সমস্যার সমাধান খুঁজতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে
Published: 29th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্ব বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক আস্থা হুমকির মুখে। জাতির মধ্যে, সমাজের অভ্যন্তরে, এমনকি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। তবে আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলোর মুখে অসহায় নই, বরং ইতিহাসের একটি সন্ধিক্ষণে আছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে কেবল সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য নয়, সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য। এই সমাধান যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানবিকতার ভিত্তিতে হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’র উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উত্তাল বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বক্তব্য দেন তিনি। খবর বাসসের।
ড.
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ এক নির্মম রূপ নিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ভূমিকম্প দেশটির গভীর মানবিক সংকটকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। সম্প্রতি আমাদের দুই প্রতিবেশীর (ভারত ও পাকিস্তান) মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু ব্যয়বহুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমরা কোটি কোটি টাকা যুদ্ধের পেছনে ব্যয় করছি, অথচ লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে আছে বা ন্যূনতম চাহিদার জন্য লড়াই করছে।’ যুদ্ধবিরতির জন্য তিনি উভয় দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহাবস্থানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের আবাসস্থল এশিয়া অনিশ্চয়তার কেন্দ্রস্থলে, একই সঙ্গে সম্ভাবনারও কেন্দ্রে। আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো বিশাল, কিন্তু আমাদের সম্মিলিত শক্তিও বিশাল।
নিক্কেই ফোরাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফিউচার অব এশিয়া’ একটি আশাবাদের মঞ্চ। নিক্কেই এমন একটি পরিসর তৈরি করেছে, যেখানে সংলাপ সমাধানে রূপ নেয় এবং যেখানে আস্থা কেবল একটি শব্দ নয়, বরং একটি লক্ষ্য– যার দিকে আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই। এশিয়ার ভবিষ্যৎ কেবল অর্থনীতি বা ভূরাজনীতির বিষয় নয়, এটি মানুষের, ভাবনার এবং সাহসের বিষয়। চলুন, আমাদের চারপাশের অস্থিরতা দেখে ভীত না হয়ে এটিকে একটি আহ্বান হিসেবে নিই– নতুন করে ভাবার, পুনর্গঠনের এবং একসঙ্গে জাগরণের আহ্বান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চলুন, একটি উত্তম বিশ্বের কল্পনা করতে সাহসী হই। চলুন, একে অপরের প্রতি আস্থা রাখি, শুধু প্রয়োজনীয়তার কারণে নয়, বরং আন্তরিক ইচ্ছা থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করি। এশিয়ার ভবিষ্যৎ এখনও লেখা হয়নি– আমরাই তা একসঙ্গে লিখব।’
বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ শ্রমিক নেবে জাপান
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ লাখ শ্রমিক নিয়োগের কথা জানিয়েছেন জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। টোকিওতে ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক সেমিনারে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। একটি হলো, বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিটের (কেডিএস) মধ্যে। অন্যটি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (জাপানে ৬৫টির বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএর (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি) মধ্যে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই অনুষ্ঠান একটি দ্বার উন্মোচনের প্রতীক। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। সরকারের কাজ হলো, তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।
শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন, এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, আগামী পাঁচ বছরে আমরা ১ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল প্রতিবছর ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং তারা এই সংখ্যা ৩ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিলড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং সে কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে।
জাইকার প্রতি উন্নয়নে সহযোগিতার আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত উন্নয়ন উদ্যোগে (এমআইডিআই) সমর্থন জোরদার করতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে নিক্কেই ফোরাম সম্মেলনের ফাঁকে জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই এলাকায় মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রপ্তানিমুখী উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে পারবেন। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা মানবিক সহায়তা বৃদ্ধিতে জাইকার সমর্থন কামনা করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দীপিকা বনাম সন্দীপ, বলিউডের নতুন বিতর্কের নেপথ্যে কী
দীপিকা পাড়ুকোন ও প্রভাস একসঙ্গে ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’ ছবিতে কাজ করেছিলেন। বলা হচ্ছিল যে দুজনে ‘অ্যানিমেল’ ছবির পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার আসন্ন ছবি ‘স্পিরিটে’-ও একসঙ্গে কাজ করবেন। কিন্তু একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দীপিকার ‘অত্যধিক’ দাবির কারণেই নাকি সন্দীপ তাঁকে ছবি থেকে বাদ দিয়েছেন। সম্প্রতি বলিউডে আলোচিত দীপিকা বনাম সন্দীপের অঘোষিত যুদ্ধের নেপথ্যে কী?
দীপিকা পাড়ুকোন। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে