যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের ব্যানারে সংসদ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

এর আগে দিনের শুরুতে এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাউটার ভ্যান ভার্স অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর হোটেলে সাক্ষাৎ করেন।

মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলিও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৭:০৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সে চারদিনের যুক্তরাজ্য সফরে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান। সূত্র-বাসস

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী অঞ্চলে কেজি দরে কেউ আম কিনছেন না, চলছে পুরোনো নিয়মে

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গতকাল বুধবার দিনভর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, রাজশাহী অঞ্চলে আম বেচাকেনা হবে কেজি দরে। সভায় রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা সম্মত হয়েছিলেন, আমের মণ আর ৪৮ বা ৫২ কেজিতে ধরা হবে না। কেজিতে দেড় টাকা কমিশনে আম বিক্রি হবে। তবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মোকাম ঘুরে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চিত্র দেখা যায়নি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর বড় আমের মোকাম পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা আগের নিয়মেই (ঢলন প্রথায়) বেচাকেনা করছেন। বাজারের কোথাও ৪০ কেজি মণ দরে বা কেজি দরে আম বিক্রির দৃশ্য দেখা যায়নি। স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়ী মো. আবুল হোসেন (৪২) বলেন, ৪০ মণ আম বিক্রি করেছেন। ৪৫ কেজিতে মণ দিতে হয়েছে। কেজি দরে আম বিক্রির আইন কেউ মানছেন না।

বানেশ্বরের চাষি ও ব্যবসায়ী আজমল হক (৬২) বলেন, আগের ‘ঢলন প্রথাতেই’ আম বেচাকেনা হচ্ছে। ৪৮ বা ৫২ কেজি—যে যেমন পারছেন, তেমন নিচ্ছেন। কেউ কেজি দরে আম কিনছেন না। বানেশ্বরের নাসিম ফল ভান্ডারে ঢুকে আড়তদারকে পাওয়া গেল না। কয়েকজন কর্মচারী ছিলেন। তাঁরা কেজি দরে আম বেচাকেনার প্রসঙ্গ শুনেই বললেন, ‘আমরা ওসব মানি না।’

বানেশ্বর বণিক সমিতির সভাপতি ওসমান আলী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সভায় ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চাষি ও ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ‘ঢলন প্রথা’ চলবে না। কেজি দরে আম বেচাকেনা করতে হবে। এ জন্য আড়তদারেরা কেজিতে দেড় টাকা কমিশন পাবেন। রাতে বানেশ্বর বাজারে সভা করে সিদ্ধান্ত সবাইকে জানিয়ে দেন। রেজল্যুশনে ব্যবসায়ীদের স্বাক্ষরও নেওয়া হয়েছে। সকালে মাইকিং করা হয়। এরপরও না মানা দুঃখজনক। তিনি বলেন, এখন তাঁদের আর কী করার আছে। চাপাচাপি করলে তাঁরা আম কেনা বন্ধ করে দেবেন। চাষিদের আম পচে যাবে।

দেশের বৃহত্তম আমের বাজার হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। আজ বেশির ভাগ বেচাকেনা হয়েছে আগের নিয়মেই। হঠাৎ নতুন নিয়মে অভ্যস্ত হতে পারেননি ক্রেতা–বিক্রেতারা। আড়তদারেরা বলছেন, তাঁদের কিছুই করার নেই।

কানসাটের আমচাষি রায়হান আলী (৪৯) বলেন, ‘কেজি দরে আম বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছি। দরদাম ঠিক করে আড়তে নেওয়ার পর ব্যাপারী বলেছেন, “ছোটগুলো নেব না। ছোটগুলোর দাম দেবেন অর্ধেক। বেচলে বেচ, না বেচলে নিয়ে যাও।” ছোট আমগুলো জুস কোম্পানির কাছে নিয়ে গেলে অর্ধেকও দাম পাব না। আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেলে হয়রানি ও সময় নষ্ট হবে। বাধ্য হয়ে ক্ষতি হলেও কম দামে বিক্রি করেছি। আবার আড়তদারকে কমিশনও দিয়েছি। নতুন নিয়ম করে কী লাভ হলো?’

আরও পড়ুনরাজশাহীতে আম পাড়া শুরু, ৪৮ কেজিতে মণ১৬ মে ২০২৫

আড়তে থাকা পাবনার সাঁথিয়া থেকে আসা ব্যাপারী জোবায়ের হোসেন বলেন, ছোট বা দাগওয়ালা আম কেন তিনি বড় আমের সঙ্গে মিলিয়ে কিনবেন? আগে যে নিয়ম ছিল, সেটাই বরং ভালো ছিল। এতে বিক্রেতারা কেউই নতুন নিয়মে লাভ মনে করছেন না। লাভ হলে আড়তদারের হতে পারে।

আড়তদার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আম বিক্রি হয়েছে সব আগের নিয়মে। আমাদের করার কিছু নেই।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ী শহিদ মিয়া গতকালের সভায় ছিলেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘একটা হযবরল অবস্থা হয়ে গেছে। কেউ মানছে না। যে যার মতো বেচাকেনা করছে।’

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট

সম্পর্কিত নিবন্ধ