এমনিতেই তিনি ঠোঁটকাটা, কথাবার্তায় রাখঢাক কম। তার ওপর আবার বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সে নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘রমিজ স্পিকস’-এ হিট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাই লাহোরে পাকিস্তানের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৭ রানে লিটনরা হারার পর রমিজ রাজার খোঁচা। 

‘বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ ভুল করে, দ্বিতীয় ম্যাচে আরও বেশি ভুল করে। আর তৃতীয় ম্যাচে তারা নতুন নতুন ভুল করে। ভুল করাটা তাদের রুটিন হয়ে গেছে।’ রমিজ রাজার কথা ধরলে আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে লিটনদের ‘নতুন নতুন ভুল’ করার কথা! আর হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য যে মানসিক জোর দরকার, সেটাও বোধহয় হারিয়ে ফেলেছেন লিটনরা। অন্তত শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচ হারার পর ব্রডকাস্ট ক্যামেরার সামনে লিটন দলের ব্যাটিং নিয়ে যতটা হতাশা প্রকাশ করেছেন, তারপর খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার জায়গা নেই। ‘এই উইকেটে ২০০ রান তাড়া করতে চাইব, কিন্তু ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা সেটা করতে পারিনি।’

এদিন তানজিদ তামিমের শুরুটা বিধ্বংসী হলেও পরে ১০ রানের মধ্যেই চার উইকেট পড়ে যায়। যেখানে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে লিটনের সঙ্গে বোঝাপড়ার সমস্যা দেখা দেয়। অফফর্মে থাকা হৃদয় নিশ্চিত কয়েকটি সিঙ্গেলস নিতে নিরুৎসাহিত করলে বিরক্ত হতে দেখা যায় লিটনকে। তারপর পরই বাজে শট খেলে আউট হয়ে যান লিটন। এটা কি হৃদয়ের সঙ্গে মেজাজ হারানোর কারণে? জিজ্ঞাসা করেছিলেন ব্রডকাস্ট সাংবাদিক। উত্তরে তা এড়িয়ে যান। তবে দলের ব্যাটিং নিয়ে হতাশা লুকাতে পারেননি তিনি। ‘না, এমন নয়। আসলে ক্রিকেটে আপনার মৌলিক জিনিসগুলো করতেই হবে। এটা (রান নেওয়া) তো মৌলিক ব্যাপার। তবে এই মুহূর্তে আমরা ব্যাটিংয়ের মৌলিক কাজগুলো অনুসরণ করছি না। আমাদের ব্যাক টু ব্যাক দুটি উইকেট দেখলে বোঝা যাবে আমরা দুটি রান নিইনি। আমি এটাকে দোষ দিচ্ছি না। তবে আমাদের এদিকে মনোযোগ দিতেই হবে।’ 

অধিনায়ক লিটন তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লের কয়েকটি ওভার খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে প্রত্যাশা মতো ব্যাটিং করতে পারছেন না তিনি। ৬, ৪৮, ১৪, ৪০– পাকিস্তান ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে শেষ চারটি ম্যাচে ১০৮ রান করেছেন তিনি। সেখানে চার নম্বরে নামা তাওহীদ হৃদয় করেছেন ৬৭ রান। ঠিক এখানে এসেই বোধহয় টি২০ ম্যাচে ব্যাটিংয়ের মৌলিক কিছু ব্যাপার ভুলে যাচ্ছেন ব্যাটাররা। শেষ চার ম্যাচে ৬ থেকে ১০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে রান এসেছে যথাক্রমে ২৪, ৩০, ২০, ৩৪। যে সময়টাতে সিঙ্গেলস আর ডাবলসের সঙ্গে বাউন্ডারি হাঁকানো দরকার, সে সময় তাওহীদ হৃদয় গুটিয়ে থাকছেন। 

পাওয়ার প্লেতে রানের গতি নয়-দশের কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর ইনিংসের পরবর্তী পাঁচটি ওভারে এসে ভীষণভাবে তা শ্লথ হয়ে যাচ্ছে। যার চাপ পড়ছে জাকের, শামীম, রিশাদের ওপর। ঠিক এখানেই প্রতিপক্ষের চেয়ে ভীষণভাবে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। তবে লোয়ার অর্ডারে তানজিম সাকিব, হাসান মাহমুদরা কিন্তু বড় বড় শট খেলে চেষ্টা করছেন মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা ঢাকতে। দ্বিতীয় ম্যাচে যেমন ৩১ বলে ৫০ রান করে তিন-তিনটি রেকর্ড গড়েছেন সাকিব। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ৯ নম্বর ব্যাটার হিসেবে প্রথম কারও ফিফটি এবং সর্বাধিক পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন। তিনিও বলেছেন ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে। ‘ব্যাটাররা দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলে এই উইকেটে ২০০ রান করা সম্ভব। জুটি গড়তে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল টন দ স ভ ল কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ