনা (২৫)কে উল্লেখিত বিবাদীগন এলোপাথারী কিল ঘুষি ও লাথি মারিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে নিলাফুলা জখম করে। 

বিবাদী হাফেজা বেগম বাদিনী মেয়ে আমেনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাত দিয়া গলা চেপে ধরে  মেরে ফেলার চেষ্টা করলে আমার মেয়ে অনেক কষ্টে জীবনের রক্ষা পায়। 

বাদিনী মেয়ে মাটিতে পড়িয়া গেলে বিবাদী আরমান  ও জুম্মান  তার মেয়ের পরনের জামা কাপড় ছিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানী করে। আমাদের ডাক চিৎকারে আমার আত্মীয়-স্বজনরা আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিয়া তাদের নিকট হইতে তিনটি এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল এবং বিবাদীগন আমার মেয়ে আমেনার এর গলায় পরিহিত সোনার চেইন ওজন আট আনা জোড়পূর্বক নিয়ে নেয়। 

পরবর্তীতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মুখে বিবাদীগন আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করিয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ হবধ আম দ র গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ