কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এই যুগে ভাষা ও প্রযুক্তির সম্পর্ককে নতুনভাবে তুলে ধরতে ‘ভাইব কোডিং’-কে ২০২৫ সালের সেরা শব্দগুচ্ছ হিসেবে কলিন্স ডিকশনারিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। ওপেনএআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং টেসলার সাবেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালক আন্দ্রেজ কারপাথি শব্দটি প্রথম জনপ্রিয় করেন।

‘ভাইব কোডিং’ বলতে কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম, মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করাকে বোঝায়, যেখানে ব্যবহারকারী নিজে কোড লেখার পরিবর্তে সাধারণ ভাষায় এআই-চ্যাটবটকে নির্দেশ দেন। আরও সহজভাবে বললে, প্রোগ্রামিং না জেনেও শুধু কথার মাধ্যমে নির্দেশ (প্রম্পট) দিয়েই একটি সম্পূর্ণ সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরি করা সম্ভব। কারপাথির ভাষায়, এআই এখন এমন এক সৃজনশীল সহকারী, যার কারণে ‘কোডের অস্তিত্ব ভুলে গেলেও কোনো সমস্যা নেই’।

কলিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালেক্স বিক্রফট বলেন, ‘ভাষা ও প্রযুক্তি কীভাবে হাত ধরাধরি করে বদলে যাচ্ছে এবং মানুষের সৃজনশীলতা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে, এই শব্দগুচ্ছ আমাদের তা নিখুঁতভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে।’

‘ভাইব কোডিং’-এর পাশাপাশি কলিন্স ডিকশনারি আরও কিছু নতুন শব্দ ও শব্দগুচ্ছকে চলতি বছর নিজেদের অভিধানে স্থান দিয়েছে। এ রকম একটি শব্দ ‘অরা ফার্মিং’, যাকে বাংলায় আভা চাষ বলা যেতে যারে। এর অর্থ হলো সচেতনভাবে এমন এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা, যাতে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় বা ‘কুল’ দেখানো যায়।

আরেকটি শব্দ হলো ‘ক্ল্যাঙ্কার’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা রোবটের প্রতি বিরক্তি বা অবিশ্বাস বোঝাতে শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

অলিগার্কির আদলে তৈরি করা হয়েছে ‘ব্রোলিগার্কি’, মানে শক্তিশালী ছোট প্রযুক্তি গোষ্ঠী, যারা ওই খাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে। আরেকটি শব্দ হলো ‘হেনরি’, যার মাধ্যমে এমন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি ‘অনেক আয় করেন, কিন্তু এখনো তেমন একটা সঞ্চয় করতে পারেননি’। ঠান্ডা আবহাওয়ার স্থানে অবকাশযাপন বোঝাতে ব্যবহার করা হয় ‘কুলকেশন’, যার বাংলা হতে পারে শীতকালীন ছুটি।

কলিন্স ডিকশনারিতে চলতি বছর জায়গা করে নেওয়া আরেকটি নতুন শব্দ হলো ‘মাইক্রো-রিটায়ারমেন্ট’ বা ‘ক্ষুদ্র অবসর’। এর দ্বারা কর্মজীবনের চাপ থেকে মুক্তি, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন বা কাজের আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে কয়েক বছর চাকরি করে কয়েক মাসের জন্য ছুটি নেওয়াকে বোঝায়।

আরেকটি মজার শব্দ হলো ‘টাস্কমাস্কিং’ বা কাজের ভান। এই পরিভাষা দিয়ে কর্মস্থলে ব্যস্ত থাকার অভিনয় করাকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ উৎপাদনশীলতা কম হওয়া সত্ত্বেও এমন আচরণ করা, যেন অনেক বলে মনে হয়। চলতি বছরের আরেকটি শব্দ হলো ‘বায়োহ্যাকিং’। এর মাধ্যমে দেহের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলোকে সচেতনভাবে পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ করাকে বোঝানো হয়, যাতে শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করা যায় এবং জীবনকাল বৃদ্ধি করা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকুরের শততম টেস্ট নিয়ে আশরাফুলের উচ্ছ্বাস

মোহাম্মদ আশরাফুলই হতে পারতেন বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। হননি। গলে ১৯০ রানে আউট হয়ে মুশফিকুর রহিমকে নিজের হাতে সুযোগটি দিয়ে আসেন। মুশফিকুর পরবর্তীতে হয়ে যান বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান।

এরপর আরো দুইটি ডাবল হাঁকিয়েছেন তিনি। সেই মুশফিকুর এবার প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে। নিজের ক‌্যারিয়ার ঠিকঠাক গোছালে আশরাফুলও হয়তো এই রেকর্ডে সবার আগে নিজের নাম তুলতে পারতেন। পারেননি। তবে যিনি পারছেন তার জন‌্য দারুণ খুশি আশরাফুল।

আরো পড়ুন:

লর্ডসে প্রথম, মিরপুরে শততম টেস্ট মুশফিকুর

মুশফিকের সামনে ঐতিহাসিক মাইলফলক

২০০৫ সালে লর্ডসে মুশফিকুরের অভিষেক। আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে শততম টেস্ট খেলবেন তিনি। লর্ডসের ড্রেসিংরুমে মুশফিকুরের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছিলেন আশরাফুল। মুশফিকুরের বড় মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে আশরাফুলও থাকবেন ড্রেসিংরুমে। সতীর্থ নয়, এবার আশরাফুল কোচের ভূমিকায়।

আয়ারল‌্যান্ড সিরিজে আশরাফুলকে ব‌্যাটিং কোচের দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। মুশফিকুরের মঞ্চ ভাগাভাগি করতে পারায় উচ্ছ্বসিত আশরাফুল, ‘‘আমি নিজেকে খুব ভাগ‌্যবান মনে করছি, আল্লাহ আমাকে এমন সময়ে এই সুযোগটি করে দিয়েছেন। মুশফিকুরের অভিষেক ম‌্যাচে আমি ড্রেসিংরুমে ছিলাম লর্ডসে। এখানে ৯৯ ও ১০০তম টেস্টেও আমি থাকবো।’’

‘‘মুশফিকুর রহিম একমাত্র ক্রিকেটার যার শৃঙ্খলতা ছিল বলেই ২০ বছর ধরে খেলছেন। আমার ব‌্যক্তিগত মতামত, বাংলাদেশের সামনে এবং ভবিষ‌্যতে যারা খেলবে তারা যদি মুশফিকুরকে রোল মডেল হিসেবে ধরে এবং দেখা উচিত…সে কিভাবে এই জায়গাতে এসেছেন, শুধুমাত্র একটা কারণে শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা কী হতে পারে..খাবার, ঘুমানো, অনুশীলন…এই জিনিসগুলো যদি সঠিকভাবে করেন জীবনে তাহলে এই জিনিসটা সম্ভব।’’ - মুশফিকুরের প্রশংসা করে বলেন আশরাফুল।

‘‘মুশফিকুর বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার একশতম টেস্ট খেলবে এটা বিরাট গর্বের বিষয়। একটা ফরম‌্যাট নয়, তিনটিতেই সে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। খেলেছেন। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তিনি। তিনটা ডাবল সেঞ্চুরি আছে তার। ২০১৩ সালের পর সেঞ্চুরি করলেই বোঝা যায় সে বড় বড় ইনিংস খেলে। আয়ারল‌্যান্ড সিরিজেও যদি স্টার্ট পায় তাহলে সে বড় করবে। এটাই আশা থাকবে। ভালো ফর্মেও আছে। জাতীয় ক্রিকেট লিগে দ্বিতীয় ইনিংসে হানড্রেড করেছে।’’

প্রশ্ন উঠেছিল, এমন ক্রিকেটারের জন‌্য একটি স্ট‌্যান্ড কিংবা আরো কিছু করা যেত কি না? আশরাফুল বলেছেন, ‘‘অবশ‌্যই যারা আমাদের কিংবদন্তি তাদের জন‌্য শুধু স্ট‌্যান্ড না, অনেক কিছুই করা সম্ভব।’’

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ