অস্ট্রিয়ায় স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ১১ জন নিহত
Published: 11th, June 2025 GMT
অস্ট্রিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের গ্রাজ শহরে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার এ হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও হামলাকারী নিজে রয়েছেন। গ্রাজ শহরের মেয়র এলকে কাহর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গ্রাজ শহরের পুলিশ গতকাল জানায়, হামলার ঘটনার পর অভিযান চালায় পুলিশ। স্কুলভবনে গুলির শব্দ শোনার পর সেখানে পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এ হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে অস্ট্রিয়ার বার্তা সংস্থা এপিএকে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্কুলে হামলাকারীর বয়স ২১ বছর। তিনি গ্রাজ এলাকার বাসিন্দা। গুলি চালানোর পর স্কুলের একটি বাথরুমে গিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্রগুলোর বৈধ মালিকানা রয়েছে তাঁর। কী কারণে ওই তরুণ হামলা চালিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতকালের হামলার পর এক্সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস লেখেন, ‘প্রত্যেক শিশুকে স্কুলে নিরাপদ অনুভব করতে হবে এবং ভয় ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করার সুযোগ দিতে হবে। অন্ধকার এই মুহূর্তে হামলার ভুক্তভোগী, তাঁদের পরিবার এবং অস্ট্রিয়ার জনগণের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’
যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ইউরোপের স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা বিরল। তবে বিগত বছরগুলোয় ইউরোপের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা বেড়েছে। যদিও হামলাগুলোর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। ৯২ লাখ মানুষের দেশ অস্ট্রিয়ায়ও জনপরিসরে হামলার ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। বৈশ্বিক শান্তি সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ১০টি দেশের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রিয়া।
গত জানুয়ারিতে স্লোভাকিয়ার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে একটি স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করেন ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ক্রোয়েশিয়ার জাগরেব শহরের একটি স্কুলে সাত বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণ। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বেলাবতে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, যুবক নিহত
নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার বেলাব ইউনিয়নের মাটিয়ালপাড়া ও চরবেলাব গ্রামের মধ্যবর্তী সেতু এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল চরবেলাব গ্রামের মো. জীবন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে বেলাব হোসেন আলী সরকারি কলেজ মাঠে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে চরবেলাব গ্রামের মোটরসাইকেল আরোহী ও বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া গ্রামের অটোরিকাশচালকের মধ্যে সড়কে সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনায় দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আহত হন চারজন। এ ঘটনার জেরে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেলাব মাটিয়ালপাঁড়া ও চরবেলাব গ্রামের শত শত মানুষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ১১ পুলিশ সদস্যসহ দুই গ্রামের অন্তত ১৯ জন আহত হন। তাদের বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ নরসিংদী ও ভৈরবের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাইফুলের পরিবারের দাবি, পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে সাইফুলে মৃত্যু হয়েছে।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশের ওপরও
হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশও রাবার বুলেটে ছোড়ে। যিনি মারা গেছেন তিনি গ্রামবাসীর নাকি পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।