ভারত থেকে ‘পুশ ইন’ ঠেকানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 3rd, June 2025 GMT
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারত থেকে বাস্তবিক অর্থে ‘পুশ ইন’ (ঠেলে পাঠানো) ঠেকানো সম্ভব নয়। দুই দেশের বিদ্যমান কনস্যুলার সংলাপের মাধ্যমে এ সমস্যাকে একটা প্রক্রিয়া অনুযায়ী সুরাহা করা যায় কি না, সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত থেকে পুশ ইন হচ্ছে। সেটা ফিজিক্যালি (সীমান্তে বাধা দিয়ে) ঠেকানো সম্ভব নয়। এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিঠি আদান–প্রদান হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, এটি যাতে পদ্ধতি অনুযায়ী হয়। তারা কিছু ক্ষেত্রে বলেছে, অনেক কেস (বিষয়) আটকে রয়েছে, সেগুলো ঠিকমতো বাংলাদেশ করছে না। যাচাই করে দেখেছি, খুব দীর্ঘদিনের তালিকা রয়েছে। পাশাপাশি এটাও দেখেছি যে ভারতের তালিকা অনুযায়ী যাচাই করে অনেককে ফেরত নেওয়া হয়েছে। কাজেই দুপক্ষের বক্তব্য থাকতে পারে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘কনস্যুলার সংলাপ (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা দূতাবাসের কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা) ব্যবহার করে বিষয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি কি না, আমরা সে চেষ্টা করছি। নিয়মিত পদ্ধতিতে যাতে হয়, তার জন্য বাংলাদেশ আরেকটি চিঠি দেবে ভারতকে। তারা যে তালিকা দিয়েছে, তা যাচাই করে যাঁদের বাংলাদেশি পেয়েছি, তাঁদের ফেরত নিয়েছি।’
প্রতিবাদপত্র নাকি কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা একটি বস্তুনিষ্ঠ চিঠি পাঠাব। যেটাতে পদ্ধতির কথা উল্লেখ করব।’
প্রসঙ্গত, গত মাসের শুরুতে ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ ইন শুরুর পর দেশটিকে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়ে তা বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন২৪ দিনে ১১৪৩ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ০১ জুন ২০২৫ভারতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানো চিঠি নিয়ে ভারত থেকে ফিরতি কিছু আসেনি। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে অবশ্যই দ্বিতীয় চিঠি দেওয়া হবে।
সীমান্তে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নমনীয় হয়ে গেছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করছি এবং এ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। অবশ্যই সীমান্ত হত্যা নিয়ে খুব শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করব। সীমান্ত হত্যাকে কখনোই মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে নেই।’
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পর ২ হাজার ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’০২ জুন ২০২৫ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে শাপে বর হয়েছে
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার তো মনে হয়, যেটা দেখতে পেয়েছে, সেটা হলো এতে (বাংলাদেশের জন্য ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল) শাপে বর হয়েছে। তাদের (ভারতের) ওপর নির্ভরশীলতা কমে গেছে। আমাদের কোনো রপ্তানি কিন্তু তাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না।’
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরাও তো প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের একটা সুবিধা বাতিল করেছি। আমরা তাদের থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করেছি। সেটা আমাদের প্রয়োজন ছিল বলেই করেছি। এখন তারা যেটা করেছে, সেটা তারা তাদের প্রয়োজনের জন্য করেছে কি না, আমি জানি না।’
সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ বা কমিয়ে দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যে সিদ্ধান্তগুলো আমাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়, তার অনেকখানির জন্য আমরা দায়ী। আমরা, আমাদের দেশের মানুষ, আমাদের ব্যবসায়ীরা দায়ী। বিশেষ করে যাঁরা শ্রমশক্তি রপ্তানি করেন।’ তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় তো বাংলাদেশের প্রতি কোনো বিরূপ মনোভাব নেই। আমাদের ঘর সামলাতে হবে এ ক্ষেত্রে।’
আরও পড়ুনআসামে সরকারি স্কুলের শিক্ষককে বাংলাদেশে পুশ ইন করল ভারত২৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট ত হ দ হ স ন বল ন অন য য় প শ ইন র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
হামফ্রে ফেলোশিপ–ডাড স্কলারশিপ–আইডিবির প্রশিক্ষণ, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই
আমেরিকা হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, জার্মান সরকারের ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ে আবেদন চলছে। তিনটির আবেদনের সুযোগ আছে আর দুদিন। আগামীকাল ৩১ জুলাই শেষ হবে হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের। আবেদনের পদ্ধতিসহ জেনে নিন এসব বৃত্তি ও ফেলোশিপের বিস্তারিত তথ্য।
১. হামফ্রে ফেলোশিপ: মাসিক ভাতাসহ ১০ মাস আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ
১০ মাসের হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতে পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন।
ফেলোশিপের সুযোগ-সুবিধা—নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ টিউশন ফি দেওয়া হবে;
প্রয়োজন হলে প্রাক্-একাডেমিক ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে;
জীবনযাত্রার ব্যয় ভাতা;
এককালীন সেটলিং ভাতা;
দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাজনিত ব্যয় ভাতা;
বই কেনার খরচ;
কম্পিউটার কেনার জন্য এককালীন ভাতা;
বিমান ভ্রমণ ভাতা (প্রোগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইভেন্টে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ;
ফেলোশিপের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাদার উন্নয়ন ভাতা যেমন ফিল্ড ট্রিপ, পেশাদার পরিদর্শন ও সম্মেলন।
আরও পড়ুনএসএসসি উত্তীর্ণদের শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মাসে আড়াই হাজার টাকা, মিলবে ২ বছর১৩ জুলাই ২০২৫আবেদনকারীর যোগ্যতা—আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, এমন কেউ আবেদন করতে পারবেন না
পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৫ সালের আগস্টের আগে) এবং তাঁদের শিক্ষা ও কাজসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোয় আগ্রহ থাকতে হবে
শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাঁদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন)।
২০২৬ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন।
২০২৬ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছরের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না।
ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোয়েফল স্কোর (ইন্টারনেটভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাঁদের টোয়েফল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাঁদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষে টোয়েফল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। (আমেরিকান সেন্টার কেবল নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোয়েফল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।)
আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি এ কথাও জানাতে হবে যে তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন, যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তাঁর নেই।
ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।
ফাইল ছবি প্রথম আলো