কিবরিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন পুলিশ সদস্য, সুরঞ্জিত হত্যাচেষ্টা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল
Published: 19th, June 2025 GMT
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পুলিশের এক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় টানা তৃতীয়বারের মতো কোনো সাক্ষী না আসায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। আদালত দুটি মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ২৪ জুন ধার্য করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে মামলা দুটির পৃথক সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ছিল। আদালতে কিবরিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হলেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো.
আদালত সূত্র জানায়, মামলার জামিনে থাকা আসামিদের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ ও কারাগারে থাকা আসামিরা সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অসুস্থ থাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সময় প্রার্থনা করেছেন।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত এবং অন্তত ৭০ জন আহত হন।
ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। ওই অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলা পুনঃতদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত কিবরিয়ার পরিবার।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছ, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ জন জামিনে আছেন। অন্য অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজন পলাতক এবং মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ ওরফে নিমু, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবু জান্দালসহ অন্যরা কারাগারে আছেন। আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৭১ জন সাক্ষী। এর মধ্যে মোট ৭১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড বিস্ফোরণে যুবলীগের এক কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত ও ২৯ জন আহত হন। হামলায় অল্পের জন্য বেঁচে যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১২৩ জন সাক্ষী আছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য় স ক ষ য গ রহণ ত হত য চ ষ ট জন স ক ষ ক বর য়
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে অটোরিকশা ও লেগুনার সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত
গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ি এলাকায় লেগুনা ও অটোরিকশা সংঘর্ষে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল মালেক মৃধা (৮০) শরীয়তপুরের গোসাইহাট থানার কোদালপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর আমবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন আব্দুল মালেক মৃধা। সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তারা। ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের শিববাড়ি এলাকায় পৌঁছালে একটি লেগুনার সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে আব্দুল মালেক মৃধাসহ ৫-৬ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আব্দুল মালেক মৃধাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যরা চিকিৎসাধীন আছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কায়সার হাসান ফারুক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর লেগুনাসহ চালককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক