যুক্তরাষ্ট্রে ১২ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আজ সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। গত সপ্তাহে এই নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন সময় এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলো, যখন তাঁর অভিবাসনবিরোধী অভিযান ঘিরে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে।

যে ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো আফগানিস্তান, চাদ, ইরিত্রিয়া, মিয়ানমার, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। যুক্তরাষ্ট্রে ‘সন্ত্রাসীদের’ প্রবেশ ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এর আগে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেগুলোর বেশির ভাগই ছিল মুসলিম দেশ। নতুন করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া দেশের অনেকগুলোতেই যুদ্ধ ও বড় পরিসরে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আরও সাতটি দেশের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ট্রাম্প। সেগুলো হলো বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। তবে এসব দেশের নাগরিকদের জন্য কিছু ‘সাময়িক কাজের ভিসা’ দেওয়া হবে।

ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক সতর্ক করে বলেছেন, নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার যে ব্যাপক ও বিস্তৃত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের দিক দিয়ে উদ্বেগের একটি বিষয়।

আরও পড়ুনট্রাম্প ১২টি দেশের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নতুন করে কেন নিষেধাজ্ঞা দিলেন০৫ জুন ২০২৫

এদিকে ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ গতকাল আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এদিন রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁরা প্রধান একটি সড়ক অবরোধ করেন এবং কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের০৫ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ভ রমণ ন ষ ধ জ ঞ য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতে না যাওয়ার পরামর্শ

ভারতসহ কয়েকটি দেশে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এলো এমন নিদের্শনা। সংস্থাটির রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পক্ষ থেকে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। 

গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনার ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতেও বলা হয়েছে সেখানে।

নির্দেশনায় বলা হয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এলএফ. ৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত ও অন্যান্য সংক্রামক দেশ এবং বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং অন্যান্য সংক্রামক দেশে ভ্রমণকারী নাগরিকদের জন্য দেশের সব স্থল, নৌ, বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কে নজরদারি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় কিছু কার্যক্রম নিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক না হলেও দেশে এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্তের কথা বলছেন। এর নাম এক্সএফজি। এর পাশাপাশি এক্সএফসি ধরনটিও পাওয়া গেছে। দুটোই করোনার শক্তিশালী ধরন অমিক্রনের জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা হলো
সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২৩ সেকেন্ড)।
নাক-মুখ ঢাকায় জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
আক্রান্ত ব্যক্তি হতে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে
অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না
হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।

দেশে প্রবেশের পথের জন্য নির্দেশনা
দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ, বিমান বন্দরসমূহে আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্কসমূহে সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেল্যান্স জোরদার করুন।
দেশের পয়েন্টস অব এন্ট্রি সমূহে থার্মাল স্কান্যার, ডিজিটাল হেন্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করুন।
চিকিৎসা কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোশাক মজুত রাখুন (পিপিই)।
ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনা সমূহ প্রচার করুন।
জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।

সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।
প্রয়োজন হলে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন (০১৪০১-১৯৬২৯৩)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ