অস্ট্রিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের গ্রাজ শহরে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার এ হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও হামলাকারী নিজে রয়েছেন। গ্রাজ শহরের মেয়র এলকে কাহর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গ্রাজ শহরের পুলিশ গতকাল জানায়, হামলার ঘটনার পর অভিযান চালায় পুলিশ। স্কুলভবনে গুলির শব্দ শোনার পর সেখানে পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এ হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে অস্ট্রিয়ার বার্তা সংস্থা এপিএকে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্কুলে হামলাকারীর বয়স ২১ বছর। তিনি গ্রাজ এলাকার বাসিন্দা। গুলি চালানোর পর স্কুলের একটি বাথরুমে গিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্রগুলোর বৈধ মালিকানা রয়েছে তাঁর। কী কারণে ওই তরুণ হামলা চালিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গতকালের হামলার পর এক্সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস লেখেন, ‘প্রত্যেক শিশুকে স্কুলে নিরাপদ অনুভব করতে হবে এবং ভয় ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করার সুযোগ দিতে হবে। অন্ধকার এই মুহূর্তে হামলার ভুক্তভোগী, তাঁদের পরিবার এবং অস্ট্রিয়ার জনগণের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’

যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ইউরোপের স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা বিরল। তবে বিগত বছরগুলোয় ইউরোপের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা বেড়েছে। যদিও হামলাগুলোর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। ৯২ লাখ মানুষের দেশ অস্ট্রিয়ায়ও জনপরিসরে হামলার ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। বৈশ্বিক শান্তি সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ১০টি দেশের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রিয়া।

গত জানুয়ারিতে স্লোভাকিয়ার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে একটি স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করেন ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ক্রোয়েশিয়ার জাগরেব শহরের একটি স্কুলে সাত বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণ। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল র ঘটন র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ