ভোলার দৌলতখানের প্রত্যন্ত দ্বীপগ্রামটিতে স্থল আর জল যেন একাকার হয়ে মিশে আছে। সেখানে যোগাযোগের সুযোগ সীমিত, শিক্ষার সুযোগ আরও সীমিত। সেই গ্রামেরই ইমা আক্তার। শৈশব থেকেই গণিতের প্রতি তাঁর দারুণ আগ্রহ। সমস্যা বিশ্লেষণ যুক্তি দিয়ে সমাধান খুঁজে বের করাটা তাঁর পছন্দের কাজ। পড়াশোনায় ভীষণ মনোযোগী। এই মনোযোগের ফলও পান। পঞ্চম শ্রেণির পর অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সরকারি বৃত্তি অর্জন করে নিজের মেধার প্রমাণ দেন ইমা।

এরপরই আসে প্রতিবন্ধকতা। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিতে যে শহরে পড়তে যাবেন, কার বাসায় উঠবেন? এমন কেউ তো তাঁর নেই। খরচের বিষয়ও আছে। সেই বাধাও কাটান ইমা। নিজের চেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরও তাঁর পথচলা মসৃণ ছিল না। টাইফয়েডের কারণে দুবার মরতে মরতে ফিরে আসেন। মূল্যবান সময়ও হারান। শামসুন্নাহার হলের ছোট রুমে অসুস্থ শরীর নিয়ে বই আঁকড়ে পড়াশোনা করাটাই ছিল তাঁর লড়াইয়ের হাতিয়ার। ফলস্বরূপ স্নাতকে সিজিপিএ–৪-এ ৩.

৯৪ পেয়ে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পান। আর স্নাতকোত্তরে একেবারে ৪-এ ৪। কৃতিত্বপূর্ণ এই ফলের জন্য কাজী মোতাহার হোসেন পুরস্কারে ভূষিত হন ইমা।

বছর ছয়েক আগে স্নাতকোত্তর শেষ করেই আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি) আমার টিমে যোগ দিয়েছিলেন ইমা। শুরুর দিকে তাঁর ছিল পুরোদস্তুর পরিসংখ্যানবিদের কাজ। আমাদের দলের বিভিন্ন অ্যানালাইসিসে সহায়তা করা। ধীরে ধীরে তাঁকে আমরা গবেষণার অন্যান্য কাজেও যুক্ত করতে শুরু করি। নিজে নিজে পেপার লেখা, ছোটখাটো প্রকল্পে নেতৃত্ব দেওয়া চলতে থাকে। মাস কয়েক পর দেখা গেল, সারা জীবন অঙ্ক বোঝা মেয়েটা পলিসি বুঝতে শুরু করছে, নতুন আইডিয়াও হাজির করছে, পেপারও তৈরি করছে।

আমাদের এখানে কোনো চিকিৎসকও যখন যোগ দেন, তাঁর প্রথম কাজ হয় চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট। পরে তাঁদেরও কনটেন্ট বুঝতে হয়, অ্যানালাইসিস বুঝতে হয়, পলিসি বুঝতে হয়। এভাবেই তাঁরা হয়ে ওঠেন গবেষক। ইমাও এভাবে এক-দুই বছরের মধ্যে গবেষক হয়ে উঠলেন।

গবেষণার প্রতি তাঁর আগ্রহ ক্রমে গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করতে দেশের প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে গেছেন। প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলে সহকর্মীদের সহযোগিতায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শিখেছেন। কঠিন মুহূর্তগুলো তাঁকে আরও দক্ষ ও পেশাদার করে তুলেছে।

আরও পড়ুনহতে চেয়েছিলেন স্থপতি, হয়ে গেলেন ডিজাইনার৮ ঘণ্টা আগেইমা আক্তার

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিলো ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স

পুঁজিবাজারের বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রেরণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে কোম্পানিটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) সিস্টেমসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়েছে।

কোম্পানির ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ফলে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ১ টাকা নগদ লভ্যাংশ পায়েছেন শেয়ারহোল্ডারা।

কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করা হয়।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ