ঝুট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে বেড়ানো এনামুল শিকদার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ। তাদের সশস্ত্র মহড়া দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় একদল পুলিশ। পরে 
এনামুল শিকদার ও তাঁর সহযোগী সুমন মিয়াকে আটক করে পুলিশ। 
গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার ফকিরা গ্রুপের সিএ নিটওয়্যার নামে একটি কারখানার সামনে এই ঘটনা ঘটে। জয়দেবপুর থানার ওসি তৌহিদ আহমেদ জানান, তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।  
স্থানীয়রা জানান, পুলিশের হাতে আটক এনামুল শিকদার নিজেকে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্রদল নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি ভবানীপুর এলাকার আব্দুল বাতেন শিকদারের ছেলে। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই কারখানায় কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিয়ে ঝুটের ব্যবসা করেন জাহাঙ্গীর শিকদার ও বদরে আলম বাদল। তাদের কাছ থেকে সাব-কন্ট্রাক্টে ঝুট বের করে 
নেন একই এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান। 
মাহমুদুল হাসান জানান, গত সোমবার রাতে এনামুল শিকদার টেলিফোন করে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লাহর নাম বলে তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ৫ লাখ টাকা আতাউর মোল্লাহকে দিতে হবে বলে মাহমুদকে জানান এনামুল। না দিলে আর ব্যবসা করতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। পরে মঙ্গলবার সকালে এনামুল শিকদার লাঠি, দাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিয়ে কারখানার সামনে আসে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ৩০-৪০ জন। এক পর্যায়ে তাঁকে রাস্তায় পেয়ে আক্রমণ করে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি রক্ষা পেলেও তাঁর স্বজন 
শামসুল আলম ও সাখাওয়াতের ওপর হামলা হয়। আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মহড়ার একাধিক ভিডিও ফেসবুকে 
ভাইরাল হয়েছে।
এনামুল শিকদারের ছাত্রদল পরিচয়ে ঝুট ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি ও সশস্ত্র মহড়া দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লাহর সঙ্গে। তার ভাষ্য, অভিযুক্ত এনামুল শিকদারের সঙ্গে তাঁর কোনো পরিচয় বা সম্পর্ক নেই। এনামুল দলেরও কেউ না। তাঁকে আটক করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছেন তিনি। এ ঘটনায় মাহমুদুল হাসানের চাচাতো ভাই ফারহান হোসেন প্রধান বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেছেন। 
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদ জানান, এনামুল ও সুমন নামে দু’জনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ হেফাজতে থাকার কারণে এনামুল শিকদারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সশস ত র দ র ব ত ত ছ ত রদল ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

খুলনায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মনোয়ার হোসেন টগর নামে এক যুবক এবং শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে আল-আমিন সিকদার নামে এক ভ্যানচালক খুন হন। 

দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নন্দনপ্রতাপ গ্রামে আল-আমিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল-আমিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।

দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “আল-আমিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর আসাদুল পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।”

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

নগরীতে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরদিকে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে খুন হন মনোয়ার হোসেন টগর (২৫) নামে এক যুবক। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে। 

স্থানীয়রা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক টগরের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হত্যাকারীরা টগরের পূর্ব পরিচিত।  তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।” 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ