মুন্সীগঞ্জে শ্রমিক লীগ কর্মীকে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা
Published: 2nd, May 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দিতে সানা মাঝি (৪২) নামে শ্রমিক লীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত ৩টার দিকে গ্রামের তালগাছতলা সংলগ্ন রাস্তার পাশ থেকে পুলিশ সানা মাঝির লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের বুকে একটি পাইপগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ রাখা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সানা মাঝি মাকহাটি গ্রামের প্রয়াত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে গ্রাম ছেড়ে একই উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ডেকরাপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলে গিয়েছিলেন সানা। তিনি মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।
এদিকে হত্যার কথা স্বীকার করে শুক্রবার বিএনপিকর্মী শিপন মাঝির ভাই মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী বাবু মাঝি ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে বাবু মাঝিকে বলতে শোনা যায়, ‘ঠিক আছে শিপন মাঝির মার্ডার। শিপন মাঝিরে মারছিল সানা। আজ অয় ডাকাতি করতে আইছিল। আমরা গ্রামবাসীরা ধইরা মারছি।’
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মাকহাটি গ্রামের মসজিদের মাইকে ডাকাতির কথা ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সানা মাঝিকে আটকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। উদ্ধারের সময় সানা মাঝির বুকের ওপর পাইপগান ও কার্তুজ পাওয়া গেছে।
নিহতের ভাই আসাদ মাঝি জানান, তার ভাই একজন শ্রমিক। বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে কাজ দেওয়ার কথা বলে তার ভাইকে ডেকে নিয়ে আসে স্বাধীন নামে এক ব্যক্তি। পরে রাতে লোকমুখে জানতে পারেন, তার ভাইকে মাকহাটি গ্রামে আটকে রেখে বাবু মাঝি ও তার সহযোগীরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলে রেখেছে।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাকহাটি গ্রামের মোহাম্মদ মাঝি ও শামসুল মাঝির পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে ১৯৯৭ সালে খুন হন মোহাম্মদ মাঝি। ওই খুনের জেরে ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খুন হন শামসুল মাঝির ছেলে বিএনপিকর্মী শিপন মাঝি। এ হত্যা মামলায় ২০০৪ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ প্রয়াত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে সানা মাঝির বড় ভাই খলিল মাঝিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
হত্যার কথা স্বীকারের ব্যাপারে জানতে বাবু মাঝির ফোনে একাধিকবার কল করে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদ রানা বলেন, বাবু মাঝি যুবদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না। সে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী কিনা, জানি না।
সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে যুবদল নেতা বাবু মাঝি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। তবে জড়িতরা গা-ঢাকা দিয়েছে। শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। হত্যার ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য ম হ ম মদ ম ঝ য বদল র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: বিশ্ববাজারে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছেই। মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আজ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ২৩ ডলার বা ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ৪৬ ডলার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ০৮ ডলার বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ-দাম বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৮৫ ডলার। এর আগে ট্রেডিং সেশনের শুরুতে উভয় চুক্তিই ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ট্রেডিংয়ে ফিরে আসার আগে কিছুটা পতনও হয়েছে।
তেল সরবরাহে দৃশ্যমান কোনো বাধা না থাকলেও শনিবার ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে ইরান আংশিকভাবে গ্যাস উৎপাদন স্থগিত করেছে। ইরানের শাহরান তেল ডিপোতেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় ইসরায়েলের বিমান হামলার পর শুক্রবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম একলাফে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বাস্তবতা হলো, ২০২২ সালের মার্চ মাসের পর গত শুক্রবার এক দিনে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, অর্থাৎ এর মধ্যে তেলের দাম এক দিনে আর কখনোই এতটা বাড়েনি। এ ছাড়া গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
ইসরায়েল-ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চলছেই কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা। গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালিপথ দিয়ে পরিবাহিত হয়। প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে বিশ্বজুড়ে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে। ফলে আমদানি-রপ্তানির সময় বেড়ে যাবে, বেড়ে যাবে খরচ। ফলে বাংলাদেশের মতো রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য তা বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ক্রেতাদের কাছে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা না গেলে চুক্তি বাতিলের ঝুঁকিও আছে।