ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রাজশাহীর নন্দনগাছিতে তিন ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ
Published: 11th, June 2025 GMT
রাজশাহীর নন্দনগাছি স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে আজ বুধবার সকাল ছয়টায় রেললাইন অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এতে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে সকাল পৌনে ৯টায় কর্মসূচি প্রত্যাহতার করা হয়।
এদিকে এই অবরোধের কারণে সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চারটি ট্রেন আটকা পড়ে। অবরোধ প্রত্যাহারের পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রাজশাহী শহর থেকে নন্দনগাছির দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই স্টেশনটির বয়স ৯৬ বছর। বর্তমানে রাজশাহী থেকে ১৬টি ট্রেন এই স্টেশনের ওপর দিয়ে চলাচল করে। এর মধ্যে মাত্র দুটি লোকাল ট্রেন নন্দনগাছি স্টেশনে থামে। স্টেশনের কর্মচারীদের ১২টি পদের মধ্যে ১ জন পোটারম্যান ছাড়া আর কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারী নেই। স্টেশন বন্ধ থাকে। এই স্টেশন থেকে কোনো টিকিট বিক্রি হয় না।
আন্দোলনকারীরা জানান, নন্দনগাছি রেলস্টেশনে আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ও ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজের (যাত্রাবিরতি) দাবিতে গত ১ মে আন্দোলন শুরু হয়। সেদিন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদের নেতৃত্বে কয়েক হাজার এলাকাবাসী এই রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করেছিলেন। ১৫ মে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পাকশীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসে। সেখানে রেল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল, ১ জুন থেকে ট্রেনগুলোর স্টপেজ নন্দরগাছি স্টেশনে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ট্রেনগুলোর স্টপেজের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আজ সকাল ছয়টা থেকে স্থানীয় লোকজন স্টেশনের পাশে জড়ো করা পুরোনো লোহার স্লিপার রেললাইনের ওপর তুলে দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন। তাঁরা স্লোগান দেন, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি অধিকার, অধিকার’, ‘এবার হবে সংস্কার, নন্দনগাছি রেলস্টেশন’, ‘এক দফা এক দাবি, ট্রেন স্টপেজ দিতে হবে, দিতে হবে’ প্রভৃতি।
রেললাইন অবরোধের কারণে সকাল সাড়ে ছয়টায় খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি নন্দনগাছি স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। রাজশাহী রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মাসুদ আলম বলেন, সকাল থেকে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, ঢাকাগামী মধুমতী এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ও বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ট্রেন নন্দনগাছি স্টেশন পার হতে পারেনি। সকাল ছয়টা থেকে আন্দোলনকারীরা স্টেশনের দুই পাশে লাল কাপড় টাঙিয়ে দিয়ে রেললাইনের ওপর বসে অনবরত স্লোগান দিচ্ছেন।
সকালে আন্দোলনের সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, জনতার দাবিকে উপেক্ষা করে রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনের স্টপেজের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে আবার এ কর্মসূচি শুরু করেছেন।
অবরোধের খবর পেয়ে ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তিনি বলেন, নন্দনগাছি স্টেশনে সাধারণ মানুষ চারটা আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে আন্দোলন করছেন। তবে ঈদের ছুটির পর তাঁরা অফিশিয়ালি যোগাযোগ করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ (চাঁদ) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। সকাল পৌনে নয়টার দিকে তিনি বলেন, ‘১৬ জুন রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছে। তারা যদি কথা না রাখে, তাহলে ১৯ অথবা ২০ তারিখে আবার আমরা আন্দোলনে যাব। তারপর আজীবনের জন্য এই স্টেশনের ওপর দিয়ে আর কোনো ট্রেন চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’ এরপর আবু সাঈদ আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স টপ জ র ন অবর ধ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
আমি করতেও পারি, নাও পারি
ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি তা বলতে পারি না।’ পরে আবার তিনি বলেন, ‘আমি করতেও পারি, নাও করতে পারি।’ বুধবার হোয়াইট হাউজের বাইরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। খবর বিবিসির
ট্রাম্প বলেন, ইরানের আলোচকরা হোয়াইট হাউজে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে এটা কঠিন। আমি নিশ্চিত নই যে সংঘাত কতটা দীর্ঘ হবে, কারণ ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ধ্বংস হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘দুটি খুব সাধারণ শব্দ- নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ।’ ট্রাম্পের দাবি, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির উদ্দেশ্য খারাপ।
এদিকে বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেবে ইরান। দেশটি দৃঢ় থাকবে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শান্তির বিরুদ্ধেও।
তিনি আরও বলেন, এই জাতি চাপের মুখে কারও কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে খামেনি বলেন, যারা ইরান ও এর ইতিহাস জানে তারা জানে, ইরানিরা হুমকির ভাষার প্রতি ভালো সাড়া দেয় না। আর আমেরিকানদের জানা উচিত, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপ্রতিরোধ্য পরিণতি বয়ে আনবে।
ট্রাম্পকে সতর্ক করে তিনি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি হামলায় অংশ নেয়, তাহলে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হবে।