ময়মনসিংহে শ্যামাপূজার মণ্ডপে চাঁদাবাজি, ৩ জনকে ছুরিকাঘাত, আটক ১
Published: 23rd, October 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরের বড় কালীবাড়ি এলাকায় শ্যামাপূজার মণ্ডপে ছুরিকাঘাতে উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে নগরীর বড় কালীবাড়ি এলাকার বন্ধুসংঘ শ্যামাপূজা মণ্ডপে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন বড় কালীবাড়ি বন্ধুসংঘ শ্যামাপূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন সরকার (৫৭), মানিক সরকার (২৮) ও তাঁর স্ত্রী ভারতী সরকার (২৪)। তাঁরা একই এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে ভারতী সরকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজধানীর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে আটক মামুন আহমেদও (৩৫) বড় কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
বন্ধুসংঘ শ্যামাপূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রতন পাল জানান, প্রতিবারই পূজার সময় তাঁদের কাছে চাঁদা চান মামুন। এবারও তিনি টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাত করেন মামুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত মামুন মণ্ডপে গিয়ে একজনের কাছে চাঁদা দাবি করেছিলেন। এ সময় বাগ্বিতণ্ডার জেরে মানিক সরকারের গলায় ছুরিকাঘাত করেন মামুন। পরে তাঁর স্ত্রী ভারতী এগিয়ে গেলে তাঁকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁদের রক্ষা করতে গিয়ে সাধন সরকারও ছুরিকাহত হন। মানিক ও সাধনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত মামুনের বিরুদ্ধে আগেও মারামারির মামলা আছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত কর বড় ক ল ব ড় কম ট র স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চিরচেনা ছবির হারানো নায়কেরা
শত্রুবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়ে মারছেন এক কিশোর। তাঁর ডান পাশে রাইফেল তাক করে স্থির বসে আছেন আরও দুজন। তাঁদের বুকে তুষের মতো বদলা নেওয়ার আগুন। আর চোখে পরাধীন দেশকে মুক্ত করার প্রত্যয়। অসম সাহসী এই কিশোরদের পেছনে বিস্তীর্ণ ব্রহ্মপুত্র নদ আর তার পেছনে বিশাল আকাশ। ডিসেম্বর মাস বলে ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা শুকিয়ে এসেছে। নদের ওপারে যে গ্রামটা, তা একটা রেখার মতো মিশে গেছে অসীমায়। এত এলিমেন্টের মধ্যেও কিন্তু ছবির মূল ফোকাস এই তিন কিশোর। তাঁরা যে ঝোপের আড়াল থেকে গ্রেনেড ছুড়ে মারছেন, তার ডান পাশে একটা বরুণগাছ। শত্রুপক্ষের পাল্টা আক্রমণ এলে এই গাছটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লড়াইটা চালিয়ে যাবেন তাঁরা। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাঙালি মানসে এই দৃশটি একটি চিরচেনা আলোকচিত্র। বহু মাধ্যমে বহুল ব্যবহারের ফলে এই ছবির নির্মাতা যে নাইব উদ্দিন আহমেদ, তা অনেকেরই জানা। কিন্তু চিরচেনা এই ছবির নায়কদের কথা তেমন কেউ জানে না।
আমি বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি এই ছবির নায়কদের খুঁজে বের করতে। অনেক বছর আগে কে যেন আমাকে বলেছিলেন, এই কিশোরদের বাড়ি টাঙ্গাইল অঞ্চলে এখন আর তাঁর নামটা মনে করতে পারি না। ৮ নভেম্বর রাত ১১টা ২৪ মিনিটে আমার হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারটা টুং করে বেজে উঠল। নির্মাতা শরীফ রেজা মাহমুদ লিখেছেন, ‘এই তিন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আবদুল খালেক, আবদুল মজিদ ও মজিবর রহমান। তঁদের বাড়ির টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মুশুরিয়া গ্রামে।’ খালেক ও মজিদের ফোন নম্বর দিয়ে শরীফ জানালেন মজিবর মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। শরীফ এই তথ্যগুলো পেয়েছেন শেরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ মো. নূরুল ইসলাম হিরোর কাছে। শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমি পেয়ে যাই এই ঐতিহাসিক ছবির হারানো নায়কদের।
ছবিটি তোলা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে। ৩ ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্রবাহিনী পাকিস্তানি হানাদারদের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করল। ওই দিনই মিত্রবাহিনীর সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করেন এই তিন বীর।মুক্তিযুদ্ধের সেই চিরচেনা ছবি [ময়মনসিংহ, ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১]। আলোকচিত্র: নাইব উদ্দিন আহমেদ