পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য পাকিস্তান ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে—ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার এমন বক্তব্য জানিয়েছে দেশটি।  

পাকিস্তান ওয়াঘা সীমান্ত খুলে দিতে ‘অস্বীকৃতি’ জানানোয় কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিক আটারি ও ওয়াঘা সীমান্তের মধ্যবর্তী এলাকায় আটকা পড়েছেন উল্লেখ করে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, অনেক দুর্বল স্বাস্থ্যের রোগীকে পাকিস্তানে ফিরে আসতে হয়েছে। এ ছাড়া পরিবারগুলোকে আলাদা হয়ে যেতে হয়েছে। এক শিশু তার অভিভাবক থেকে আলাদা হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চালু ছিল এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পারাপারের অনুমতি দিলে পাকিস্তান তার নাগরিকদের গ্রহণ করতে রাজি আছে।

পাকিস্তান আরও জানিয়েছে, পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভবিষ্যতেও ওয়াঘা সীমান্ত খোলা থাকবে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল এক ভয়াবহ হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এ হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের প্রায় সবাই পর্যটক।

ভারত এ হামলার পেছনে আন্তসীমান্ত সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দিলেও কোনো প্রমাণ হাজির করেনি। পাকিস্তান জোরালোভাবে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং একটি স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

এ ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে এবং ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়।  

এর আগে পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অঙ্গীকার করেন, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে চিকিৎসা না নিয়েই ভারত থেকে ফেরত আসতে বাধ্য হওয়া হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত দুই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।  

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য মহাপরিচালককে এই শিশুর পরিবারের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ব্যয়ে পাকিস্তানে তাদের চিকিৎসা শুরু করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় শুরু করেছে। দুজনকে আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজিতে (এএফআইসি) পাঠানো হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কর্মীদের মতের মূল্য নাই, জিএম কা‌দের দল চালান স্ত্রীর কথায় 

নেতাকর্মীই জাতীয় পা‌র্টির প্রাণ উল্লেখ ক‌রে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, “জিএম কা‌দের সারাক্ষণ গণতন্ত্রের কথা বলেন, কিন্তু তি‌নি নিজে দল পরিচালনা করেন স্বৈরাচা‌রী কায়দায়। দ‌লে নেতাকর্মী‌দের কো‌নো মূল‌্য নেই। কখনও কখনও লোক‌ দেখা‌নোর জন‌্য নেতাকর্মী‌দের ডে‌কে মতামত নি‌লেও সেটা আর বাস্তবায়ন ক‌রেন না  বরং তি‌নি দল প‌রিচালনা ক‌রেন একমাত্র স্ত্রীর কথায়।”

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় পার্টির যৌথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব‌্য ক‌রেন।

আনিস ব‌লেন, “একটা আন্দোলন করা অনেকটা সহজ, কিন্তু একটা সফল আন্দোলনের পর গঠনমূলক পলিসি নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন। কয়েকজন লোক মিলে একটি বাড়ি দ্রুত ভাঙতে পারবে। কিন্তু একটি বাড়ি নির্মাণ করতে দক্ষ প্রকৌশলী দরকার। তাই দল, দেশ ও জা‌তির জন‌্য স‌ঠিক নেতৃত্ব বে‌ছে নি‌তে হ‌বে।”

আরো পড়ুন:

জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

‘নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না বলে জিএম কা‌দেরবিহীন জাপা গঠনের চেষ্টা চলছে’

সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, দ‌লের কো-চেয়ারম‌্যান অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, সাবেক এমপি  সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, নাসরিন জাহান রত্না, লিয়াকত হোসেন খোকা, এটিইউ তাজ রহমান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাজমা আকতার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফুর রহমান খান, মাসরুর মাওলা,  সরদার শাহজাহান,  জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, এস এম আল জুবায়ের, শরফুদ্দিন আহমেদ শিপু।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “দেশে প্রতিদিন খুন, ধর্ষণ চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে। এর মধ্যে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। দেশের সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নাই। সাধারণ মানুষকে আশা-ভরসা দেওয়ার মতো রাজনৈতিক দল একমাত্র জাতীয় পার্টি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর ঐক্য করে জাতীয় পার্টিকে পরিচালিত করব।”

কোনো একক নেতৃত্বে নয়, তৃণমূলের মতামতে যৌথ নেতৃ‌ত্বে জাতীয় পা‌র্টি প‌রিচা‌লিত হ‌বে ব‌লেও ঘোষণা দেন তি‌নি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “জি এম কাদের স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় আমাদের সিনিয়র নেতাদের বহিষ্কার করেছিল। কিন্তু আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।আর স্বৈরতান্ত্রিক সিস্টেমের পরাজয় হয়েছে।এখন থেকে জাতীয় পার্টিতে কোনো কর্তৃতবাদ স্বৈরতন্ত্রের স্থান নেই।”

উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ নূরুল ইসলাম মিলন, উপদেষ্টা নাজনিন সলতানা, আমানত হোসেন আমানত, আনোয়ার হোসেন তোতা, মাসুক রহমান, শাহনাজ পারভীন, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, জিয়া উর রহমান বিপুল, মিজানুর রহমান দুলাল, অ্যাডভোকেট বায়জিদ প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ