চক্ষু বিজ্ঞানের কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাইয়ের আহতদের ধাক্কাধাক্কি
Published: 28th, May 2025 GMT
ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কর্মচারীদের সঙ্গে সেবা প্রার্থী ও হাসপাতালে ভর্তি জুলাই আন্দোলনে আহতের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৮ মে) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে সেবাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং আহতদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তার দাবিতে আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন কর্মচারীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা। চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। এতে কয়েকশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান।
আরো পড়ুন:
বরিশালে মেডিকেল ছাত্রের আত্মহত্যা, চিরকুট উদ্ধার
রোগী সেজে জামালপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান
জানা গেছে, শিডিউল অনুযায়ী অপারেশন করার কথা থাকলেও তা করা যাচ্ছে না। আউটডোরে লাইন থাকলেও টিকিট দেওয়ার লোক নেই। রুমের সামনে লোক থাকলেও ডাক্তার ও কর্মকর্তা নেই। শুধু জরুরি বিভাগ চলছে।
হাসপাতাল প্রাঙ্গণে একজন রোগী বলেন, “চোখের চিকিৎসার জন্য গাজীপুর থেকে আসছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি নার্স এবং কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন, তাই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি।”
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম জানান, সেনাবাহিনী আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে।
সম্প্রতি হাসপাতালটিতে চার জন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত রোগী বিষপান করেন। এটিকে কেন্দ্র করে পরিচালক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, গায়ে হাত তোলা, ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে। পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, “গতকালকের একটি অনভিপ্রেত ঘটনার কারণে স্টাফরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। যার কারণে তারা কর্ম বিরতিতে গেছে আমি জানি। তবে আমি ছুটিতে, আমার পরিবর্তে আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
গতকালের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গতকাল জুলাই যোদ্ধারা আমার কাছে এসেছিল। তারা আমার রুমেই নিজেদের মধ্যে তর্কে লিপ্ত হয়। মারামারি করে। কেউ আবার পেট্রোল নিয়ে আসছে। পেট্রোল কী জন্য নিয়ে আসছে, জানি না। নিজেরা সুইসাইডাল অ্যাটাক করবে, না হাসপাতাল জ্বালিয়ে দিতে আনছে জানি না। কারণ, তাদের মধ্যে নানান বিভাজন আছে। এরপরে একপক্ষ আবার আমাকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলাম। পরে জুলাই যোদ্ধারাই আমাকে নিরাপত্তা দিয়ে বের করে দিয়েছে।”
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া ৫৫ জন এখনো ওই হাসপাতালে আছেন। তাদের মধ্যে গত রবিবার চার জন বিষ পান করেন। যাদেরকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লিভারপুলে শিরোপা উৎসবে ট্র্যাজেডি, আহত ৪৭
প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের আনন্দে লিভারপুল শহরের রাস্তায় জড়ো হয়েছিলেন হাজারো সমর্থক। উৎসবের সেই মুহূর্তে হঠাৎ একটি গাড়ি ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন, যাদের মধ্যে চারজন শিশু।
লিভারপুল পুলিশ জানিয়েছে, ৫৩ বছর বয়সী এক শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যিনি সন্দেহভাজন চালক। যদিও তারা নিশ্চিত করেছে, ঘটনাটি সন্ত্রাসী হামলা নয় এবং এটি ‘একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’। তদন্তে এ পর্যন্ত পরিকল্পিত হামলার বা অন্য কারও সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, গাড়িটি আচমকা জনতার ভিড়ে উঠে সবাইকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছে। এরপর জনতা চালকের দিকে তেড়ে গেলে পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাকে রক্ষা করে।
লিভারপুল পুলিশের অস্থায়ী ডেপুটি চিফ কনস্টেবল জেনি সিমস বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমরা আর কাউকে খুঁজছি না এবং এটি সন্ত্রাসী কার্যক্রম নয়।’
করোনাভাইরাস মহামারির পর এই প্রথম বড় কোনো শিরোপা উদ্যাপনের সুযোগ পেয়েছিল লিভারপুল সমর্থকরা। উচ্ছ্বাসে ভাসা সেই দিনটি ম্লান করে দেয় এ দুর্ঘটনা। তবে দুর্ঘটনার মাত্র ১০ মিনিট আগেই মূল বাসটি শহরের ওই রাস্তা অতিক্রম করে।
সিটি কাউন্সিলের নেতা লিয়াম রবিনসন ‘এক্স’–এ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি আনন্দময় দিন গভীর দুঃখে রূপ নিয়েছে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানান।
এক বিবৃতিতে লিভারপুল ফুটবল ক্লাব জানায়, তারা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং আহতদের প্রতি তাদের গভীর সমবেদনা রইল।