জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামকে কাল রাতে বিসিবির জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত কাউন্সিলর হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের একাধিক পরিচালক। আজ বিকেলে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা হতে পারে। তার আগে আমিনুলকে এনএসসি মনোনীত বোর্ড পরিচালক ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুনবিসিবি সভাপতি ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করল এনএসসি১২ ঘণ্টা আগে

কাল রাতে বিসিবি পরিচালক হিসেবে ফারুক আহমেদের মনোয়ন বাতিল করার আগেই (এনএসসি) আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামকে বিসিবির কাউন্সিলরের চিঠি দেয় এনএসসি। কাল রাতে এক অনলাইন সভায় তাঁর কাউন্সিলরশিপ অনুমোদন করেছে ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকেরা।

কয়েক দিন ধরেই আলোচনা ছিল সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের সভাপতি হওয়া নিয়ে। তবে বিসিবির কাউন্সিলর ছিলেন না তিনি। বিসিবিতে ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলর পাঁচজন, তাঁর মধ্যে দুজন পরিচালক হন। হাবিবুর রহমান নামে আগের এক কাউন্সিলরকে সরিয়ে আমিনুলকে কাউন্সিলর করেছে এনএসসি।

কয়েক দিন আগে দেশে আসা সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল প্রথম আলোকে কাল জানিয়েছেন, বিসিবির যেকোনো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছেন তিনি। তবে দায়িত্বটা লম্বা সময়ে জন্য নিতে রাজী নন আমিনুল।

অনলাইনে অনুষ্ঠিত পরিচালকদের বৈঠকে ফারুক আহমেদের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে এনএসসির চিঠিতে স্বাক্ষর না করা আকরাম খানও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। ৯ পরিচালকের এই ‘রিকুইজিশন মিটিংয়ে’ এনএসসি কর্তৃক ফারুকের মনোনয়ন বাতিলের চিঠি গ্রহণ করা হয়।

আরও পড়ুনফারুকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আট বিসিবি পরিচালকের চিঠি১৫ ঘণ্টা আগে

কয়েক দিন আগে দেশে আসা সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল প্রথম আলোকে কাল জানিয়েছেন, বিসিবির যেকোনো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছেন তিনি। তবে দায়িত্বটা লম্বা সময়ে জন্য নিতে রাজী নন আমিনুল।

গত পরশু অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেন ফারুক আহমেদ। যেখানে ফারুককে বিসিবির দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলা হয়। তবে ফারুক জানিয়ে দেন, এই দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন না।

ফারুক আহমেদ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ আম ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফারুকের নামে ‘কপি–পেস্ট’ অভিযোগে অনাস্থা আনা যায় তাঁদের বিরুদ্ধেও

ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে দেওয়া অনাস্থা প্রস্তাবে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আট পরিচালক। যার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফারুক আহমেদকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বিসিবি পরিচালক হিসেবে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করেছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, পুরো স্ক্রিপটটা যেন লেখাই ছিল! পরশু রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা ফারুককে জানালেন, সরকারের ‘ঊর্ধ্বতন মহল’ তাঁকে আর বিসিবি প্রধান পদে ‘কন্টিনিউ’ করতে চাচ্ছে না। ফারুক জানতে চাইলেন, ‘কেন?’ কোনো উত্তর পাননি। এরপর কাল দুপুরে ফারুক সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দিলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কারণ, কেন তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে, তার কোনো ব্যাখ্যা তাঁকে দেওয়া হয়নি।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে সংবাদমাধ্যমে এল ফারুকের বিরুদ্ধে উপদেষ্টার কাছে দেওয়া আট বিসিবি পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাব। পরপরই এল বিপিএল নিয়ে গঠন করা সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন। বিপিএলের সঙ্গে অনেকের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে সবকিছুর দায় ফারুককে দেওয়া হয়েছে। এরপর কাল রাতেই এনএসসি বিসিবি পরিচালক হিসেবে ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে।

আরও পড়ুনকাউন্সিলর অনুমোদন পেয়েছেন আমিনুল, বিকেলে বোর্ড সভা১ ঘণ্টা আগে

অস্ত্র সব তাক করাই ছিল। ফারুক নিজ থেকে হার মেনে নিলে এত কিছু হয়তো হতো না। সেটা করেননি বলেই একটার পর একটা অস্ত্র ছুড়ে একপেশে খেলায় মেতে উঠে তাঁকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করা হলো এবং সেটা কোনো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে।
ফারুক বোর্ডে এনএসসির মনোনীত পরিচালক ছিলেন। কোনো সমস্যা থেকে থাকলে আগে এনএসসি সেসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক হতো। কিন্তু অদৃশ্য কোনো জাদুবলে এনএসসি সে পথে যায়নি।

অনাস্থা প্রস্তাবে আনা অভিযোগগুলোকে ফারুক বলেছেন ‘কপি–পেস্ট’ অভিযোগ। অর্থাৎ গত ১২ বছরে পরিচালকেরা নিজেরা যা যা করেছেন, সব এখন ফারুকের নামের পাশে জুড়ে দিচ্ছেন। যদি তা–ই হয়, অনাস্থা তো এই পরিচালকদের বিরুদ্ধেও আনা যায়!

তার আগে বরং একটু বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে দেখা যাক কী আছে আট পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাবে, যেটির এত শক্তি?

ফারুক স্বেচ্ছাচারী, কর্তৃত্ববাদী

বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফারুককে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তাঁরা জানেন ফারুক কঠোর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং স্পষ্টভাষী একজন মানুষ। কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় তাঁর আচরণে রূঢ়তা প্রকাশ পায়। আট পরিচালক ফারুকের এই চরিত্রকেই হয়তোবা স্বেচ্ছাচারী ও আধিপত্যবাদী বোঝানোর চেষ্টা করেছেন অনাস্থা প্রস্তাবে।

কিন্তু এই আট–নয় মাসে ফারুকের ‘স্বেচ্ছাচারী ও কর্তৃত্ববাদী’ আচরণ কি আওয়ামী লীগের সময়ের সাবেক বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের চেয়ে বেশি ছিল? স্বেচ্ছাচারী, কর্তৃত্ববাদী, আধিপত্যবাদী—এসব শব্দ তো নাজমুল হাসানের সঙ্গেই বেশি যেত, যাঁর বোর্ড সভায় ভিন্নমত প্রদানের সুযোগ ছিল না বলে ফারুকের প্রতি অনাস্থা আনা পরিচালকেরাই বিভিন্ন সময় বলেছেন। কই তখন তো তাঁরা কেউ নাজমুল হাসানের প্রতি অনাস্থা আনেননি? উল্টো হীরক রাজার পারিষদের ব্যক্তিত্বহীন সদস্যদের মতো সবকিছুতে ওপর–নিচ মাথা নেড়ে গেছেন।

বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাপ রেখে যেতে চান বুলবুল 
  • এবার আমিনুলের কাঁধে দেশের ক্রিকেট
  • বিসিবির সভাপতি হলেন আমিনুল ইসলাম
  • বিসিবির নতুন সভাপতি বুলবুল
  • বিসিবিতে ক্রিকেট বাদে সবকিছুই হচ্ছে: তামিম
  • ফারুকের নামে ‘কপি–পেস্ট’ অভিযোগে অনাস্থা আনা যায় তাঁদের বিরুদ্ধেও
  • আনফেয়ার, আই ওয়ান্ট টু চ‌্যালেঞ্জ: ফারুক
  • বিসিবি সভাপতি ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করল এনএসসি
  • ‘পদত্যাগ’ করতে পারেন বিসিবি সভাপতি ফারুক