অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন ও কটাক্ষ বন্ধ করতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ জরুরি
Published: 30th, May 2025 GMT
মাত্র ১০ মাসেই জুলাই অভ্যুত্থানকে অনেকে বাঁকা চোখে দেখতে শুরু করেছেন। দেশের যাবতীয় দুর্দশার জন্যও অভ্যুত্থানের নেতাদের দায়ী করা হচ্ছে। জুলাইয়ের চেতনার বাস্তবায়ন এবং কটাক্ষের এই চর্চা বন্ধ করার জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র জরুরি বলে একটি আলোচনা সভায় বক্তারা অভিমত দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের কনফারেন্স কক্ষে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র: গণ–আকাঙ্ক্ষার সনদ’ শীর্ষক এই নাগরিক সংলাপ হয়। সংলাপের আয়োজন করে ঢাকা রিভিউ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।
সংলাপে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ, প্রগতিশীলতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ছোট একটি গোষ্ঠী পুরো দেশের ওপর কর্তৃত্ব দাবি করছিল। এর বিপক্ষে যে বিপুল পরিমাণ জনগণ ছিল তাদের জীবন তারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষাই ছিল জুলাই অভ্যুত্থান।
জুলাই অভ্যুত্থানে তাঁর আকাঙ্ক্ষা সামান্য ছিল বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তিনি বলেন, ‘সেই সামান্য আকাঙ্ক্ষা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছেন আন্দোলনের নেতারা। পাশাপাশি জুলাই–পরবর্তী গঠিত সরকারও ব্যর্থ হয়েছে।’
আন্দোলনের নেতাদের এবং সরকারের ব্যর্থতা দিয়ে জনগণ জুলাই আন্দোলনকে বিচার করছে উল্লেখ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, এ জন্য তিনি মনে করেন, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ঘোষণাপত্র হতে হবে, কিন্তু তা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নয়।
সংলাপে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা তুহিন খান বলেন, এখন যে ঘোষণাপত্র হবে তা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শে হবে। এরপরও জুলাই ঘোষণাপত্র জরুরি। তিনি বলেন, জুলাইয়ে তাঁরা যে অভ্যুত্থান করেছেন, মাত্র ১০ মাসেই সেটাকে অনেকে বাঁকা চোখে দেখতে শুরু করেছেন। দেশের যাবতীয় দুর্দশার জন্যও অভ্যুত্থানের নেতাদের দায়ী করা হচ্ছে। অভ্যুত্থানকে কটাক্ষ করার এই চর্চা বন্ধ করতে জুলাই সনদ প্রয়োজন।
সাংবাদিক কাজী জেসিন বলেন, বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও ইনসাফ কায়েমের জন্য জুলাই ঘোষণাপত্রে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দুঃশাসনের দিকগুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
আইনজীবী মনজুর আল মতিনের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবায়ের মাহমুদ, লেখক ও চিন্তক রিফাত হাসান, কবি হাসান রোবায়েত, জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ প্রমুখ।
সংলাপে তাঁরা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র কেবল একটি রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক দলিল নয়, বরং তা জাতির দীর্ঘদিনের সংগ্রামের স্বীকৃতি, জনগণের আকাঙ্ক্ষার দলিল এবং ভবিষ্যৎ পথচলার নির্দেশনা হবে। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও প্রচারে সব পক্ষের সক্রিয় ভূমিকা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব