কালুরঘাটে ট্রেন দুর্ঘটনা: ‘ছেলেহারা এ রকম ঈদ যেন কারও না হয়’
Published: 7th, June 2025 GMT
‘কোরবানি দেওয়ার জন্য গরু কিনলাম। ঘরে ঈদের খুশি। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। ছেলেহারা এ রকম ঈদ যেন কারও না হয়। আমাদের এতিম করে কোথায় চলে গেলি রে বাপধন। এখন কীভাবে থাকব। তোর মা কীভাবে থাকবে। তুই ফিরে আয়।’
চট্টগ্রামের ভাষায় এভাবেই বিলাপ করছিলেন আবুল মনছুর। তাঁর ছেলে মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ওরফে তুষার (২৭) গত বৃহস্পতিবার রাতে কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশে নিজ হাতে ছেলের দাফন করেছেন মনছুর।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদণ্ডীর বাংলাপাড়া এলাকায় তাঁদের বাড়ি। পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ছিলেন তুষার।
গতকাল দুপুরে তুষারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সেমিপাকা ঘরে উপচে পড়ছে মানুষ। প্রতিবেশীরা আসছেন সান্ত্বনা দিতে। ঘরের দুয়ারে বসে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বাবা আবুল মনছুর (৫৫)। আত্মীয়স্বজন এলেই তাঁর কান্নার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল। বারবার ছেলের কবরের দিকে ছুটে যেতে চাইছিলেন তিনি। একই অবস্থা তুষারের মা রিজিয়া বেগমের (৫০)। ছেলের রেখে যাওয়া জামা ও জুতা বুকে জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ছিলেন তিনি।
তুষার তিন ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র ভাই। দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। বড় বোন রুমা আক্তার বলেন, ‘ঘরে শোক কাটছেই না। মাত্র পাঁচ দিন আগে জ্যাঠাতো বোন খালেদা বেগম হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাইকে হারালাম। ভাই তুষার আর খালেদার কবর পাশাপাশি।’
কবরের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন আবুল মনছুর। আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে বলেন, ‘এখানে বোনের পাশে আমার ছেলে শুয়ে আছে। তারা আর ফিরবে না।’
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মনছ র
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫