অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচনে আবারও জয়ী লেবার পার্টি
Published: 3rd, May 2025 GMT
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন লেবার নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ। আজ শনিবার দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মধ্যবামপন্থি এই নেতা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। বিরোধী দলীয় নেতা পিটার ডাটন নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করে আলবানিজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। খবর বিবিসি, রয়টার্সের
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। এতে লেবার পার্টি ৮৬টি আসন, এলএনপি জোট ৪০টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০টি আসন পেয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত বামপন্থি গ্রিন পার্টি কোনো আসন পায়নি। তবে এবারের নির্বাচনে তাদের আগের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজয়ী বক্তব্যে আলবানিজ বলেন, ‘আশা ও দৃঢ়তা নিয়ে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরা আবারও অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে ফিরে যাচ্ছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।’ তিনি হাত তুলে সমর্থকদের অভিবাদন জানান। এরপর মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যান।
অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে ভোটার এক কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে রেকর্ড ৮০ লাখ ভোটার আগেই ভোট দিয়েছেন। প্রতিনিধি পরিষদের ১৫০টি আসনের সবকটিতে এবং সিনেটের ৭৬টির মধ্যে ৪০টি আসনে আজ ভোট হয়।
নির্বাচনে বড় দুই দলেরই প্রচারণার কেন্দ্রে ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া-সংক্রান্ত চাপের বিষয়টি। তবে জনমত জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে বিশ্বজুড়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেটি দ্রুত অস্ট্রেলিয়ার ভোটারদের কাছে নির্বাচনী প্রচারণার ইস্যু হয়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা মিত্র অস্ট্রেলিয়া। তবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে। এরপরও অস্ট্রেলিয়াকে ট্রাম্পের শুল্কনীতি থেকে রেহাই দেওয়া হয়নি। অস্ট্রেলীয় পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০২২ সালের নির্বাচনে প্রাথমিক ভোটের ভাগ প্রায় সমান ছিল। লেবার পেয়েছিল ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ, লিবারেল-ন্যাশনাল জোট ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং অন্যরা ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
মনোনয়ন পেয়েই খুলনায় বিএনপি প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু
দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর খুলনায় বিএনপির প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। দলের ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের জন্য ভোট প্রার্থনা করে দোয়া মাহফিল, মোটর শোভাযাত্রা এবং সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু হয়েছে।
খুলনায় ছয়টি সংসদীয় আসন রয়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থী ঘোষণা করে। একটি আসন স্থগিত রেখেছে।
মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- খুলনা-২ আসনে সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনে আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ আসনে আলী আসগর লবি এবং খুলনা-৬ আসনে খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। তবে, খুলনা-১ আসনের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এবং মনিরুল হাসান বাপ্পির মনোনয়নকে নতুন চমক বলে অভিহিত করেছে।
সূত্র মতে, খুলনা-২ আসনে প্রত্যাশীদের মধ্যে নগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলমসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা মনোনয়ন ছিলেন। তবে, দল মঞ্জুকে বেছে নিয়েছে। যিনি ২০২৩ সাল থেকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত ছিলেন। কিন্তু নগরীতে তার অনুসারীর সংখ্যা রয়েছে প্রচুর।
অনুভূতি প্রকাশ করে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘‘দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তাদের আস্থা ও স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞ।’’
খুলনা-৩ আসনে দলের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। যিনি আগে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
খুলনা-৪ আসনে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পারভেজ মল্লিকের মধ্যে মনোনয়নের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। কিন্তু দলটি অবশেষে হেলালকে মনোনয়ন দেয়।
খুলনা-৫ আসনে প্রাক্তন এমপি এবং প্রাক্তন বিসিবি সভাপতি আলী আসগর লবিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
তবে, সবচেয়ে বড় চমকটি এসেছে খুলনা-৬ আসনে। যেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আল-দীন এবং স্থানীয় নেতা ডা. আব্দুল মজিদ এবং রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র বিএনপি নেতাকে সামনের দৌড়ে দেখা গেছে। তবুও দলটি মনিরুল হাসান বাপ্পিকে বেছে নিয়েছে। যিনি সম্প্রতি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব নিযুক্ত হয়েছেন।
মনোনয়নের কথা স্মরণ করে বাপ্পী বলেন, “আমি ৩৫ বছর ধরে এই দলে আছি। ছাত্রদল থেকে যুবদল ও বিএনপি। আমি সবসময় হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নেমেছি। দল আমার ত্যাগ স্বীকার করেছে। এই মনোনয়ন প্রমাণ করে যে নিষ্ঠা কখনও বৃথা যায় না।”
এদিকে, মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার থেকে খুলনার নির্বাচনী এলাকায় এরইমধ্যে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করেছেন।
খুলনা-৪ আসনের আজিজুল বারী হেলাল রূপসা ঘাটের ব্যাংক মোড়ে এক দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে তার প্রচারণা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘‘ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আবারো আমার জন্মস্থানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অনেক সম্মানের।’’
খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী মনিরুল হাসান বাপ্পী তার প্রচারণা শুরু করেন তার বাবার কবর জিয়ারত, হাসপাতালে অসুস্থ দলীয় নেতাদের সাথে দেখা করে এবং কয়রা ও পাইকগাছার উপজেলা নেতাদের সাথে কথা বলে।
তিনি বলেন, “বুধবার জেলা পর্যায়ের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে প্রচারণা আরো জোরদার করা হবে।”
এদিকে, খুলনা-২ আসনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বর্তমানে অসুস্থ থাকায় তার অনুসারীদের মাধ্যমে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছেন।
মঞ্জুর অনুসারি সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই দলীয় কর্মীরা তার পক্ষে দিনব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এখনো চালাচ্ছেন।”
খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলামের পক্ষেও প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। বকুল সমর্থকরা দিনব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস