সুরা আদিয়াত বলছে মানুষের স্বভাবের কথা
Published: 3rd, May 2025 GMT
সুরা আদিয়াত অর্থ ‘ধাবমান অশ্ব’। পবিত্র কোরআনের শততম সুরা। মানুষ আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ আর ধন সম্পদের লোভে মত্ত হয়ে আছে। এতে পরকালীন জীবনের প্রথম স্তর কবর এবং হাশরের বিবরণ দান করে মানুষকে সৎকাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
সুরা আদিয়াতের অর্থ আবার দেখে নিই:
পরম করুণাময় পরম দয়াময় আল্লাহর নামে
১. শপথ তাদের যারা ছোটে হাঁপাতে হাঁপাতে, ২.
সুরার সারসংক্ষেপ:
প্রথম অংশে (১ থেকে ৫ আয়াতে) আল্লাহ্ বেপরোয়া কিছু মানুষের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছেন যাদের উদাহরণ দ্রুত গতিতে দৌড়ানো ঘোড়ার মতো। দ্বিতীয় অংশে (৬ থেকে ৮ আয়াতে) আল্লাহ্ মানুষের কিছু মানবিক দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম অংশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, মানুষ আসলে বেপরোয়া এবং ঘোড়ার মতো সে মনিবের বাধ্যগত নয় বরং অবাধ্য। তৃতীয় অংশে (৯ থেকে ১১ আয়াতে) আল্লাহ্ আখিরাতের কথা বলেছেন, যেদিন মানুষের ওই বেপরোয়া ভাব প্রকাশ পাবে, যা সে লুকিয়ে রাখত সেদিন মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে তার কর্মকাণ্ডের জন্য।
আরও পড়ুনস্বজাতিকে বাঁচাতে চাইল যে কাঠমিস্ত্রি১৬ এপ্রিল ২০২৫তিনটি দুর্বলতার কথা বলা হয়েছে: ক. মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ। খ. মানুষ জানার পরও কৃতজ্ঞতার ও জবাবদিহির বিষয়ে উদাসহীন। গ. মানুষ ধন-সম্পদের ভালোবাসায় মত্ত থাকে।
আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের বিভিন্ন উপায় আছে। যেমন, ১. অন্তরের মাধ্যমে অর্থাৎ আল্লাহর নিয়ামত পেয়ে অন্তরে শুকরিয়া আদায় করা। এর পদ্ধতি হলো, আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর অবাধ্য তার মানসিকতা না থাকা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা। ২. ভাষার মাধ্যমে। অর্থাৎ, মুখে নিয়ামতের শোকরিয়া প্রকাশ করা, গণনা করা ইত্যাদি। দিনরাত আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। ৩. অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমে শুকরিয়া হলো নামাজ আদায় করা ও বেশি বেশি ভালো কাজ করা।
আল্লাহ কিছু মানুষের কথা বলেছেন যারা ঘোড়ার মতো দ্রুত গতিতে চলে। আল্লাহ মানুষের কিছু দুর্বলতার কথা বলেছেন। যেমনটা বলা হয়েছে মানুষ বেপরোয়া এবং ঘোড়ার মতো। সে মনিবের বাধ্যগত নয় বরং অবাধ্য। এই অবাধ্য সে নিজেই জানে, স্বীকার করে। আখিরাতের কথা বলা হয়েছে যেদিন তাঁর এই বেপরোয়া ভাব প্রকাশ পাবে। যা সে লুকিয়ে রাখত। সেদিন রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ হলেও বা বেপরোয়া হলেও তাকে জবাবদিহি করতে হবে।এই সুরায় ঘোড়ার কথা বলা হলেও আল্লাহ মানুষের কথা বলেছেন। মানুষের চরিত্র, অবস্থা বলে দিচ্ছেন আল্লাহ। ওই আরোহীদের মতোই মানুষ আল্লাহকে অমান্য করে, অকৃতজ্ঞতা দেখায়। ঘোড়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের মতো সে নিজেকেও নিজে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। ঘোড়া জীবনকে বাজি রেখে বিপদের মুখে নিজেকে ফেলে দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিন্তু মানুষ তো তাঁর মনিবের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধে যাওয়া দূরে থাক, ইবাদতও করতে চায় না।
তখনকার আরবের চারদিকে ছিল লুটতরাজ, হানাহানি, খুনোখুনি ও দস্যুতা। আল্লাহর দেওয়া শক্তিগুলো অপব্যবহার তাঁর প্রতি অকৃজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়, এ অনুভূতি জাগার পর ও লোকদের বলা হয়েছে, এ ব্যাপারটি এই দুনিয়াতেই শেষ হয়ে যাবে না বরং মৃত্যুর পর আর একটি জীবন শুরু হচ্ছে, সেখানে কেবল তোমাদের সব কাজেরই নয় বরং নিয়তও যাচাই বা পর্যালোচনা করা হবে।
আরও পড়ুনএরা কথা বলতে পারে না১৫ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঘ ড় র মত আল ল হ ব পর য় অব ধ য বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বনভূমি উজাড় ও গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে যদি বলা হয় যে আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই, তাহলে খুব বেশি ভুল হবে না। ৮০ সাল পর্যন্ত এখানে বন ছিল, গাছপালা ছিল, ঝোপঝাড় ছিল। এই অঞ্চলে বা দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনো অংশ কম দায়ী নয়।
সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের চেয়ে বড় আকারের বনভূমি এখন মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী কিংবা সিলেটে দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে এই অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো সবার ভাবতে হবে।
পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে শীতের অনুভূতি পাওয়া যেত। এখন কার্তিক মাসেও শীতের অনুভূতি পাওয়া যায় না। যারা আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা প্রকৃতি সচেতন ছিল। তাই তাদের ওপর খুব বেশি ভূমি ধস হয়েছে শোনা যায় না। তাদের বাড়িঘরেও হয়নি। প্রকৃতিকে যারা চেনে না, তাদের ওপর ভূমিধস হয়।
বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব এ কে এম আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এসম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বৃক্ষমেলায় ২১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।