কিশোরগঞ্জের সাবেক বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ফয়জুল করিম আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান। পরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে তাঁর দলে যোগদানের খবর প্রচার করেন।

ফয়জুল করিম গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনের আগের কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জিয়াউর রহমান সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ফজলুর করিমের ছেলে।

গতকাল বিকেলে ফয়জুল করিম নিজ ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা দেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশে অবশ্যই আসবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ ‘অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে তিনি ২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওতে বক্তব্য দেন।

ফেসবুক লাইভে ফয়জুল করিম বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন, তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি, দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এই দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়। আমি কিশোরগঞ্জ থেকে ২১ অক্টোবর অসাংবিধানিক সরকার কর্তৃক জুলাই সনদের তীব্র বিরোধিতা করি।’

ফয়জুল করিম কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ এখনো চলমান।

দলবদলের কারণ জানতে চাইলে ফয়জুল করিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। ৫ আগস্টের পর মানুষের যে স্বপ্ন ছিল, চেতনা ছিল, এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের নামে সম্পদ ভোগ করার চেষ্টা চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা চলছে। তাকে প্রতিহত করার জন্যই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। শেখ হাসিনাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল। আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’ কীভাবে এবং কার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন—এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ফয়জুল করিম।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিএনপিতে এখন ফয়জুল করিমের কোনো পদ নেই। তাঁর কথাবার্তাও এখন ঠিক নেই। তাঁর আওয়ামী লীগে যোগদানেরও কোনো গুরুত্ব নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ক শ রগঞ জ ফ সব ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের

পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে কি না—প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা ‘ইয়ার্কির’ (e-আরকি, ব্যঙ্গবিদ্রূপভিত্তিক ওয়েবসাইট) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাঁরা তো দাবি করছেন যে তাঁরা নতুন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। তো সেই কাজগুলো কি এইভাবেই হবে? পুরোনো সব হাতিয়ার ব্যবহার করে? পুরোনো সব আইন ব্যবহার করে?’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সারা হোসেন এ কথা বলেন।

সভাটি আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ ও ফান ম্যাগাজিন ‘e-আরকি’। সভায় স্যাটায়ারিস্ট, কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বিগত সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়টি টেনে সারা হোসেন বলেন, সে সময় বলা হয়েছিল যে কেউ যদি কোনোভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, সেটাকেও রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে দেখা হবে। সেটার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কথা বলার জন্য শাস্তির পাওয়ার সেই চর্চা থেকে সবাই বের হয়ে আসতে চাইছে।

সারা হোসেন বলেন, মিম ও কার্টুনের গুরুত্ব হলো তামাশার মাধ্যমে ক্ষমতাশালীদের প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। এখনকার সময়ে এগুলো সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে। সে জন্য এসবের সামাজিক আর রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। এগুলোর একটি স্পেস রাখা দরকার। সেই স্পেসটাকেই মামলা দিয়ে সংকীর্ণ করার চেষ্টা হচ্ছে।

অনলাইনে ‘অপপ্রচার’ ও নারী নেত্রীদের সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম। মামলা করার পর তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সাইবার সাপোর্ট ইউনিটের সঙ্গে ফলপ্রসূ মিটিং করেছি। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। একই সঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজকে আমরা এখানে লিখিতভাবে আমাদের অভিযোগগুলো দিয়েছি।’

‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অতিথি ও আলোচকেরা। আজ শনিবার সকালে, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের
  • সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে: প্রধান বিচারপতি
  • বিচার বিভাগ কাগজে স্বাধীন, এখন বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখতে চায় মানুষ: মাহবুব উদ্দিন খোকন