কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল। তলিয়েছে শত শত বিঘার জমির ফসল। 

সোমবার (২ জুন) দুপুরে জানা গেছে, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙা এবং উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে তলিয়ে গেছে বাদাম, মরিচ, পাটসহ রবি শষ্য।

কৃষকরা জানান,  আর এক সপ্তাহ পর ক্ষেত থেকে বাদাম তোলার কথা থাকলেও হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়ায় নিচু এলাকার সব বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। 

বুড়িরহাট এলাকা থেকে কৃষক মনসুর আলী বলেন, “আমার কয়েক বিঘা জমির বাদাম পানির নিচে। হঠাৎ পানি এসে সর্বনাশ করেছে। খরচের টাকাই উঠবে না।”

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, “বাদম ও তিল মিলে প্রায় ৬৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে পানি শুকিয়ে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যাবে।”

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান,  বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢলে গতকাল থেকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরো কিছুটা বাড়ার পর আগামীকাল থেকে হ্রাস পাবে। 

ঢাকা/বাদশা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সব সুযোগ–সুবিধা কবে চালু হবে

বিগত সরকারের আমলে রেল খাতে উন্নয়নের নামে বিপুল ব্যয়ে অহেতুক অনেক রেলস্টেশন নির্মাণ করা হয়। প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সেটি প্রকাশ পায়। দেড় বছর আগে উদ্বোধন হওয়া কক্সবাজার রেলস্টেশনে রাখা হয়েছে যাত্রীদের জন্য অনেক সুযোগ–সুবিধা, কিন্তু এখন পর্যন্ত সেসবের কিছুই চালু করা হয়নি। যাত্রীরা সেবাবঞ্চিত হওয়া ছাড়াও পড়ে থেকে থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে অনেক জিনিসপত্র। বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ছয়তলার রেলস্টেশনটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ২৩৬ কোটি টাকা। মূল প্রকল্পে থাকলেও স্টেশনের এক ডজনের বেশি যাত্রী পরিষেবা চালু হয়নি। ছয়তলা ভবনের নিচতলায় তথ্যকেন্দ্র, মসজিদ, শিশুদের বিনোদনের জায়গা, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ ও পদচারী-সেতু, দ্বিতীয় তলায় শপিং মল, শিশুযত্ন কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ, তৃতীয় তলায় ৩৯ কক্ষবিশিষ্ট তারকা মানের হোটেল, চতুর্থ তলায় রেস্তোরাঁ, শিশুযত্ন কেন্দ্র, কনফারেন্স হল ও কর্মকর্তাদের কার্যালয়—কিছুই চালু হয়নি। ঝিনুকের আদলে তৈরি ফোয়ারায় নেই পানির বিচ্ছুরণ, সেদিকের প্রবেশপথটিও বন্ধ।

উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, রাতের ট্রেনে পর্যটকেরা রেলস্টেশনে পৌঁছে লকারে লাগেজ কিংবা মালামাল রেখে সমুদ্রসৈকত, দর্শনীয় স্থানে ঘুরেফিরে রাতের ট্রেনে আবার ঢাকায় ফিরতে পারবেন। কিন্তু এসব কিছুই হয়নি। যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলোর জন্য অবকাঠামো তৈরি করা হলেও সেগুলো এখনো কেন ফেলে রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কক্সবাজারের নাগরিক সমাজ। এতে যাত্রীরা সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন, দুর্ভোগেরও শিকার হচ্ছেন। শুধু তা–ই নয়, সরকার আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। তা ছাড়া জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাওয়ায় স্টেশনটির ক্ষতিসাধনও হচ্ছে। ফলে দেশের প্রথম ও একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন হিসেবে ব্র্যান্ডিং করা হলেও আদতে সেটি নামেই থেকে গেছে। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃপক্ষ বলছে, আইকনিক রেলস্টেশনের সব কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। রেলস্টেশন তৈরির পর এক বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের রক্ষণাবেক্ষণের সময়সীমা থাকে। ভবনের কোথাও সমস্যা দেখা দিলে তা ঠিক করা হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তারা রেলস্টেশনটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে।

দৈনিক ১০ জোড়া ট্রেন চলাচলের চাহিদাসম্পন্ন কক্সবাজারে এখন চলছে দুই জোড়া। মালবাহী ট্রেন চালু না হওয়ায় কক্সবাজারে উৎপাদিত লবণ, মাছ, পান–সুপারি এবং টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না। তাতে সরকারও মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এখন প্রশ্ন, সব ধরনের সুযোগ–সুবিধাসহ সত্যিকার অর্থে আইকনিক রেলস্টেশনটি চালু করা হবে কবে। আমরা আশা করব, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে রেলস্টেশনটি বুঝে নেওয়ার আগে প্রতিটি সুযোগ–সুবিধা যথাযথভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে কি না, তা যাচাই–বাছাই করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো দায়িত্ব অবহেলা গ্রহণযোগ্য হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ