নিহত ৯৬ জনের নাম পেয়েছে হেফাজত, যাচাই–বাছাই চলছে
Published: 6th, May 2025 GMT
২০১৩ সালের ৫ মে মধ্যরাতে রাজধানীর শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে কতজন নিহত হয়েছেন, সে তালিকা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তবে সংগঠনটির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে গঠিত সাংগঠনিক কমিটি এখন পর্যন্ত ৯৬ জনের নাম তালিকাভুক্ত করেছে, যা এখনো যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই নিহত ব্যক্তিদের তালিকা চূড়ান্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার চিন্তা করছে হেফাজত।
হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার লক্ষ্যে সংগঠনের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী। গত রোববার পর্যন্ত তাঁরা ৯৬ জনের নাম পেয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ জনের মতো নিহত ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ নাম, পরিচয় ও ঠিকানা রয়েছে। অন্যদের নাম পাওয়া গেলেও ঠিকানা সংগ্রহ করা যায়নি।
৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন দাবিতে মহাসমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। মহাসমাবেশে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ২০১৩ সালের ৫ মের শহীদের তালিকা চলতি মাসের মধ্যে প্রকাশ করার ঘোষণা দেন।
গণহত্যা হিসেবে এর বিচারের দাবি করছি, ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি। এখন আমরা বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই। মাওলানা সাজিদুর রহমান, মহাসচিব, হেফাজতে ইসলামফজলুল করিম কাসেমী প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে, সেটি চূড়ান্ত নয়। আমরা এ পর্যন্ত ৯৬ জনের নাম-পরিচয় পেয়েছি। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশের পর অনেকের অভিভাবকেরা যোগাযোগ করছেন।’
হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন আমির প্রয়াত শাহ আহমদ শফী ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফিরে ৭ মে এক বিবৃতিতে দাবি করেছিলেন, ওই অভিযানের সময় আড়াই থেকে তিন হাজার লোক মারা গেছেন। পরে হেফাজতের নেতারা জানিয়েছিলেন, তাঁরা হতাহত ব্যক্তিদের তালিকা করছেন, সেটা যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে। হেফাজত আমিরের বিবৃতির পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।
তবে পরে পুলিশ দাবি করেছিল, শাপলা চত্বরে ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী ২০১৩ সালের ৪ জুন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রশাসনের চাপ ও হয়রানির কারণে তাঁরা ঠিকমতো তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। তখন পর্যন্ত ৭৩ জন নিহত হওয়ার ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত হতে পেরেছিলেন জানান।
হেফাজতের একাধিক নেতা তখন দাবি করেছিলেন, তাঁদের তৈরি একটি খসড়া তালিকা মানবাধিকার সংগঠন অধিকারকে দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ১০ জুন অধিকারের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান অনুসন্ধানের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অধিকার নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের এক মাস পর তথ্য মন্ত্রণালয় ৬১ জনের নাম-ঠিকানা চেয়ে অধিকারকে চিঠি দেয়। কিন্তু অধিকার জানায়, সরকার হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করলে তালিকা হস্তান্তর করা হবে। এর এক মাস পর অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে (বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৯ আগস্ট অধিকার তাদের ফেসবুকে ৬১ জনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে।
এ ঘটনাকে ইতিহাসের একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন রাতের অন্ধকারে নির্মমভাবে মাদ্রাসার ছাত্র, হাফেজ, আলেমদের হত্যা করা হয়েছে, আহত ও পঙ্গু করা হয়েছে। অনেকের লাশও গুম করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এর সংখ্যা প্রকাশ করতে একটু সময় নিচ্ছি, যাচাই-বাছাই করছি। আমরা গণহত্যা হিসেবে এর বিচারের দাবি করছি, ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি। এখন আমরা বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন র ন ম প ইসল ম স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
৭ ব্যাংকে তৃতীয় পর্যায়ে অফিসার ক্যাশ পদে নিয়োগ পেলেন ৩৬ জন
সোনালী ব্যাংক পিএলসি, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ৩৬ (ছত্রিশ) প্রার্থী নিয়োগ পেলেন। সাতটি ব্যাংকে ২০২০ সালভিত্তিক ‘অফিসার (ক্যাশ)’ পদের তৃতীয় পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে এই ৩৬ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত সাতটি ব্যাংকে ২০২০ সালভিত্তিক ‘অফিসার (ক্যাশ)’ পদে নিয়োগে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রমানুসারে প্রণীত প্যানেল থেকে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬ (ছত্রিশ) প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমেট্রোরেলে ১২০ পদে চাকরির সুযোগ০৪ মে ২০২৫সোনালী ব্যাংক: 623830, 534635, 507648, 593324, 565293, 567910 = ৬ জন
অগ্রণী ব্যাংক: 594294, 506178, 581676, 571436, 634233, 642629, 662392, 587109, 521627, 536283, 516290, 500133, 528643, 596897, 531168, 548238, 523304, 625567 = ১৮ জন
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক: 571323, 580925, 545061, 571101, 620016, 513394, 566611 = ৭ জন
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক: 607908 = ১ জন
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক: 523511, 644352, 651706, 651591 = ৪ জন
নিয়োগসংক্রান্ত পরবর্তী সব কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সম্পাদন করবে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে চাকরি, ১ পদে নেবে ২০ জন০৩ মে ২০২৫