নড়াইলের কালিয়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এটি স্নাইপার রাইফেল নাকি এয়ারগান, সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে, এটি কি ধরনের অস্ত্র। গত রোববার রাতে পুরুলিয়া গ্রামের সোহান মোল্যা নামে এক তরুণের বিছানার নিচ থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।
নড়াইল সেনা ক্যাম্প স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করেছে বলে গত সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি সোহান রাইফেলটি অবৈধভাবে ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছিল। গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে নড়াইল ও কালিয়া সেনা ক্যাম্পর সদস্যরা আবুল কালামের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। 
এ সময় আবুল কালামের ছেলে সোহানের ঘরের বিছানার নিচে রাখা অবৈধ টেলিস্কোপ ও সাইলেন্সারযুক্ত ৪ দশমিক ৫ ক্যালিবারের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেল উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। এরপর সেটি কালিয়া থানার হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় সোহান ও তাঁর বাবা বাড়ি ছিলেন না। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এর ধরন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের মত এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরুলিয়া গ্রামের দু’জন বাসিন্দা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময় সোহান এ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিলেও কেউ ভয়ে মুখ খুলতেন না। তারা এটিকে শুটিং রাইফেল বা অত্যাধুনিক এয়ারগান বলে মন্তব্য করেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, আবুল কালাম ও তাঁর ছেলে ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে । এখন বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে ওঠবস করছেন। 
অস্ত্রটির ধরন বিষয়ে জানতে নড়াইল সেনা ক্যাম্পে ফোন করলে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা একটি অস্ত্র উদ্ধার করে থানায় জমা দিয়েছি। তারা এটির কী নাম ব্যবহার করেছে বা কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়েছে কিনা, সেটি থানায় ফোন করে জেনে নিন।’
কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এটি এয়ারগান না স্নাইপার রাইফেল, সেটি বিশেষজ্ঞের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ঘটনায় সোহান পলাতক রয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ