টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় প্রান্তিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন। এছাড়া, সখীপুরে ট্রাকচাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে কালিহাতী উপজেলার মুলিয়া এলাকায় এবং সখীপুর সদরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর গুসাইবাড়ি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুস সালাম (৪০), মির্জাপুর উপজেলার সাটিয়াচুরা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে এস এম আলম (৬৫) এবং সখীপুর পৌর এলাকার গড়গোবিন্দপুর গ্রামের মাসুদ রানার ছেলে সোয়াদ আল সাফওয়ান (৫)।

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানিয়েছেন, বিকেলে টাঙ্গাইল থেকে ময়মনসিংহগামী প্রান্তিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস কালিহাতী উপজেলার মুলিয়া এলাকায় এলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় বাসটি সড়কের পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের দুই যাত্রী নিহত হন। আহত হন অন্তত ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, সখীপুরে অটোরিকশা থেকে নেমে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় সোয়াদ আল সাফওয়ান নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কী করব পেট কি আর দুর্গন্ধ বুঝে’

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে কাঁচামাটিয়া নদী। এই নদীতে পড়ছে পৌরসভার বর্জ্য। এতে ভরাট হচ্ছে নদী, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। শুধু তা-ই নয়, পৌরসভার বর্জ্যে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভাগাড়। বর্জ্যের উৎকট গন্ধ ও ধোঁয়ায় দিন দিন বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বেড়েছে মশার উপদ্রব।
জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয় ঈশ্বরগঞ্জ। নামে প্রথম শ্রেণির হলেও কাজেকর্মে অনেক দিক থেকেই পিছিয়ে। এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য দীর্ঘসময়েও স্থাপিত হয়নি কোনো ডাম্পিং স্টেশন। ফলে পৌর কর্তৃপক্ষ সব বর্জ্য ফেলছে পৌর বাজার সংলগ্ন কাঁচামাটিয়া নদীতে। এ ছাড়া গৃহস্থালি ও কাঁচাবাজারের বর্জ্যগুলোও নদীর পাশাপাশি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক ঘেঁষে সেতুর পাশেই ফেলা হচ্ছে। শুধু ওখানেই নয়, মহাসড়ক ঘেঁষে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকাতেও ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। বৃষ্টির পানিতে এসব ময়লা-আবর্জনা মহাসড়কের ওপর এসে জমাট বাঁধে।
কাঁচামাটিয়া নদীর সেতুর পাশের কাপড় ব্যবসায়ী রিফাতুল ইসলাম পিয়েলের ভাষ্য, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে তারা যেমন অতিষ্ঠ, ক্রেতারাও এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই আবর্জনার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। তখন ধোঁয়ার গন্ধে নাড়িভুঁড়ি উল্টে আসে। সে সময় মনে হয় ব্যবসা গুটিয়ে বাড়ি চলে যাই। কিন্তু কী করব, পেট কি আর দুর্গন্ধ বুঝে!’
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার জানায়, ময়লা-আবর্জনার পচা গন্ধে আসা-যাওয়ার সময় স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। নাক চেপে চলাচল করতে হয়। 
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান জানান, কাঁচামাটিয়া নদীর ধারে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। দখল-দূষণে এই নদী এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। 
নদীতে বর্জ্য ফেলার বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বর্জ্যের কারণে জলজ প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে মাছের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায় এবং বংশবৃদ্ধি পায় না। এ কারণে নদীসহ অন্যান্য জলাশয়ে বর্জ্য ফেলা যাবে না। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাদিয়া তাসনিম মুনমুনের ভাষ্য, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ নিঃশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে। এতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ অনেক জটিল রোগেও আক্রান্ত হতে পারে একজন মানুষ। তা ছাড়া ময়লা-আবর্জনা থেকে মশা-মাছির উৎপত্তি হয়। 
ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হোসাইন বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। পরে ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা নির্ধারিত না থাকায় ওই টাকা ফেরত যায়। ইতোমধ্যে পৌরসভার বাইরে খাস খতিয়ানের একটি জায়গা নির্ধারণ করে ডাম্পিং স্টেশনের বরাদ্দের টাকা ফেরত চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ফের আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ