নিজস্ব সচিবালয় বিচার বিভাগকে প্রকৃত স্বাধীনতা দেবে: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 23rd, June 2025 GMT
নিজস্ব সচিবালয় বিচার বিভাগকে প্রকৃত স্বাধীনতা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই বিপ্লবের প্রতি সম্মান জানানোর একমাত্র উপায় হলো ২০২৪-এর জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। সেগুলো পূর্ণ স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি ড.
ইউনূস বলেন, জুলাই বিপ্লব শুধু স্বৈরাচারী সরকার পতনের ব্যাপার নয়। এটি ছিল সমাজজুড়ে বিদ্যমান গভীর অনিয়ম, পক্ষপাত ও ক্ষমতার বৈষম্যকে ধ্বংস করার এক প্রবল আকাঙ্ক্ষা।
তিনি বলেন, এ বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল এমন সমাজ গড়া, যেখানে সব সিদ্ধান্ত এবং কর্মকাণ্ডের মূলনীতি হবে স্বাধীনতা, সমতা ও মর্যাদা। সংস্কারের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ, যা জাতির প্রতি ঋণ হিসেবে বহন করছি। আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, তা কোনো তুচ্ছ পরিবর্তন নয়। বরং তা এমন মূলগত রূপান্তর, যা গত ৫৪ বছরেও করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, কীভাবে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচনী কৌশল প্রয়োগ করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা হয় এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে ভেঙে ফেলা হয়। এসব স্বৈরতান্ত্রিক কৌশল রোধে প্রয়োজন নতুন কাঠামো। এই সংস্কার প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিচার ব্যবস্থা। একে স্বাধীন ও কার্যকর না করতে পারলে কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয়।
স্বাধীনতা, দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা আজ পুনর্গঠনের পথে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এ সংস্কার উদ্যোগ চলছে, আইন মন্ত্রণালয় এতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় গবেষণা করে প্রতিবেদন দিয়েছে। কমিশনের সুপারিশ এবং প্রধান বিচারপতির প্রস্তাবনার মধ্যে অনেক জায়গায় মিল রয়েছে।
তিনি জানান, প্রস্তাবিত সংস্কারের মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন ও ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার প্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নতুন ব্যবস্থা, জেলা আদালতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে বিচারক বদলির আলাদা বিধি প্রণয়ন এবং বিচার বিভাগের নিজস্ব সচিবালয় গঠন, যা বিচার বিভাগকে প্রকৃত স্বাধীনতা দেবে।
এ ছাড়া সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আবার সক্রিয় করা হয়েছে, যাতে বিচারপতিদের জবাবদিহি নিশ্চিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি সংস্কার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে এটি বাংলাদেশে নতুন ভোর আনবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স স ব ধ নত ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
আন্তর্জাতিক রোবোটেক অলিম্পিয়াডে বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের সাফল্য
পঞ্চম আন্তর্জাতিক রোবোটেক অলিম্পিয়াড ২০২৫-এ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থীরা। গত ২১ জুলাই উত্তরা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় দেশ-বিদেশের মোট সত্তরটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেড়শোর বেশি দল অংশগ্রহণ করে, যেখানে মোট ১২ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিইউবিটির প্রতিনিধিত্বকারী দল ‘টিম বিইউবিটি’ আইডিয়া কম্পিটিশন ও প্রজেক্ট শোকেস, এই দুটি ক্যাটাগরিতে রানার আপ হয়। আইডিয়া কম্পিটিশন বিভাগে বিইউবিটির টিমের সদস্য ছিলেন আবু হুরাইরা আনসারী তানভীর, রাকিবুল হাসান বিজয়, শাখাওয়াত হোসেন এবং আসিফ আল আমিন।
অপরদিকে প্রজেক্ট শোকেস বিভাগে টিম বিইউবিটির সদস্যরা ছিলেন শাখাওয়াত হোসেন, সাকিব চৌধুরী, শাহরিয়ার চৌধুরী, সাব্বির হোসেন এবং সাজেদুল ইসলাম।
বিজয়ী দুটি দল সদস্যরা বিইউবিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের এ সাফল্যে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এই অর্জন আমাদের শিক্ষা ও প্রযুক্তি চর্চার মানকে এগিয়ে নেবে এবং আশা করি ভবিষ্যতে তারা আরও বড় মঞ্চে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
উল্লেখ্য, এই আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডটি যৌথভাবে আয়োজন করে উত্তরা ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং রোবোটেক ভ্যালি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্বাণী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার।
বিইউবিটি ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশে এই ধরনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণে উৎসাহ প্রদান করে যাবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি