‘আমি টি-টোয়েন্টি খেলতে এসেছি, আমাকে মনে রাখবেন’
Published: 30th, May 2025 GMT
“ক্রিকেটে টেস্ট হয় ৫ দিনের, ওয়ানডে ৭ ঘণ্টার... আমি একটা কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি... আশাকরি সবাই আমাকে মনে রাখবেন,” বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য আমিনুল ইসলাম বুলবুলের।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে পরিচালনা পর্ষদের সভায় বোর্ড প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বুলবুল। সবশেষ তিনি আইসিসিতে ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামে কাজ করেছিলেন। এপ্রিলের শেষে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার আহ্বানে তিনি বিসিবিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।
১৬তম বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে বুলবুল ফারুক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী অক্টোবরে বিসিবির নির্বাচন। তাহলে কি মাত্র তিন মাসের জন্য বিসিবিতে এসেছেন বুলবুল?
এমন প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেননি টেস্ট ম্যাচে দেশের প্রথম এই সেঞ্চুরিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনো তিন মাসের জন্য আসিনি, নিজের কাজ করতে এসেছি। কাজ করা হলে চলে যাব।”
“আমার সাথে মাননীয় উপদেষ্টার সভাপতি হওয়া নিয়েও কথা হচ্ছিল না। আমাকে বলেছিল আপনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে চান কিনা? আমি এক বাক্যে হ্যাঁ বলে দিয়েছি। আমি কিন্তু এখানে সভাপতি হওয়ার জন্য আসিনি, এটা পরিক্রমার মাধ্যমে হয়ে গেছে। আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভ করতে চাই,’’ বলেন বুলবুল।
বিপিএলে অনিয়মের তদন্তে ফারুকের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়ার পর পরিচালকদের অনাস্থায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবিতে তার প্রতিনিধিত্ব বাতিল করে। সেই জায়গায় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বুলবুল বিসিবি প্রেসিডেন্ট হন। তার জন্য এখন কাজ করা কিছুটা কঠিন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, ‘‘শেষ বোর্ড সভাপতি সাবেক খেলোয়াড় ছিলেন। খেলোয়াড়রা শিখছে। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, আমার যে স্কিল সেট আছে এটা একটা প্যাকেজ। কেননা আমি ছোট্ট দেশ তাজিকিস্তানের মতো দেশের সাথেও কাজ করেছি। আমি চেষ্টা করবো সর্বোচ্চ দিয়ে, ইনশাল্লাহ ফেল করবো না। আমি শেয়ার করবো আমার অভিজ্ঞতাটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে। ক্রিকেটার হিসেবে আমি এখানে বসিনি, আমার যে দায়িত্ব আছে আমি সেই দায়িত্ব এখানে পালন করার চেষ্টা করবো।”
আমিনুল ইসলাম বুলবুল অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের সেরাটা দিতে চান। বলেন, “সভাপতি হিসেবে আমার আজকের দিনটা শুরু হলো। এটি নিয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই। আমরা চেষ্টা করবো সবার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে , সবার এনার্জি যেন আমরা একসাথে কাজে লাগিয়ে আমরা যেন সামনে এগিয়ে যেতে পারি।’’
প্রথম দিনেই বুলবুল বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মধ্যে সিএফও নিয়োগ, মার্কেটিং বিভাগ ঢেলে সাজানো, আর্থিক অনিয়ম তদন্ত করাসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেন। এ ছাড়া আগামীকাল (৩১ মে) ডাকা হয়েছে বোর্ড মিটিং। এখানে বিস্তর আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্ট।
ঢাকা/রিয়াদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
পবিত্র ঈদুল আজহার দিন চারটি কর্তব্য
প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশম দিনে মুসলিম বিশ্বে উদ্যাপিত হয় ইসলামের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এই দিন কেবল আনন্দের নয়; বরং কোরবানির ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির অপূর্ব মিলনবিন্দু। একই সময় আসে হজের মৌসুম, লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
নামের তাৎপর্য
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পবিত্র ঈদুল আজহার ভিন্ন ভিন্ন নাম। মাগরিব (উত্তর আফ্রিকা) অঞ্চলে এটি ‘ঈদুল কাবির’ বা বড় উৎসব নামে পরিচিত। সিরিয়া ও ইরাকের কিছু এলাকায় এটি ‘ঈদুল হাজ্জাজ’ ও তুরস্ক, ইরানসহ এশিয়ার কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এটি ‘ঈদুল কোরবান’ নামে পরিচিত। আরবি শব্দ ‘ঈদ’ অর্থ যা নিয়মিত ফিরে আসে। ইসলামে বছরে মাত্র দুটি ঈদের বিধান দেওয়া হয়েছে—পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এই দুটি উৎসব ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রোজা ও হজের সঙ্গে সংযুক্ত।
কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।এই অতুলনীয় ত্যাগ ও আনুগত্যের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ একটি দুম্বা পাঠান, ইসমাইল (আ.)–এর পরিবর্তে যা ইবরাহিম (আ.) কোরবানি করেন।
আরও পড়ুনযে আমলে রিজিক বাড়ে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কর্তব্য
পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে তাকবির, ঈদের নামাজ, কোরবানি ও আনন্দ ভাগাভাগি।
১. তাকবির: আরাফার দিন ফজর থেকে তাশরিকের শেষ দিন (জিলহজের ১৩তম দিন) পর্যন্ত ঘরে–বাইরে, মসজিদে ও বাজারে তাকবির ধ্বনিত হয়। সবচেয়ে প্রচলিত তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’। এটি আল্লাহর মহিমা ঘোষণা ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।
কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)২. ঈদের নামাজ: ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি দুই রাকাত, যেখানে প্রথম রাকাতে তিনটি ও দ্বিতীয় রাকাতে তিনটি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়। এ জন্য আজান বা ইকামতের প্রয়োজন নেই। নামাজের পর খুতবা দেওয়া হয়, যা শোনা মুস্তাহাব। রাসুল (সা.)–এর সুন্নাহ অনুযায়ী, নামাজে যাওয়ার পথে এক রাস্তা ও ফেরার পথে অন্য রাস্তা ব্যবহার করা উত্তম।
৩. কোরবানি: কোরবানি পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান আনুষ্ঠানিকতা। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কোরবানির জন্য উট, গরু, ছাগল বা ভেড়া নির্দিষ্ট বয়স ও শারীরিক শর্ত পূরণ করতে হবে। রাসুল (সা.) দুটি সাদা–কালো মোটা ও শিংওয়ালা দুম্বা কোরবানি করেছিলেন (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৫৫৩)। কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)
কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।
৪. আনন্দ ও শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদের দিন আনন্দ প্রকাশ, নতুন পোশাক পরা, আত্মীয়–বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা ইসলামের শিক্ষা। সাহাবিরা ঈদের দিন একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের থেকে কবুল করুন)। এই শুভেচ্ছা সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করে।
সূত্র: আল–জাজিরা ডটনেট
আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫