রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্রথম আইপিএল শিরোপা উদ্‌যাপন ঘিরে বেঙ্গালুরুতে ঘটে গেছে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে বিশৃঙ্খলায় পদদলনের ঘটনায় মারা গেছেন ১১ জন। আর তাতে নড়ে বসেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আইপিএলের শিরোপা উদ্‌যাপনে কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে দলটি।

বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছে, ‘বোর্ড বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ঝুঁকির দিক বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।’

শুরুতে বিসিসিআই এ ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করলেও পরে তারা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা নির্দেশিকা তৈরি ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে। উদ্‌যাপনে নতুন কিছু নিয়মও করতে যাচ্ছে তারা। সেই নিয়ম কী কী?

* শিরোপা জয়ের ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কোনো উদ্‌যাপন করা যাবে না
* হুটহাট ও তাড়াহুড়া করে কোনো আয়োজন নয়, যাতে বিশৃঙ্খলা এড়ানো যায়
* বিসিসিআইয়ের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো ইভেন্ট আয়োজন করা যাবে না
* বোর্ডের লিখিত অনুমোদন ছাড়া কোনো উদ্‌যাপন নয়
* ৪ থেকে ৫ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাধ্যতামূলক
* প্রতিটি ভেন্যু ও যাতায়াতপথে মাল্টিলেয়ার নিরাপত্তা টিম রাখতে হবে
* দলের বিমানবন্দর থেকে ইভেন্ট ভেন্যু পর্যন্ত চলাচলের সময় সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
* খেলোয়াড় ও স্টাফদের জন্য ইভেন্টজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
*জেলা পুলিশ, রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে
* সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র ছাড়া কোনো আয়োজন করা যাবে নাআরও পড়ুনওয়াসিম আকরামকে ছাড়িয়ে গেলেন বুমরা২ ঘণ্টা আগে

৪ জুন বেঙ্গালুরুতে শিরোপা নিয়ে ফেরে আরসিবি। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে দেখা করে দলটি। পরে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ভক্তদের জন্য আয়োজন হয় সংবর্ধনার।

যদিও ট্রাফিক পুলিশ বাস প্যারেডের অনুমতি দেয়নি, তবু ফ্র্যাঞ্চাইজি নিজের মতো করে ঘোষণা দেয়। প্যারেড বাতিল হলেও সন্ধ্যার আগেই স্টেডিয়ামের আশপাশে ভিড় করেন দুই লাখের বেশি ভক্ত। ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় সামলাতে না পেরে ঘটে ভয়ানক পদদলন।

এ ঘটনায় আরসিবির মার্কেটিং প্রধান ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করেন কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষ।

আরও পড়ুনবিনি সুতোর মালায় গাঁথা তাঁরা তিনজন, সেই ‘মালা’ ২২ জুন ২২ জুন ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স স আই র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত

সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হলো ওরাঁও সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘কারাম পূজা’। নাচ-গান, ঢাক-ঢোরের বাদ্য আর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসব ঘিরে মুখরিত হয়ে ওঠে সদর উপজেলার সালন্দর পাঁচপীরডাঙ্গা গ্রাম।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় আদিবাসী পরিষদের জেলা শাখার আয়োজনে পালিত হয় এই উৎসব। প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে আদিকাল থেকেই ওরাঁওরা উপবাস থেকে শুরু করে কারাম বৃক্ষের ডাল পুঁতে পূজা-অর্চনা করে আসছেন। পূজা শেষে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা ঢাক-ঢোলের তালে নেচে-গেয়ে মেতে ওঠেন উৎসবের আনন্দে।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, ভাদ্র মাসের শেষ দিন ও আশ্বিনের প্রথম দিনে পালিত কারাম পূজা বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি, ভালো ফসল উৎপাদন ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে।

ভাদ্র মাসের শেষ রাত ও আশ্বিনের শুরুতে কারাম উৎসব উদযাপনের জন্য ওরাঁও নর-নারী সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রথম দিন উপোস থাকেন। উপোসের মধ্য দিয়েই পূজা শুরু করেন ওরাঁও নারীরা।

পরদিন সন্ধ্যায় মাদল, ঢোল, করতাল ও ঝুমকির বাজনার তালে তালে নেচে-গেয়ে এলাকা থেকে কারামগাছের (খিল কদম) ডাল সংগ্রহ করেন তারা। পরে একটি পূজার বেদি নির্মাণ করে সূর্য পশ্চিমে হেলে গেলে সেই কারামগাছের ডালটি বেদিতে রোপণ করা হয়। এরপর ঢাক-ঢোলের তালে হাত-পা দুলিয়ে নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন আদিবাসীরা। নাচ, গান আর গল্প বলার মধ্য দিয়ে জমে ওঠে উৎসবের আসর।

রঙিন পোশাকে সারিবদ্ধ হয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন নারী-পুরুষ। ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের পদচারণায় কারাম উৎসব রূপ নেয় মিলনমেলায়। শুধু ওরাঁওরা নন, হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষও যোগ দেন এই উৎসবে।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কষাধ্যক্ষ বনি কেরকেটা বলেন, “বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি, ভালো ফসল আর সুখ-সমৃদ্ধির আশায় আমরা প্রতিবছর এই পূজা পালন করি।”

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, “কারাম উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের অন্যতম উদাহরণ। সরকারি সহযোগিতা পেলে এটি আরো বড় আয়োজনে পালিত হতে পারে।”

উৎসব উপভোগ করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি অন্য জেলা থেকেও ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। ঢাক-ঢোলের শব্দ আর নাচ-গানে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা জানান, প্রতিবছরই এই আয়োজনে আসতে তাদের ভালো লাগে।

তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের শুরু হয় ১৬ সেপ্টেম্বর। পূজা-অর্চনা শেষে ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে কারাম বৃক্ষের ডাল নদীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়েই সমাপ্ত হবে এবারের কারাম পূজা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, “ওরাঁও সম্প্রদায়ের এই সংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে টিকে থাকুক, এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

শুধু ধর্মীয় আচার নয়, কারাম উৎসব হয়ে উঠেছে সুখ-শান্তি কামনার পাশাপাশি সম্প্রীতি আর সহাবস্থানের প্রতীক। এই ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মকে যেমন তাদের শিকড়ের সঙ্গে পরিচয় করায়, তেমনি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মেলবন্ধন ঘটায়।

এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মো. খাইরুল ইসলাম। এছাড়াও সালন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলে ইলাহি মুকুট চৌধুরী, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী, ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরীসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় ম্যাচে ছয় জয় রিয়ালের, বার্নাব্যুতে উৎসব হলো অন্য কারণেও
  • ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর ভাদ্রোৎসব ‘কারাম’
  • সরকারের নীরবতার কারণেই সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার আক্রমণ হচ্ছে
  • মনিকার প্রেম ভাঙল
  • বিজ্ঞানকে জয়ের সংকল্পে বরিশালে চলছে বিজ্ঞান উৎসব
  • নানা আয়োজনে দিনভর উৎসবের আমেজ
  • একটি বিশেষ সিনেমা, আপনার মাকে সঙ্গে নিয়ে আসুন...
  • তিন বছর পর ‘ফেরেশতে’
  • চৌধুরীবাড়ী ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত