দীর্ঘ ২৩ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন আব্দুল মাজেদ (৫০)। তবে ফিরে যেতে পারেননি আগের জীবনে। এরই মধ্যে সংসার ভেঙেছে, মাকে হারিয়েছেন, জমি নেই, কাজ নেই। এ অবস্থায় অসহায় মাজেদের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। তাকে সাবলম্বী করতে উপহার হিসেবে দিয়েছে একটি গরু।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মাজেদের হাতে একটি গরু তুলে দেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী।

আব্দুল মাজেদ পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের মাধইপাড়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা এক মামলায় ২০০২ সালে সাজা হয় তার। আদালতের রায়ে ৩০ বছরের সাজা হলেও কারাগারে ভালো ব্যবহারের কারণে ২৩ বছর পর চলতি বছরের ২৬ মার্চ মুক্তি পান।

এদিকে, দীর্ঘদিনের কারাবাসে বদলে গেছে তার জীবন। স্ত্রী সালেহা বেগম অনেক আগেই সংসার ছেড়ে চলে গেছেন। বৃদ্ধা মা ফুলবানু বেগমও মারা গেছেন মাত্র ১৬ দিন আগে। বাড়িতে জমিজমাও নেই। জীবনের শেষ আশ্রয়টুকুও হারিয়ে একা হয়ে পড়েন মাজেদ। জীবিকা নির্বাহে চা বাগানে শ্রমিকের কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানেও টানাপোড়েন। এমন দুঃসময়ে মাজেদের অসহায় অবস্থার কথা জানতে পারেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন তিনি।

মাজেদ বলেন, ‘‘আমি মিথ্যা মামলায় ২৩ বছর কারাগারে ছিলাম। এ বছর মুক্তি পেয়েছি। আমার পরিবারে এখন কেউ নেই। মা ছিলেন, সেও মারা গেছেন। আমি চা বাগানে কাজ করি। জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে একটি গরু দিয়েছেন। এতে আমার অনেক উপকার হবে।’’  

জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ওই ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন। সম্পদ বলতে তার কিছুই নেই। তাকে যেন আবার সমাজে মাথা তুলে বাঁচতে সাহায্য করা যায়, সেই ভাবনা থেকেই একটি গরু কিনে দিয়েছি। আশা করি, তিনি নিজেকে ধীরে ধীরে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে পারবেন।’’

ঢাকা/নাঈম/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২৩ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধের ভিডিও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, করণীয় কী?

‘মানুষ যখন অনিচ্ছাকৃত পরিবর্তন অনুভব করে, তখন মনে হয় সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।’—কথাগুলো বলেছেন আমেরিকান ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং ট্রমা বিশেষজ্ঞ লরা এস. ব্রাউন।  বর্তমানে মিডিয়ার কল্যাণে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধের ভয়াবহতার ছবি, ফুটেজ অহরহ আমাদের সামনে আসছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই যুদ্ধবিদ্ধত গাজা উপত্যকার প্রকৃত অবস্থাও আমরা মিডিয়ার কল্যাণে দেখছি, জানছি। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখে দেখে আপনার মনে হতে পারে মানুষগুলো বুঝি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। মনে হতে পারে, স্বাধীনতা যেকোনো সময় বিপদগ্রস্ত হতে পারে। এসব ভাবনা আপনাকে ভীত করে তুলতে পারে। যুদ্ধের ভয়াবহতার প্রভাব আপনার মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করতে পারে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় জেনে নিন।

মন নিয়ন্ত্রণ করুন: পৃথিবীতে এমন অনেক কিছুই ঘটছে যেগুলোই চাইলেই আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন না। কিন্তু নিজের মনের যত্ন নেওয়া আপনার দায়িত্ব। মানবিক বিপর্যয় ঘটার ঘটনাগুলো যখন আপনাকে অস্থির করে তুলছে তখন আপনি মানবিক সেবার জন্য ছোট ছোট উপায় খুঁজে নিতে পারেন। আপনার চারপাশের অভাবগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা দিতে পারেন। আত্ম নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে নিয়মিত হাঁটতে পারেন। সময় মতো ঘুমাতে পারেন। দিনের একটি ভাগ প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানোর উপায় খুঁজে নিতে পারেন। প্রিয়জন দূরে থাকলে ট্রেক্সট, ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।  এই সময় পছন্দের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। প্রিয় গান শুনতে পারেন। প্রার্থনা করতে পারেন। তাহলে প্রাণবন্ত থাকতে পারবেন, শান্ত থাকার উপায়ও খুঁজে পেয়ে যেতে পারেন। 

মিডিয়া এক্সপোজার সীমিত করুন: মানুষ যত বেশি ট্র্যাজেডি সম্পর্কে জানে তত বেশি মানসিক চাপ এবং মোকাবিলা করতে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, হামলার সংবাদ মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শারীরিক অনেক সমস্যা তৈরি হয় এই প্রভাবে। আপনি কতক্ষণ নিউজ পড়বেন, কোন কোন মিডিয়ার নিউজ পড়বেন বা দেখবেন তা ঠিক করুন। হামলার মতো ঘটনাগুলোর ভিডিও ফুটেজ দেখার চেয়ে হামলা সম্পর্কে পড়া কম কষ্টকর মনে হতে পারে।  

আরো পড়ুন:

জয়েন্টের ব্যথা হতে পারে কঠিন রোগের লক্ষণ

সূর্যের আলো সরাসরি শরীরে পড়লে শরীরে যা ঘটে

বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে খবর খুঁজুন: সামাজিক মিডিয়ার খবর অবিশ্বাস্য, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা চাঞ্চল্যকর হতে পারে, ইংল্যান্ডের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের একজন এমেরিটাস অধ্যাপক বলেছেন, ‘‘ ব্রেকিং নিউজে দেখা ঘটনাগুলো মনের ওপর তীব্র চাপ ‍সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার তৈরি হতে পারে।’’ 

সূত্র: আমেরিকান সাইক্লোজি অ্যাসোসিয়েশন অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ