পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয় মূলত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন ঘিরে। এই তিন ক্ষেত্রে অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রভাব পড়ে পুলিশের অন্যান্য কার্যক্রমেও। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কার্যকরী স্বায়ত্তশাসন (ফাংশনাল অটোনমি) দাবি করে আসছিল পুলিশ। তবে এই দাবি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নির্বিচার গুলি ও বলপ্রয়োগের পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে স্বাধীন কর্তৃপক্ষের অধীনে পুলিশ বাহিনী পরিচালনার দাবি ওঠে। এ জন্য পুলিশের চাওয়া ছিল, একটি স্বাধীন কমিশন। এই কমিশনই যেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদগুলোর নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ নিরসনেও কাজ করবে এ কমিশন।

পুলিশ কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য এবং জুলাই সনদে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর অধ্যাদেশের মাধ্যমে স্বশাসিত কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের একটি কমিটি কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রম নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করেছে। খসড়ায় রয়েছে, এই কমিশন পুলিশি কার্যক্রমে শৃঙ্খলা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। তবে পুলিশ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ হবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চাওয়ার বাইরে গিয়ে বাছাই কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের খসড়ায় আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের স্বশাসিত পুলিশ কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি এই কমিশনের অধীনে হবে না। আগের মতোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। কমিশন শুধু এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করবে। এ ছাড়া কমিশনকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিবর্তে সুপারিশের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আবার সুপারিশ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা না থাকায় এর কার্যকারিতা নিয়েও সন্দিহান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই কমিশনের সদস্য বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীর নেতৃত্বে হওয়া বাছাই কমিটি কতটা নিরপেক্ষভাবে কমিশনের সদস্য বাছাই করতে পারবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চাওয়ার বাইরে গিয়ে বাছাই কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা ও সন্তোষজনক চাকরির ভিত্তিতে অতিরিক্ত আইজিপিদের এই প্যানেল করা হবে। কমিশন সর্বনিম্ন দুই বছর এবং সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে আইজিপি নিয়োগের সুপারিশ করবে।

এসব কারণে কমিশনের প্রস্তাবিত কাঠামো, কার্যক্রম ও এখতিয়ার নিয়ে পুলিশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এই কমিশন কতটা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হবে, তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পুলিশের সাবেক ও বর্তমান অনেক কর্মকর্তা বলছেন, নিয়োগ-পদোন্নতি ও পদায়ন ঘিরে অবৈধ সুবিধা পেতে সরকার ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অবৈধ আদেশ পালন করে থাকেন পুলিশের সদস্যরা। এমন অবৈধ আদেশ পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় না নিয়ে কমিশন করলে তাতে কার্যত কোনো লাভ হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ সংস্কারের ক্ষেত্রে আমাদের মূল দাবি ছিল কর্মক্ষেত্রে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে মামলা তদন্ত ও প্রসিকিউশনে যাতে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক নির্দেশ না থাকে। একইভাবে ঊর্ধ্বতন পদে বদলি, পদোন্নতি ও পদায়নের প্রক্রিয়াটিকে একটি স্বাধীন কমিশনের আওতায় নিয়ে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা। এর সঙ্গে পুলিশপ্রধানের নিয়োগপ্রক্রিয়াও যেন আরও স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত হয়। পুলিশের জবাবদিহির পাশাপাশি “ফাংশনাল ইনডিপেনডেন্সের” বিষয়টিও যেন সংস্কারপ্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়।’

কমিশন হবে নির্দেশনা ও সুপারিশকেন্দ্রিক

খসড়া অনুযায়ী, পুলিশ কমিশনের কার্যক্রমের বেশির ভাগ বিষয় হতে যাচ্ছে নির্দেশনা বা সুপারিশকেন্দ্রিক। কিছু ক্ষেত্রে তাদের কাজ হবে নীতিমালা প্রণয়ন করা। যেমন নিয়োগ-পদোন্নতি ও পদায়নের এখতিয়ার কমিশনের না থাকলেও তারা এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেবে বা সুপারিশ করবে। আর সুপারিশ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে খসড়ায় কিছু বলা নেই।

খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা সংস্থায় পুলিশের পদায়ন প্রমিতকরণের বিষয়ে নির্দেশনা বা সুপারিশ প্রদান করবে কমিশন। এ ক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা, পেশাদারত্ব, ন্যায্যতা ও মেধার ভিত্তিতে সম্পাদনের বিষয়ে নির্দেশনা বা সুপারিশ দেবে কমিশন। তা ছাড়া দক্ষ, পেশাদার ও প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনে কৌশলগত নির্দেশনা বা সুপারিশ প্রদানও এই কমিশনের কাজ হবে।

আইজিপি নিয়োগের জন্যও সুপারিশের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে কমিশনকে। এই নিয়োগের জন্য তিন অতিরিক্ত আইজিপির একটি প্যানেল করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে কমিশন। সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা ও সন্তোষজনক চাকরির ভিত্তিতে অতিরিক্ত আইজিপিদের এই প্যানেল করা হবে। কমিশন সর্বনিম্ন দুই বছর এবং সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে আইজিপি নিয়োগের সুপারিশ করবে।

এর বাইরে খসড়ায় পুলিশের পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে (এসএসবি) আইজিপিকে এবং বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটিতে (ডিপিসি) অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সব পদোন্নতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা বা সুপারিশ প্রদানের কথা এসেছে খসড়ায়।

৯ সদস্যের কমিশন, বাছাইয়ে ৫ জন

৯ সদস্যের এই কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। সদস্যসচিব হবেন সাবেক একজন আইজিপি। কমিশনের বাকি সাত সদস্যের মধ্যে দুজন হবেন সংসদনেতা ও বিরোধীদলীয় নেতার একজন করে প্রতিনিধি। এ দুজন হবেন অস্থায়ী সদস্য।

কমিশনের বাকি পাঁচ সদস্যের মধ্যে সচিব পদমর্যাদার অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা, জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড-১ পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১) পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। গ্রেড-১ পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা অথবা দেশে আইন পেশায় ন্যূনতম ২০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে এমন একজন তালিকাভুক্ত খ্যাতনামা আইনজীবী সদস্য হবেন। ন্যূনতম ২০ বছর দেশে বা বিদেশে নিবন্ধিত মানবাধিকার সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা আছে এমন খ্যাতনামা একজন মানবাধিকারকর্মী কমিশনের সদস্য হবেন।

খসড়া অনুযায়ী, কমিশনে অন্তত একজন নারী সদস্য থাকবেন। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মজীবনে সততা ও কর্মদক্ষতার সুখ্যাতি আছে, এমন ব্যক্তিকে মনোনীত করতে হবে। এই সাতজন স্থায়ী সদস্য হবেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। কমিশন সদস্যদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।

এ ছাড়া কমিশন নাগরিক অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ বিভিন্ন কাজে সদস্যদের দিয়ে কমিটি গঠন করবে বা করতে পারবে। এসব কমিটিতে বিরোধীদলীয় সদস্য বা নারীদের রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে কমিটির কার্যক্রম ও পদক্ষেপ একপক্ষীয় হওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা উপদেষ্টার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটিতে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি সদস্য হবেন। বাকি তিন সদস্য হলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান।পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি

খসড়া অনুযায়ী, পুলিশ কমিশনের সদস্য নিয়োগের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা কমিশনের সদস্য বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন। বাছাই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেবেন। কমিশনের কার্যালয় বাছাই কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে। বাছাই কমিটি কর্তৃক বাছাইপ্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে তা শেষ করতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা উপদেষ্টার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটিতে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি সদস্য হবেন। বাকি তিন সদস্য হলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান

প্রস্তাবিত খসড়ায় পুলিশ বাহিনীর শৃঙ্খলা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের পাশাপাশি নাগরিকের অভিযোগ নিষ্পত্তির স্বতন্ত্র ব্যবস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের কাজ হবে—পুলিশ সদস্যদের সততা, শৃঙ্খলা ও পেশাদারত্ব নিশ্চিত করা। মানবাধিকার মানদণ্ড মেনে পুলিশি কার্যক্রম পরিবীক্ষণ। অপরাধ তদন্ত ও প্রসিকিউশন প্রক্রিয়ায় সমস্যা শনাক্ত ও সমাধানে নির্দেশনা প্রদান। আটক, জিজ্ঞাসাবাদ ও বলপ্রয়োগের নিয়মিত নিরীক্ষা পরিচালনা। পুলিশের আইনানুগ কার্যক্রমে কোনো ব্যক্তি বা সত্তা বিধিবহির্ভূত বা অযাচিত প্রভাব বিস্তার করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ বা সুপারিশ প্রদান করা।

এ ছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে নাগরিকদের অভিযোগ অনুসন্ধান ও নিষ্পত্তি করাও হবে কমিশনের অন্যতম কাজ। এ ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রকৃতি ও গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তির সুপারিশ ও বাস্তবায়ন নির্দেশনা দেবে কমিশন। বিভাগীয় পর্যায়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মানবাধিকারকর্মী নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করবে কমিশন। অভিযোগকারীর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হবে। এ ধরনের অভিযোগগুলো ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা ও নির্দেশনা প্রদান করবে কমিশন।

ক্ষোভ নিরসনে কাজ করবে কমিশন

খসড়া অনুযায়ী, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে কমিশন। বিধিবহির্ভূত প্রভাব, পদোন্নতি, পদায়ন, বিভাগীয় শাস্তি প্রদানে বৈষম্য ও অনিয়ম, হয়রানি বা অন্যায্য আচরণ ইত্যাদি সংক্রান্ত সংক্ষোভ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ বা সুপারিশও দেবে কমিশন।

কমিশনের আরও কাজ হবে—পুলিশ সদস্যদের বৈধ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা; সংক্ষোভ নিরসন–সংক্রান্ত বিষয়াবলি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা বা সুপারিশ প্রদান।

সংক্ষোভ নিরসনের জন্য একটি কমিটি হবে। সরকারের বিদ্যমান সংক্ষোভ নিরসন ব্যবস্থার অধীন কোনো পুলিশ সদস্য তার অভিযোগ বা সংক্ষোভের বিষয়ে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দিতে পারবে। পুলিশের কার্যক্রমে বিধিবহির্ভূত প্রভাব, পদোন্নতি, পদায়ন, বিভাগীয় শাস্তি, বৈষম্য ও অনিয়ম, হয়রানি বা অন্যায্য আচরণ ইত্যাদি সংক্রান্ত সংক্ষোভ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ বা সুপারিশ প্রদান করতে পারবে কমিশন। কমিটিকে সংক্ষোভ নিরসনে নেওয়া ব্যবস্থা ও ফলাফল সম্পর্কে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।

পুলিশ সদস্যের সংক্ষোভ–সংক্রান্ত কোনো বিষয় দৃষ্টিগোচর হলে কমিটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও অনুসন্ধান পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ করতে পারবে।

ফাংশনাল অটোনমি না থাকলে আগের মতোই পুলিশকে বলে দেওয়া হবে, ‘এটা আমাদের কেস, এইভাবে করতে হবেসাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদাকমিশন কতটা কার্যকর হবে

সাবেক ও বর্তমান পুলিশ সদস্যরা বলছেন, কমিশন গঠনের আলোচনায় বাহিনীর সদস্যদের অভিযোগ নিরসনের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। তবে কার্যকরী স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক বছর পরেও স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন না হওয়া ইঙ্গিত দেয় যে এ বিষয়ে সরকারের সিরিয়াসনেস (আন্তরিকতা) নেই। পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়টি অরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখলে দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা ব্যবস্থার পরিবর্তন আশা করা যাবে না। ফাংশনাল অটোনমি না থাকলে আগের মতোই পুলিশকে বলে দেওয়া হবে, ‘এটা আমাদের কেস, এইভাবে করতে হবে।’

নুরুল হুদা বলেন, ‘নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়নসহ মূল সমস্যাগুলোর সুরাহা না করে আগের মতো রেখে পুলিশ কমিশন করা হলে খুব একটা লাভ হবে না। এই কমিশন পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে তেমন কিছু করতে পারবে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প র ম ক র ট র আপ ল ব ভ গ র র একজন অবসরপ র প ত স ক ষ ভ ন রসন ব ছ ই কম ট র প ল শ সদস য স প র শ করব পদমর য দ র ন শ চ ত কর ম নব ধ ক র চ সদস য র ন র সদস য ব চ রপত র ন ব চ রপত কর মকর ত কম ট র স প রক র য় ব যবস থ সদস য হ সরক র র উপদ ষ ট ক জ করব সদস য ব ক র যকর হব ন স ক জ হব র অন য কম ট ত র জন য অন য য় খসড় য় ন করব ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তালিকা সঠিক নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, যে তালিকাটা এসেছে এটা কোনো একজন দিয়েছেন, সার্কুলেট (প্রচার) করেছেন। সেটা সম্ভবত কোনো একজন অ্যাডভাইজার রিটুইট করেছেন। তাঁর একটা কমেন্টসহ। কমেন্টটা নিয়ে আমি কোনো কমেন্ট করতে চাই না। হয়তো এটা উনি না করলেও পারতেন। যে তালিকাটা এসেছে ওখানে এটা সঠিক নয়। এর অধিকাংশ (তালিকার চুক্তি) এক্সিস্ট করে না।

ভারতের সঙ্গে একটি মাত্র চুক্তি অনেক আগেই বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাকিগুলোর কয়েকটি আছে যে বিভিন্ন পর্যায়ে আছে এবং ঠিক ওই নামে নেই। অন্য রকম ডেসক্রিপশনে (বিবরণ) আছে।’

গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পরই চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং যথাযথ পর্যালোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তালিকা পোস্ট করা হয়েছিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে চোরাকারবারিদের হামলা ঠেকাতে বিজিবির গুলি, যুবক নিহত
  • একজন ‘প্রধানমন্ত্রী’ ধর্ষণ করেছিলেন ভার্জিনিয়া জিউফ্রেকে: স্মৃতিকথায় দাবি
  • একনেকে মানসিক হাসপাতালের উন্নয়নে প্রকল্প পাসে খুশি পাবনার মানুষ
  • কেন বাংলাদেশে বেকারি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের ৮১ বছরের স্যান্ড্রা
  • জাপানের প্রথম নারী প্রধামন্ত্রীকে কেন ‘কট্টর রক্ষণশীল’ বলা হয়
  • যেভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে চুরি হলো ফরাসি রাজপরিবারের মুকুট
  • ‘গিফট নিয়ে হয়ে গেলাম প্রতারক!’ শাড়ি বিতর্কে তানজিন তিশা
  • ‘কেউ যেন স্বজন হারা না হয়’
  • ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তালিকা সঠিক নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা