কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজারের ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ডাকাতিয়া নদী। বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীটিকে ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে।

নদীদূষণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিকেরা। তাঁদের দাবি, এ অবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্রেতা, স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নদী রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

৪ মে সরেজমিনে দেখা যায়, বাগমারা বাজারের উত্তরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের সেতুর কাছে ময়লা-আবর্জনা বিশাল স্তূপ। দুর্গন্ধে সেখানে দাঁড়ানোও কষ্টকর। বাজারের কয়েক শ দোকান, শতাধিক বসতবাড়ি ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিতভাবে নদীতে ফেলা হয়। কেউ কেউ রেললাইনের পাশেও ময়লা ফেলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগমারা বাজার এলাকার এক তরুণ বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দিনরাত যে যেভাবে পারছেন নদীর আধা কিলোমিটার এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। বিশেষ করে বাজারের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী, মুরগি, মাছ, মাংস ও তরকারি ব্যবসায়ীরা ময়লা বস্তায় ভরে নদীতে ফেলছেন। যখন পানি বেশি থাকে, তখন এসব ময়লা স্রোতে ভেসে যায়। এ ছাড়া অনেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রেখে পরিবেশ দূষণ করছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জানান, নদীর পাড় ঘেঁষে শতাধিক বসতঘর আছে। নদীর পাড়ে বাগোরা উচ্চবিদ্যালয়, বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগমারা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। এ ছাড়া নদী–সংলগ্ন মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহান মুসল্লিরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে নদী ও রেললাইনের পাশে ময়লা ফেলছি। কারণ, আমাদের ময়লা ফেলার জন্য কোনো জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি বাজার কমিটি, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন।’

বাজার কমিটির আহ্বায়ক ও বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন বলেন, একটি জায়গা ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে চার বছর ময়লা ফেলা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কুমিল্লা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, নদীদূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের সভায় তোলা হবে।

তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের কুমিল্লা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব জানান, নদী রক্ষার দায়িত্ব পাউবোর এবং ময়লা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের।

নদীদূষণ ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাদ্রী খীসা। তিনি বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তদন্তে দেখা গেছে, পানি নামার নালাগুলো ময়লা দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এভাবে নদীতে ময়লা ফেলা চলতে থাকলে পরিবেশ আরও দূষিত হবে। এখনই কঠোর পদক্ষেপ জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ ব যবস য় ব গম র পর ব শ প রক শ র ময়ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ