ফি‌লি‌স্তিনসহ নির্যা‌তিত বিশ্ব মুস‌লি‌মের হেফাজত কামনা ক‌রে লাখো মুসল্লির অশ্রু নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনিতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের বিভাগীয় ইজতেমা।

চট্টগ্রা‌মের কর্ণফুলী থানা এলাকায় তিন‌ দি‌নের শেষ দি‌নে শুক্রবার (২ মে) জুমার নামাজে মুস‌ল্লির ঢল না‌মে। জুমার নামাজে ইমামতি করেন খলিফায়ে আমিরে আহলে সুন্নাত আল্লামা ওবায়েদে রেজা মাদানী কাদেরী আত্তারি। নামাজ শে‌ষে অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত।

এ সময় মুসল্লিরা রবের প্রার্থনায় দুই হাত তুলে কান্নায় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় ‘আমিন আমিন ধ্বনি’তে ইজতেমা ময়দানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ইসলামের জীবন বিধান মেনে সারা বিশ্বে নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে মহান রবের সাহায্য কামনা করা হয়। দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি, বিশেষ করে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত কামনা করে আখেরি মুনাজাত করেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর সভাপতি ও রুকনে শুরা আব্দুল মুবিন আত্তারি।

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু 

ইজতেমায় ড্রোন উড়াতে লাগবে অনুমতি

এর আগে বিশেষ বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারি।

শেষ দিন শুক্রবার সকাল থেকে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগরা কোরান-হাদিসের আলোকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বয়ান করেন। তার মধ্যে ইসলামী শরীয়তের বিধি বিধান, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির শাস্তি, আজান-ইকামত ও নামাজ পড়ার নিয়ম-পদ্ধতি, মা-বাবার প্রতি সন্তানের হক, জুলুম-অত্যাচারের পরিণতি, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির ভয়াবহ পরিণতি, ব্যভিচার থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন হাদিসের আলোকে জীবন গড়া, মৃত্যু, কবর ও হাশরের প্রস্তুতি  ইত্যাদি। এসব বয়ানের ফাঁকে ফাঁকে চলে হামদ ও নাতের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা এবং দোয়া মোনাজাত।

শেষ দিনের ইজতেমায় ধারাবাহিকভাবে এসব বিষয় তুলে ধরে বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামীর মোবাল্লিগ মাওলানা মুহাম্মাদ সালাহ উদ্দিন আত্তারি, মাওলানা কাওসার আত্তারি প্রমুখ।

আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে প্রিয় নবী সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিঃশর্ত অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিরা বলেন, আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনাদর্শ অনুসরণেই মানবতার মুক্তির সনদ নিহিত।  ইসলামের জীবন বিধান মেনে চলা গেলে এবং প্রিয় রাসুলের সুন্নাতের রঙে রাঙায়িত হয়ে মোত্তাকি হতে পারলেই আপনার দুনিয়া-আখেরাতের মুক্তি মিলবে। আর প্রিয় হাবিবের প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসাই ঈমানের পূর্বশর্ত। আল্লাহ পাক ও তার প্রিয় রাসূলের সৃষ্টির জন্যই হতে হবে আমাদের নিয়্যত, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সবকিছুই।

৩০ এপ্রিল বুধবার ফজরের নামাজের পর শুরু হয় তিন দিনের সুন্নাতে ভরা এই ইজতেমা। ইজতেমায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলারসহ সারা দেশ থেকে লাখো আশেকানে রাসূল এর যোগদানের মধ্য দিয়ে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ইজতেমায় বিষয়ভিত্তিক বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগরা। 

দাওয়াতে ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশাপাশি ইজতেমায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা দিনরাত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে। ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের পরপরই নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩দিন, ১২দিন,৩০দিন ও ৬৩দিনের জন্য সংগঠনটির ১১২টি টিম মাদানি কাফেলা সফর শুরু করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব ইজত ম ইসল ম র ম ব ল ল ইজত ম য় ন কর ন কর ন দ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজপরিবারের সঙ্গে সমঝোতা চান প্রিন্স হ্যারি

রাজপরিবারের সঙ্গে সমঝোতার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন প্রিন্স হ্যারি। যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনি লড়াইয়ে হারের পর বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ডিউক অব সাসেক্স হেনরি চার্লস আলবার্ট ডেভিড এই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। আবেগঘন ওই সাক্ষাৎকারে বাবা রাজা চার্লসের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি।

হ্যারি বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত এইসব কারণে বাবা (চার্লস) তার সঙ্গে কথা বলবেন না। কিন্তু তিনি আর লড়তে চান না। তাছাড়া, বাবা কতদিন বাঁচবেন তাও তিনি জানেন না।

১৫ মাস আগে যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। কিছুদিন আগে চার্লস ব্যক্তিগত এক বার্তায় তার ক্যান্সারের অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এরপরই বাবাকে নিয়ে ওই কথা বললেন প্রিন্স হ্যারি।

যুক্তরাজ্যে সফরকালে হ্যারি ও তার পরিবারের পুলিশি নিরাপত্তার মাত্রা নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায়ে হেরে যান প্রিন্স হ্যারি। শুক্রবার মামলার রায় ঘোষণা করে লন্ডনের আপিল আদালত।

২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান প্রিন্স হ্যারি। এরপর যুক্তরাজ্য সরকার হ্যারিকে আর আগের মতো সরকার-প্রদত্ত নিরাপত্তা না দেওয়া এবং প্রতিটি সফরের ক্ষেত্রে তা আলাদাভাবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রথম মামলায় হারের পর হ্যারি আপিল করেন। তার আইনজীবীদের অভিযোগ ছিল, হ্যারিকে ‘অযৌক্তিক ও কম মানের’ নিরাপত্তা দিয়ে অন্যদের তুলনায় আলাদাভাবে দেখা হয়েছে। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে।

সরকারের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, হ্যারির নিরাপত্তা কমানোর কারণ হচ্ছে, তার রাজকীয় অবস্থানের পরিবর্তন। তিনি এখন বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে বাস করেন।

মামলায় পুনরায় পরাজয়ের পর হ্যারি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে চাই। আইনি লড়াই করার আর কোনও মানে হয় না। জীবন মূল্যবান।

তিনি আরও বলেন, আমার পরিবারের কিছু সদস্য ও আমার মধ্যে অনেক মতবিরোধ, মতভেদ আছে। কিন্তু এখন সেগুলো ক্ষমা করে দিয়েছি।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্ত্রী মেগান এবং সন্তানকে রাজপরিবারে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব না, সেকথাও বলেছেন হ্যারি। নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলায় আদালত যে রায় দিয়েছে তার ফলে পরিবারসহ নিরাপদে যুক্তরাজ্যে ফেরা ‘অসম্ভব’ হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ