অভিযানে উদ্ধার অস্ত্রটি স্নাইপার নাকি এয়ারগান
Published: 10th, June 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এটি স্নাইপার রাইফেল নাকি এয়ারগান, সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে, এটি কি ধরনের অস্ত্র। গত রোববার রাতে পুরুলিয়া গ্রামের সোহান মোল্যা নামে এক তরুণের বিছানার নিচ থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।
নড়াইল সেনা ক্যাম্প স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করেছে বলে গত সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি সোহান রাইফেলটি অবৈধভাবে ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছিল। গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে নড়াইল ও কালিয়া সেনা ক্যাম্পর সদস্যরা আবুল কালামের বাড়িতে তল্লাশি চালায়।
এ সময় আবুল কালামের ছেলে সোহানের ঘরের বিছানার নিচে রাখা অবৈধ টেলিস্কোপ ও সাইলেন্সারযুক্ত ৪ দশমিক ৫ ক্যালিবারের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেল উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। এরপর সেটি কালিয়া থানার হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় সোহান ও তাঁর বাবা বাড়ি ছিলেন না। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এর ধরন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের মত এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরুলিয়া গ্রামের দু’জন বাসিন্দা জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময় সোহান এ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিলেও কেউ ভয়ে মুখ খুলতেন না। তারা এটিকে শুটিং রাইফেল বা অত্যাধুনিক এয়ারগান বলে মন্তব্য করেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, আবুল কালাম ও তাঁর ছেলে ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে । এখন বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে ওঠবস করছেন।
অস্ত্রটির ধরন বিষয়ে জানতে নড়াইল সেনা ক্যাম্পে ফোন করলে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা একটি অস্ত্র উদ্ধার করে থানায় জমা দিয়েছি। তারা এটির কী নাম ব্যবহার করেছে বা কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়েছে কিনা, সেটি থানায় ফোন করে জেনে নিন।’
কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এটি এয়ারগান না স্নাইপার রাইফেল, সেটি বিশেষজ্ঞের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ঘটনায় সোহান পলাতক রয়েছে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।