ছোট্ট একটা বৃষ্টিফোঁটা! এইটুকুন। গাল দুটো কী যে নরোম, তুলতুলে!
ভারি মিষ্টি!
আকাশবুড়ো ওর নাম রেখেছে টুপুস।
টুপ করে নিচে নামতে চায় তো, তাই!
কিন্তু!
‘কী হয়েছে জানো?’
‘কী আবার!’
গাল ফুলিয়ে আছে সে।
‘কেন কেন?’
‘বলছি বাপু বলছি।’
টুপুসের মনটা বেজায় খারাপ। একটুও ভালো নেই। বেশকিছু দিন ধরে।
ঘটনা হচ্ছে, টুপুসটা আকাশবুড়োর কাছ থেকে নিচে নামতে চায়। সবুজ নরম নরম তুলতুলে ঘাসের চারাগুলোতে। খেলতে চায় ইচ্ছেমতো।
কিন্তু! এই আকাশবুড়োটা একটুও কাশি দিচ্ছে না। আকাশবুড়ো যতোক্ষণ না কেশে দিচ্ছে ততোক্ষণ ওকে ওপরেই থাকতে হবে!
ওকে তো নিচে নামতেই হবে। এ-ঘাস থেকে ও-ঘাসে ইচ্ছেমতো ঘুরঘুর করতে হবে যে! আকাশবুড়োটা কেন যে কেশে দিচ্ছে না।
একদিন টুপুস আকাশবুড়োকে ডেকে বললো, ‘ও আকাশবুড়ো, আকাশবুড়ো, কতদিন হয়ে গেলো একটুকুও কাশি দিচ্ছো না। ঠান্ডা লাগেনি বুঝি! একটু কেশে দাও না আকাশবুড়ো।’
আকাশবুড়ো চুকচুক করে হেসে বললো, ‘ওরে বোকা, ঠান্ডা তো লাগুক। তখন না হয় কাশবো ঝেড়ে।’
‘তা কখন ঠান্ডা লাগবে গো আকাশবুড়ো? আমি যে নিচে নামতে চাই। সবুজ তুলতুলে ঘাসগুলোতে নাচানাচি করতে চাই।
আচ্ছা, আকাশবুড়ো, একটা কথা বলি?’
‘বল দেখি বাপু। শুনি তোর কথাখানি!’
‘আচ্ছা, মানুষেরা যে এত্তো এত্তো রকেট তোমার গা ফুটো করে মহাকাশে পাঠাচ্ছে তাতে তোমার একটুকুও ব্যথা করে না বুঝি?’
‘বোকাটার কথা শোনো! আমি কী ওদের মতো রক্তমাংসে গড়া নাকি রে?’
‘তা-ও তো ঠিক। তার মানে তোমার ব্যথাও করে না! ঠান্ডাও লাগে না! ইশ, আমার আর নিচে যাওয়া বুঝি হবে না!’
বেশ কিছুদিন পর।
জোরেশোরেই ঠান্ডা বাঁধিয়ে বসলো আকাশবুড়োটা। কাশতে শুরু করে দিলো।
খুক খুক কাশি!
দুড়ুম দুড়ুম কাশি।
সে কী কাশি রে বাবা!
দুড়ুম দুড়ুম,
দুড়ড়ড়ড়ড়ড়ুম.
আকাশবুড়ো টুপুসকে ডেকে বললো, ‘কই রে টুপুস?
আজকে যে তোর নামার সময় হয়েছে। তুই এবার নিচে নামতে পারবি। নামার জন্য প্রস্তুত তো?’
টুপুস হুররে হুররে করে বলে উঠলো, ‘আমি প্রস্তুত গো প্রস্তুত।’
আকাশবুড়ো কাশছে। দুড়ুম দুড়ড়ড়ড়ুম!
বৃষ্টিফোঁটারা ঝুমঝুম ঝুমঝুম টুপটুপ টুপটুপ করে ঝরছে।
টুপুসটাও ততোক্ষণে নিচে নেমে গেছে। আকাশবুড়োর কাছ থেকে টুপ করে ঘাসমাসির মাথায়।
ঘাসমাসি চেঁচিয়ে বলে উঠলো, ‘উঁহু বাবা গো! কে পড়লি রে?’
‘আমি গো মাসি আমি, বৃষ্টিছানা, টুপুস।’
‘ওকি! টুপুস বাছা। তা এতোদিন পর এলি বাপু। কেমন আছিস রে?’
‘ভালো আছি গো ঘাসমাসি। তোমাদের কাছে এসে আরও বেশি ভাল্লাগছে। যাই গো মাসি একটু ঘুরে আসি।’
এই বলে টুপুস অন্য বৃষ্টিছানাদের সাথে গড়াতে থাকলো। একবার এ-ঘাসের মাথা তো আরেকবার ও-ঘাসের মাথা বেয়ে। সে কী আনন্দ হচ্ছে!
গড়াতে গড়াতে একসময় খালের মধ্যে পড়ে গেলো। ও-কী! এতো বি-ররাট খাল। টুপুসের যে খালে থাকতে মোটেও ইচ্ছে করছে না। ওপরে উঠতে চেষ্টা করলো। পারলো না। আকাশবুড়োকে খুব করে ডাকলো। আকাশবুড়োটাও শুনতে পেলো না। ভীষণ ভয় করছে ওর।
এমন করেই খালে দু’দিন কেটে গেলো টুপুসের।
দু’দিন পর রোদ উঠলো। ঝলমল করে। প্রচণ্ড রোদ। খালবিল শুকিয়ে যাচ্ছে। অন্য বৃষ্টিফোঁটারা আবার ওই যে আকাশবুড়োর কাছে ফিরে যাচ্ছে। জলীয় বাষ্প হয়ে।
টুপুস চেয়ে চেয়ে দেখছে। ও যে কখন জলীয় বাষ্প হবে! ওর-ও তো আর খালে থাকতে একটুও ভালো লাগছে না। আকাশবুড়োর কাছে ফিরে যেতে প্রচণ্ড ইচ্ছে করছে।
ওমা! ঘটে গেলো ম্যাজিক। টুপুসও যে জলীয় বাষ্প হয়ে গেলো।
আর কী?
ওপরের দিকে উঠতে থাকলো।
টুপুসের খুশি আর দেখে কে। সে কী খুশি রে বাবা!
ঝলমল চকচক করতে করতে ওপরে উঠতে থাকলো।
এই যে
এই যে
কোথায় যাচ্ছে টুপুসটা?
তোমরা কিন্তু জানিয়ে
দিও তা; কেমন? n
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যাওয়া যুবকের মরদেহ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জ শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে ধলেশ্বরী নদীতে পড়ে যাওয়া যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে সদর উপজেলার মোল্লাচর এলাকার ধলেশ্বরী নদী থেকে থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়। গত রবিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে পন্টুন থেকে তিনি নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন।
মারা যাওয়া যুবকের নাম লোকমান হোসেন (৩৭)। তিনি ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার দেওয়ানপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
আরো পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পড়ে যুবক নিখোঁজ
মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “নিখোঁজের সন্ধানে ডুবুরি দল কাজ করেছে। অন্ধকার ও নদীতে ঘূর্নী স্রোতের কারণে রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ছিল। আজ সকালে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লারচর সংলগ্ন ধলেশ্বর নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।”
তিনি জানান, ভোলার তজুমদ্দিন থেকে ঢাকা সদরঘাটের দিকে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী লঞ্চ ফারহান-৩। রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে যাত্রা বিরতিতে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট নোঙর করে লঞ্চটি। সোহেল নামে এক যাত্রীকে এগিয়ে দিতে লঞ্চ থেকে ঘাটে নামেন লোকমানসহ কয়েকজন। পরে লঞ্চে উঠার সময় লোকমান পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। আজ বিকেলে যুবকের মরদেহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/রিটন/মাসুদ