ইতিহাস যা-ই বলুক, একটি জনগোষ্ঠীকে তাদের ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে তাদেরই ভূখণ্ড থেকে তুলে নিয়ে অন্য দেশে চালান করে দিচ্ছে আজকের ভারত।

অন্যদিকে যে বাংলাদেশ প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে উচ্ছেদ হওয়া দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলমান জনগোষ্ঠীকেও আশ্রয় দিয়েছে, তার ভূখণ্ডেই ঠেলে (পুশ ইন) দেওয়া হচ্ছে আরেক সীমান্ত-সংলগ্ন দেশের নাগরিক মুসলমান নর-নারীকে।

এভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মুসলমানদের পণ বানানোর পাশাপাশি নিজ দেশের ইস্যুকে আন্তসীমান্ত দ্বন্দ্বে পরিণত করা হচ্ছে। মুসলমান ভোটার-সমৃদ্ধ পশ্চিম বাংলা ও আসামে নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের কেন্দ্রীয় হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের এমন পদক্ষেপ সে দেশের ভেতরকার গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও বিবেকবান মানুষের কাছেও কি প্রশংসিত হচ্ছে?

এ পর্বে কিছু মুসলমান ভারতীয়র গলা ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর এ কাজটি দিল্লি করছে জুলাই ২০২৪ বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে। ঢাকার প্রতি বৈরী নীতির অংশ হিসেবেই যে এই উদ্যোগ, সেটা বাংলাদেশের মানুষের না বোঝার কিছু নেই।

প্রথমে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ এবং একপর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য ভারত দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করা হলো।

গণতন্ত্র হত্যাকারী শাসক হাসিনার বিরুদ্ধে একটি সফল ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি তৎপরতা আখ্যা দিয়ে ভারতীয় ‘গদি মিডিয়া’ ব্যাপক গুজব ও কুৎসা রটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল। এর আগে বাংলাদেশের গণমানুষের বিক্ষোভের মুখে পিছু হটা হাসিনাকে দিল্লিতেই আশ্রয় দেওয়া হলো বাংলাদেশিদের আবেগের প্রতি স্পর্শকাতরতা না দেখিয়েই।

এ-জাতীয় পরিস্থিতিতে যৌথ নদীর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা, চোরাচালানের মতো দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো কি তাহলে বাংলাদেশের দৃষ্টির আড়ালেই রাখা যাবে?

দিল্লিওয়ালাদের এহেন মনোভাব এবং কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য ভারত ও বাংলাদেশের বাইরে পররাষ্ট্রনীতির পণ্ডিত, এমনকি কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন বৈশ্বিক নাগরিকেরা বোঝেন না, এমন তো নয়!

আরও পড়ুনভারত থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ কেন গ্রহণযোগ্য নয়১৪ মে ২০২৫

ভারত এখন বলতে চায় ‘পুশ ইন’ করানো ব্যক্তিরা তার দেশে অনুপ্রবেশকারী এবং অনেকে অনেক দিন ভারতে বসবাস করলেও তারা সেখানকার বৈধ নাগরিক নয়।
নিজের নাগরিকদের রাষ্ট্রহীন করার বিষয়ে বিদেশি গণমাধ্যম, যেমন বিবিসি ভিকটিমের নাম ধরে রিপোর্ট করেছে, নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের দিকে ‘পুশ ইন’ করা মুসলমানেরা ভারতের নাগরিক।

তাদের কেউ যদি সত্যি বেড়াতে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে থাকে, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে নিয়ম অনুযায়ী সসম্মানে তাদের ফেরত পাঠানো যেত। তাই বলে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ তার নাগরিক মানবে, সে রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই ঢাকার। নরেন্দ্র মোদির বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প কি ‘অবৈধ’ ভারতীয়দের আমেরিকায় স্বাগত জানাচ্ছেন?

নিজের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির দাবার চাল দিতে ব্যবহার করে রাষ্ট্র এবং সভ্যতা হিসেবে ভারত নিজের ভয়াবহ দৈন্য প্রকাশ করছে এবং এটা তার নেতৃবৃন্দ ও নীতি পরিচালনাকারীরা করছেন সচেতনভাবেই।

বাংলাদেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায় ফেলে কতটা ঠিক আচরণ করছে, সেই আত্মসমালোচনা ‘দূর কি বাত’, দিল্লি সেই আত্মোপলব্ধির ধারকাছে আছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং বাংলাদেশ নিয়ে তার পদক্ষেপ, যেমন প্রফেসর ইউনূস সরকারের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পারতপক্ষে যোগাযোগ না রাখার দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রকাশ পাচ্ছে ক্রোধ, যে ক্রোধের উৎস ঢাকায় তার অনুগত শাসকের পতন।

ভারত বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে ক্রুদ্ধ হবে তার যথাযথ কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না, এর উল্টোটা ছাড়া। দিল্লির গোপন ও প্রকাশ্য মদদে হাসিনা এ দেশের মানুষকে দেড় যুগ গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকারবঞ্চিত রেখেছে, এক ফ্যাসিবাদী শাসককে মহান প্রমাণ করতে সচেষ্ট থেকেছে।

ভুলে গেলে চলে না ২০২৪-এর ডামি নির্বাচনের পর পরই সংক্ষুব্ধ বাংলাদেশিরা দেশে-বিদেশে ভারতীয় পণ্য বর্জন শুরু করেছিল, হাসিনা খেদাও আন্দোলনের আগেই। সে অবস্থায় বাংলাদেশের জনগণের ওপর নতুন দিল্লির রাগ-ক্ষোভ পরাজিত পক্ষের ক্রোধের সঙ্গে তুলনীয়। যদিও দিল্লির ক্রোধ বেশি থাকার কথা সীমান্ত সংঘাতে জড়ানো পারমাণবিক শক্তি পাকিস্তান এবং অধিক শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর।

বাংলাদেশের দিকে তার মুসলমান নাগরিকদের সংকীর্ণ কারণে ঠেলে পাঠিয়ে ভারত বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে শুধু সংখ্যালঘুর প্রতি জুলুমই প্রমাণ করছে না, যাকে এত দিন ধরে বলত ১৯৪৭-এর দেশভাগ, সেই মুসলমান জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি পাকিস্তান এবং এখনকার বাংলাদেশ গঠনের যথার্থতাকেই নিশ্চিত করে।

শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রতি নমনীয়তা আর পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন প্রতিবেশীর সামনে এসে অগ্নিমূর্তি ধারণ করাটা চাণক্য কৌটিল্যের ‘মাৎস্যন্যায়’ নীতিরই আধুনিক রূপ, যে নীতিতে বড় মাছ ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে।

দিল্লির শাসকেরা ওই পুরোনো নীতিতেই বুঁদ হয়ে আছেন, যখন বাংলাদেশের মানুষের প্রতি শান্তি ও সৌহার্দ্যের হাত বাড়ালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অচলাবস্থার বরফ গলা শুরু হতে পারত।

জাপান, জার্মানি এবং দক্ষিণ আফ্রিকা একসময় তাদের পূর্বের শাসকদের অন্যায় কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের কাছে; তাতে তাদের ক্ষতি হয়নি।

বাংলাদেশে বিগত দেড় দশকে হাসিনার কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো কোনো নৈতিক যুক্তি নেই দিল্লির। অস্বীকার করা যাবে না, গুমের বাংলাদেশি ভিকটিম আবিষ্কৃত হয়েছে ভারতে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর রিপোর্টে উঠে এসেছে হাসিনা শাসনকালের গুম, খুন, অত্যাচারের কাহিনি। সারা বিশ্ব দেখেছে কেমন হয়েছে তখনকার বাংলাদেশের তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচন।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বইয়ে এবং ২০১৪-এর নির্বাচনের আগে পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংয়ের ঢাকা সফরকালে হাসিনার অনুকূলে বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচনে দিল্লির নগ্ন হস্তক্ষেপ এখানকার রাজনৈতিক শক্তি ও সচেতন মানুষকে ভীষণভাবে আহত আর অপমানিত করে।

সেই অত্যাচারী হাসিনা রাজত্বের যখন অবসান হলো, সভ্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিক্রিয়া ছিল এক রকম, ভারতের ভিন্ন। অতঃপর ইউনূস সরকারের প্রতি দিল্লি ও ভারতীয় মিডিয়ার আচরণ হয়ে পড়ে অনেকটাই খড়্গহস্ত অথচ বাকি পৃথিবী প্রফেসর ইউনূসের প্রতি প্রবলভাবে শ্রদ্ধাশীল।

আবার হাসিনা আমলে, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের মধুচন্দ্রিমার কালেও, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সীমান্তে হোক বা জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে হোক, বাংলাদেশকে সমর্থন করেনি ভারত।

তাহলে কেউ তো ধরে নিতেই পারে ভারত বাংলাদেশকে প্রতিবেশী হিসেবে বন্ধু রাষ্ট্র জ্ঞান করে না, যদি না সে ‘করদ রাজ্য’ হয়। এবং কৌটিল্যেরই ফর্মুলায়, যদি ‘আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ হয়, ভারতের ‘জানি দোস্ত’ ইসরায়েলের শত্রু ইরানের স্ট্যাটাস কী দাঁড়ায় বা ভারত বন্ধু রাশিয়ার শত্রু আমেরিকার? অথবা চিরশত্রু পাকিস্তানের বন্ধু তুরস্ক বা চীনের বন্ধু যখন বাংলাদেশ?

ভারতের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনায় ‘মানব পাচারের’ মতো কূটচালের সাফল্য ও নেতিবাচক প্রভাব দুই-ই ভালো করে জানেন সে দেশের কূটনীতিক ও কৌশলগত বিশেষজ্ঞরা। যেমন কিঞ্চিৎ জানেন অন্য বন্ধুপ্রতিম দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও, যাদের কাছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন তা অজানা নয়।

বাংলাদেশের দিকে তার মুসলমান নাগরিকদের সংকীর্ণ কারণে ঠেলে পাঠিয়ে ভারত বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে শুধু সংখ্যালঘুর প্রতি জুলুমই প্রমাণ করছে না, যাকে এত দিন ধরে বলত ১৯৪৭-এর দেশভাগ, সেই মুসলমান জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি পাকিস্তান এবং এখনকার বাংলাদেশ গঠনের যথার্থতাকেই নিশ্চিত করে।

যে মুহূর্তে বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, সংস্কার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন, হত্যাকাণ্ড, গুম, জেল, জুলুম, দুর্নীতি, অর্থ পাচারসহ বড় বড় অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে, এবং দেশকে বিশ্ব সমাজে একটি মর্যাদাশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট, তখন ভারত গঠনমূলক যোগাযোগ ও সংলাপ থেকে দূরে সরে আছে।

হাসিনা আমলে সই করা কিছু অসম এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী গোপন যুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে জনমতের চাপ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও ঢাকা এখন পর্যন্ত চুক্তিগুলো ঢেকেই রেখেছে, সম্ভবত সম্পর্কের অবনতি ঠেকাতে।

কূটনীতি পারস্পরিক সৌজন্যের দাবি রাখে, যা বোধ হয় শুধুই গোপন ব্যাপার বা পেঁচিয়ে অর্ধেক কথা বলার বিষয় নয়; আগামী দিনে দিল্লি ঢাকার সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক গড়তে ও রাখতে চায়, তার ধারণা বাংলাদেশের জনগণকে সরাসরি দিয়ে দিলেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন যুগ শুরু হতে পারে।

খাজা মাঈন উদ্দিন সাংবাদিক

*মতামত লেখকের নিজস্ব

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ র জন জনগ ষ ঠ ম সলম ন পরর ষ ট সরক র র প শ ইন র শত র প রক শ র বন ধ র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিন

রোগীরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান মূলত চিকিৎসকের ভরসায়। এখন হাসপাতালে যদি সেই চিকিৎসকই না থাকেন, তাহলে সেই হাসপাতালের গুরুত্বই–বা কোথায়? পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছাড়া উপজেলা পর্যায়ের অনেক সরকারি হাসপাতাল চলছে। শুধু তা–ই নয়, বছরের পর বছর এই সংকট বিরাজ করছে অনেক জায়গায়। যেমনটি দেখা যাচ্ছে লক্ষ্মীপুর জেলায়। সেখানকার ১৪৬টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ৬০টিই শূন্য, যা মোট পদের প্রায় ৪১ শতাংশ। বিষয়টি হতাশাজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লক্ষ্মীপুর ১০০ শয্যার সদর হাসপাতালে ২৩টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ৮টিই খালি। হাসপাতালটিতে নেই নাক, কান ও গলার (ইএনটি) চিকিৎসক। একইভাবে খালি পড়ে রয়েছে সার্জারি, গাইনি, মেডিসিন আর চক্ষুরোগের চিকিৎসকের পদও।

ফলে প্রতিদিন ছয় থেকে সাত শ রোগী আসা সত্ত্বেও তাঁদের প্রয়োজনীয় সেবা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে, এমনকি অনেককে হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এটি কেবল স্বাস্থ্যসেবার মানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং রোগীদের মৌলিক অধিকারকেও লঙ্ঘন করছে। উপজেলা পর্যায়ের রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ১৭টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও একই দশা। হায়দারগঞ্জ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো অনেক স্থানে তো নিয়মিত চিকিৎসকই নেই, যার কারণে দরিদ্র রোগীরা ওষুধের দোকানের কর্মচারীদের পরামর্শ অনুসারে তাঁদের কাছ থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। এটি একটি এলাকার স্বাস্থ্যসেবার জন্য খুবই উদ্বেগজনক।

দীর্ঘ পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে এই পদগুলো শূন্য থাকা সত্ত্বেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও সমস্যার সমাধান অধরাই থেকে গেছে। সিভিল সার্জন নিজেও স্বীকার করেছেন যে সারা দেশেই চিকিৎসকের সংকট রয়েছে; কিন্তু এই অজুহাতে লক্ষ্মীপুরের জনগণের দুর্ভোগকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ, এটি এক–দুই মাস বা দু–এক বছরের সংকট নয়, আরও বেশি সময় ধরে এ পরিস্থিতি চলমান আছে।

সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। লক্ষ্মীপুরসহ যেসব জেলায় দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই, সেখানকার শূন্য পদগুলো কীভাবে পূরণ করা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। ঢাকা ও বিভাগীয় শহরগুলো থেকে চিকিৎসকদের জেলা–উপজেলায় পাঠানোর বিষয়ে তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকদের যেতে উৎসাহিত করতে সুযোগ–সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংকটগুলো নিরসন করাও প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ