জোবাইদা রহমানকে বরণে প্রস্তুত ধানমন্ডির মাহবুব ভবন
Published: 6th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মীনি ডা. জোবাইদা রহমানকে বরণ করতে প্রস্তুত ধানমন্ডির ‘মাহবুব ভবন’।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ৭টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডের ৮০ নাম্বার বাসা ‘মাহবুব ভবন’ গিয়ে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন।
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তাঁর পুত্রবধূ ডা.
মাহবুব আলী খানের দুই মেয়ের মধ্যে জোবাইদা রহমান ছোট। তার জন্ম সিলেটে। পড়ালেখা করেছেন ঢাকায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাবা-মায়ের আগ্রহে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। তিনি সেখান থেকে এমবিবিএস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মেধায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৫ সালে বিসিএস দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন সরকারি চিকিৎসক হিসেবে। জোবাইদা রহমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস-স্বাস্থ্য) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
জোবাইদা রহমানের বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান ১৯৭৮ সালের ৪ নভেম্বর ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এরপর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকারের সময়েও তিনি যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জোবাইদা রহমানের চাচা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী।
ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “দীর্ঘদিন পর আমাদের প্রতিবেশী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মীনি ডা. জোবাইদা রহমান তার বাবার বাসায় আসছেন। এটা খুশির খবর। তারা বাবা মাহবুব আলী খান খুব ভালো লোক ছিলেন।”
উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, বাড়িটির নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশাকরি তিনি নিরাপদ এখানে এসে পৌঁছাতে পারবেন। বর্তমানে এখানে কোন ধরনের নিরাপত্তা জনিত সমস্যা নেই। আশাকরি এই বাসায় নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারবেন।
ঢাকা/রায়হান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ধ নমন ড র রহম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
বাড়ছে অপরাধী চক্রের দৌরাত্ম্য
ময়মনসিংহ নগরীতে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও খুনের মতো ঘটনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর গাঙ্গিনারপাড় এলাকার ব্যস্ততম শপিংমল অলকা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের দ্বিতীয়তলার মোবাইল ফোন মার্কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। জিরো পয়েন্ট মোবাইল শপ নামে দোকানের তালা ভেঙে মালপত্র লুট করে অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জন যুবক।
দোকানটির মালিক হৃদয় খানের ভাষ্য, তাঁর দোকানে ২৮০টির মতো মোবাইল ফোন ছিল। দুর্বৃত্তরা আনুমানিক ২৫০টি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এ ছাড়া তাঁর ক্যাশ বাক্স ভেঙে প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে চোরচক্রটি।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সিআইডির বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাটি তদন্ত করছে। পুলিশের পরিদর্শনকারী দলের নেতৃত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করবেন তারা। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের ভেতর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যেখানে ৭০ লাখ নাগরিকের বসবাস সেখানে ২ হাজার পুলিশ দিয়ে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তবুও যেসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে সেগুলোকে চিহ্নিত করছেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে ‘চাচার হোটেল’ নামক রেস্তোরাঁর মালিককে নিজ বাড়িতে আটকে রেখে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন রেস্তোরাঁ মালিকের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ২-৩ জন ব্যক্তি জিলা স্কুলের মোড় সংলগ্ন বাসভবনে প্রবেশ করে। এরপর সাবিনা ইয়াসমিনের স্বামী মোসা খন্দকারকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে নগদ ২৩ লাখ টাকা এবং আনুমানিক দুই লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি ফিরোজ জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। তাঁর আশা দ্রুতই রহস্য উদ্ঘাটন করা যাবে।
গত ১৬ জুন নগরীর ক্লিনিক মালিক সমিতি চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু চক্র ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত চাঁদা দাবি করছে এবং চাঁদা না দিলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃ্তরা। ভুক্তভোগী মনিরুল হক জানান, তিনি আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখা থেকে অটোরিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছামাত্র কয়েকজন যুবক তাঁর পথরোধ করে। ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে।
একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নগরীর সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা প্রশ্ন তুলছেন, দিনের পর দিন এভাবে অপরাধ চলতে থাকলে তাদের নিরাপত্তা কোথায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, সম্প্রতি নগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চুরি, ছিনতাই, খুনের ঘটনা ঘটছে। সরকার পতনের পর পুলিশের অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় এমন হচ্ছে। রাজনৈতিক মধ্যস্থতায় তারা নিজেদের ব্যস্ত রাখায় সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরছে না।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতি নির্ধারণের কোনো মানদণ্ড নেই উল্লেখ করে পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম জানান, প্রতিনিয়ত চোর ও ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে আলাদতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হচ্ছে। গত ৩-৪ মাসে ১৩১ জন ছিনতাইকারীকে ধরা হয়েছে। তারা আবার জামিনে বের হয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।