সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পুলিশের এক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় টানা তৃতীয়বারের মতো কোনো সাক্ষী না আসায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। আদালত দুটি মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ২৪ জুন ধার্য করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে মামলা দুটির পৃথক সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ছিল। আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হলেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো.

আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় একজন পুলিশ সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় কোনো সাক্ষী না আসায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

আদালত সূত্র জানায়, মামলার জামিনে থাকা আসামিদের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ ও কারাগারে থাকা আসামিরা সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অসুস্থ থাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সময় প্রার্থনা করেছেন।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত এবং অন্তত ৭০ জন আহত হন।

ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। ওই অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলা পুনঃতদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত কিবরিয়ার পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছ, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ জন জামিনে আছেন। অন্য অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজন পলাতক এবং মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ ওরফে নিমু, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবু জান্দালসহ অন্যরা কারাগারে আছেন। আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৭১ জন সাক্ষী। এর মধ্যে মোট ৭১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এদিকে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড বিস্ফোরণে যুবলীগের এক কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত ও ২৯ জন আহত হন। হামলায় অল্পের জন্য বেঁচে যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১২৩ জন সাক্ষী আছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য় স ক ষ য গ রহণ ত হত য চ ষ ট জন স ক ষ ক বর য়

এছাড়াও পড়ুন:

বাবা-মেয়ের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাবা ও মেয়ের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল  ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে সিলেটের শাহপরাণ থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুলাউড়ার সেলিম আহমদ ওরফে অনিক (৩৭) ও সিলেটের শাহপরাণ এলাকার সাকিব আহমদ (২৫)।

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

হত্যাচেষ্টা মামলায় রসিকের সাবেক কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

পুলিশ জানায়, বড়লেখার শিমুলিয়া এলাকার আব্দুল আহাদ গত ৩০ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পূবালী ব্যাংকের বড়লেখা শাখা থেকে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেন। তার মেয়ে সুহাদা আক্তারের ব্যাগে নগদ ১৬ হাজার টাকা ছিল। টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে শিমুলিয়া এলাকায় চারজন সন্ত্রাসী দুইটি মোটরসাইকেলে এসে তাদের পথরোধ করে। 

তারা ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আব্দুল আহাদের মেয়ের ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাইকৃত ব্যাগে নগদ ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, দুই ভরি রুপার চেইন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল। এ ঘটনায় বড়লেখা থানায় বাদী আব্দুল আহাদ অভিযোগ দেন। এরপর মামলা রুজু হয় (মামলা নম্বর-১৭, ধারা ৩৪১/৩৯২ দণ্ডবিধি)। 

তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির সহায়তায় সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করা হয়। ১ আগস্ট রাতে সিলেট শহরের শাহপরাণ থানাধীন কাজিরবাজার এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা, ভিকটিমের মোবাইল, ধারালো একটি দা, একটি মোটরসাইকেল ও কালো হেলমেট, টি-শার্ট ও গেঞ্জি জব্দ করা হয়।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে  জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মামলার বাদীও তাদের শনাক্ত করেছেন। তারা জবানবন্দিতে পলাতক আরো কয়েকজন সহযোগীর নাম প্রকাশ করেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  •  সোনারগাঁয়ে হাতপাখার প্রার্থী ফারুক মুন্সিকে সংবর্ধনা
  • বাবা-মেয়ের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২
  • দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
  • ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না: নজরুল ইসলাম খান