স্বর্ণালি সন্ধ্যায় প্রথমেই ছিল বাংলা নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে ‘প্রকৃতির কোলে কাঁখে, এ বৈশাখে’ শিরোনামে বৃন্দ আবৃত্তি। কবি মোহিনী সংগীতা সিংহ রচিত ও আবৃত্তিশিল্পী রীমা দাশ নির্দেশিত এই আবৃত্তি পরিবেশন করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদের সদস্যরা। এর পর দ্বাষষ্টিতম আবর্তনের খ বিভাগের শিক্ষার্থীদের গ্রন্থনায় ও রীমা দাশের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় বৃন্দ আবৃত্তি ‘চতুরঙ্গ’। মুহূর্তে কবিতার ছন্দে মিলনায়তনে আনে অন্যরকম আনন্দের আমেজ।
২৮ এপ্রিল জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রাম মিলনায়তনে বোধন আবৃত্তি স্কুল চট্টগ্রামের দ্বাষষ্টিতম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছিল বৈশাখ বন্দনা। এতে অতিথি ছিলেন সংগীতশিল্পী শাহরিয়ার খালেদ। বোধনের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ণ প্রসাদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা ও সনদ বিতরণ পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠান সম্পাদক জাভেদ হোসেন। আরও বক্তব্য দেন বোধন সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ ও সহসভাপতি আবৃত্তিশিল্পী শিমুল নন্দী।
সন্দীপন সেন একা, স্মরণ ধর, লাবণ্য দেব, অভিষেক রুদ্রর নির্দেশনায় ছড়া ও কবিতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘শিশুর ভাবনায় পৃথিবী’। একক আবৃত্তি, শ্রুতি নাটক ও বৃন্দ আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন মাহমুদা তাসনিম সুলতানা, শ্রাবন্তী দেবী, অনির্বাণ বণিক সৃজন, সাবিত্রী তালুকদার, অন্তরা কুরী, তাসনিম হাসান তানিসা, শাপলা ধর, প্রিয়ংকরী চৌধুরী, জান্নাতুল নুসরাত নুহা, মানসী বড়ুয়া, হাফসা ইসলাম নিহা, অনিন্দিতা ঘোষ শ্রেয়া, আনিকা তাবাসসুম সুব্হা, রাজবীর সব্যসাচী আকাশ, তানজিনা সুলতানা তন্বী, অব্যয় দাশ, নাফিসা হাসান আসফি, সেঁজুতি ভট্টাচার্য্য, নওশিন নাওয়াল, ঊর্মিলা ধর, অজন্তা কুরী, শ্রেয়াস দেব প্রমিত, মোহনা দাশ, ঐন্দ্রিলা ঘোষ, অধ্রিত শ্রেয়ান, ইশিকা পাল, অরিত্রিতা চৌধুরী, কৈশিকা মল্লিক, তুনাজ্জিনা তাসফি, সামারাহ মায়ামিন, প্রত্যুষ বৈদ্য, নাফিম আহমেদ, আহনাফ সাদিদ হোসেন, প্রত্যয় চক্রবর্তী, ফাইরুজ সারা, প্রাচী চৌধুরী, মৃত্তিকা মজুমদার, নৈঋত দাশ, অনি পাল, পার্থ ধর সৃঞ্জয়, হুজাইফা আফরিন জিদনী, রুদ্রাক্ষী চৌধুরী, অদ্রিজা সাহা, তাহিয়া জাহান প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী সুতপা মজুমদার ও পাতা দে বৃষ্টি। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বোধনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মাইনুল আজম চৌধুরী। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজিউর রহমান বিতান, প্রণব চৌধুরী, তৈয়বা জহির আরশি, লাভলী আকতার নিশাত, সৌরভ দে, রমিজ বাবু, পৃথুলা চৌধুরী, অর্চি দত্ত, মমি ভট্টাচার্য, ঋতুপর্ণা চৌধুরী, সৌরভ দে, হোসনে আরা নাজু, স্মরণ ধর, অভিষেক রুদ্র রাজ, ঋতু দে, অপু মজুমদার, মিথিলা চৌধুরী, রিপন সেনগুপ্ত, প্রণিতা দেব চৈতী, অর্পিতা চৌধুরী, মোহাম্মদ তাহসিন, অনিমেষ পালিত, তারিন, ময়ূখ চৌধুরী, সুমি দে, উৎস, প্রিয়ন্তী বড়ুয়া, সুজাতা বড়ুয়া প্রমুখ।
ছবি- রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কাপ্তাই সড়কের কমলার দিঘি- কচুখাইন সড়কের প্রায় ৪ কিলোমিটার আরসিসি পথর ঢালায় সড়ক নির্মাণের কাজের উদ্বোধন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’