ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্রিয়াশীল অন্তত আটটি ছাত্র সংগঠন তাদের কার্যালয় হিসেবে মধুর ক্যান্টিনকে নিজেদের কার্যালয় বলে দাবি করে। তাদের এমন কর্মকান্ড আইনগতভাবে কতটা বৈধ ও গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। নতুন বাংলাদেশে সংগঠনগুলোর এমন দাবিতে ক্ষুব্ধ রাজনীতি সচেতন শিক্ষার্থীরা। 

সম্প্রতি সংগঠনগুলোর দেওয়া বিভিন্ন বিবৃতি ও নতুন কমিটির ঘোষণাপত্র অনুসন্ধান করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

মধুর ক্যান্টিনকে নিজেদের কার্যালয় হিসেবে দাবি করা সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’। 

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে ৩ মাদরাসা শিক্ষার্থী নিখোঁজ, উ‌দ্বিগ্ন প‌রিবার

শাবিপ্রবি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ৪ দিনের রিমান্ডে ২ যুবক

গত ২০ জুন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বাংলা কলেজ সংসদের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণাপত্রে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে মধুর ক্যান্টিনকে দাবি করা হয়েছে।

গত ১০ জুন ঢাবি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ১৮ জুন ঢাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী), ১১ জুন ঢাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), ৫ মার্চ বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, ২১ মে ঢাবি ছাত্র ফেডারেশন, ৬ মে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও ১ জুন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের দেওয়া বিবৃতিতে কার্যালয় বা ঠিকানা হিসেবে মধুর ক্যান্টিন দাবি করা হয়েছে। 

বামপন্থী ছাত্র সংগঠন গুলোর জোট গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটে ‘বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ’ অন্তর্ভুক্ত।

২০২২ সালের ২৬ মে ‘আট ছাত্র সংগঠন’ এর ব্যানারে দেওয়া এক বিবৃতিতেও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের কার্যালয় হিসেবে মধুর ক্যান্টিনকে দাবি করেছে। ওই আট ছাত্র সংগঠনের ভিতরে ছাত্র ইউনিয়নও অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ’ ব্যানারে বামপন্থী নয়টি ছাত্র সংগঠনের দেওয়া বিবৃতিতেও কার্যালয় হিসেবে মধুর ক্যান্টিন দাবি করা হয়েছে। 

ঢাবির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, “আমরা কোন রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যালয় বলতে বুঝি, যেখানে ওই সংগঠনের দাপ্তরিক কার্যাবলী সম্পাদিত হয়ে থাকে। মধুর ক্যান্টিন হলো সব শিক্ষার্থীদের জন্য চা-কফির সঙ্গে আলাপচারিতা ও বসে সময় কাটানোর জায়গা। এটা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সব শিক্ষার্থীদের জন্যই সমান অধিকারের জায়গা। এটাকে কোনো ছাত্র সংগঠন তাদের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ঘোষণা করে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্যপারে নির্দেশনা কী তা অস্পষ্ট থেকে যায়।”

তিনি বলেন, “আদৌ মধুর ক্যান্টিনকে কি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে? উত্তর হবে ‘না’। তাহলে মধুর ক্যান্টিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত কোনো রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠিত কার্যকলাপের জায়গা নয়।”

তিনি আরো বলেন, “যদিও ঢাবির ছাত্র সংগঠনগুলো অঘোষিতভাবেই দীর্ঘকাল থেকেই মধুর ক্যান্টিনে তাদের রাজনৈতিক আলাপচারিতা, সংবাদ সম্মেলন ও মতবিনিময় সভা করে থাকে। তার মানে এই নয় যে, কোনো রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন তাদের প্রধান কার্যালয় হিসেবে মধুর ক্যান্টিনকে ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই একাধিক রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন মধুর ক্যান্টিনকে তাদের রাজনৈতিক প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এটা সুস্পষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি বা নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।”

ঢাবির সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক প্রান্ত মাহমুদ বলেন, “ঢাবির মধুর ক্যান্টিন শুধু বিভিন্ন দল, মত ও পথের রাজনৈতিক আড্ডা হিসেবে পরিচিত ছিল—এই ধারণাটি একপাক্ষিক ও অসম্পূর্ণ। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, এই ক্যান্টিন ছিল তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি, নবীন কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের চিন্তা বিনিময়ের প্রাঙ্গণ। এখানে শিল্প, সাহিত্য, নাটক, সিনেমা কিংবা সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে বহু আলাপ-আলোচনা হয়েছে, মতের অমিল হলেও চিন্তার বহুত্ব ছিল একটানা।”

তিনি বলেন, “দুঃখজনকভাবে, আজ মধুর ক্যান্টিনে সেই সাংস্কৃতিক-সাহিত্যিক প্রাণ নেই বললেই চলে। এখন কিছু ব্যক্তি মধুর কান্টিনকে শুধুই রাজনৈতিক সংগঠনের দাপ্তরিক কার্যলয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। আমার মতে, এটা মধুর ক্যান্টিনের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে সংকুচিত করে ফেলছে। আমরা চাই, এই প্রজন্ম রাজনৈতিক ফোবিয়াকে অতিক্রম করে এক বৈচিত্র্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চিন্তার চর্চা হোক। মধুর ক্যান্টিন হোক মুক্ত আলোচনার ক্ষেত্র, যেখানে রাজনীতি সঙ্গে থাকবে সাহিত্য, শিল্প, সমসাময়িক চিন্তার সমান জায়গা।”

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার হিসেবে মধুর ক্যান্টিনকে অফিসের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করলে আপত্তি নেই আমাদের। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মধুর ক্যান্টিন সংস্কার করে সব ছাত্র সংগঠনের জন্য আলাদা আলাদা স্পেস তৈরি করে দিলে গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির চর্চা ও বিকাশ হবে।”

জানতে চাইলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “এটা তো অলংকারিক কার্যালয় হিসেবে বিবেচিত হয়। যে কোনো সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে আলোচনা, মতবিনিময়ের ইতিহাস মধুর ক্যান্টিনে। সেই জায়গা থেকে আমরাও এটা করেছি আর কী। এটা একটা অলংকারিক কার্যালয় আমরা চিন্তা করতেই পারি। আমরা মনে করছি এটা একটি ঐতিহাসিক জায়গা, সেই জায়গা থেকে আমরা এটি নির্ধারণ করেছি।”

ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ঠিকানাটা আমরা সব সংগঠনই এভাবে লিখে আসছি। কারণ সবাই মধুর ক্যান্টিনে থাকে, আড্ডা দেয়। এটা অফিস না, এটা আগে থেকেই করে আসছে.

আর কি।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) আহ্বায়ক মুক্তা বাড়ৈ বলেন, “ভিন্ন মত থাকা সত্ত্বেও মধুর ক্যান্টিনের টেবিলগুলো সেখানে কিন্তু তারা বসে। এটা কারো কার্যালয় না। প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা কার্যালয় থাকে। এটা (মধুর ক্যান্টিন) কারো সাংগঠনিক কার্যালয় বলে আমরা জানি না। এমন যদি কেউ দাবি করে, সেটা আমরা ঠিকও মনে করি না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার মিসেস ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এখন পর্যন্ত এ বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করিনি। মধুর ক্যান্টিনের বিষয় নিয়ে কিছুদিন পরে কাজ শুরু করব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এই স্থাপনাগুলো দেখভাল করে আমাদের এস্টেট অফিস। আমি এস্টেট অফিসের সঙ্গে কথা বলব, তারা মধুর ক্যান্টিনের সঙ্গে কথা বলুক। তারপরে আমি এটাতে হস্তক্ষেপ করব। কারণ আমি চাই, যার যেটা দায়িত্ব সে সেটা করুক।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক ছ ত র ছ ত র স গঠন র র জন ত ক স র আহ ব য ক স গঠনগ ল র র জন ত ব মপন থ দ বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্রিকেট ট্যুরিজমকে ঘিরে পর্যটনকে উন্নত করে অর্থনীতিতে অবদানই মূল লক্ষ্য’

ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যেন এ দেশের পর্যটন খাতকে আরো উন্নত করা যায়, সেটিই মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্টস অ্যাডভাইজার কমিটির উপদেষ্টা ক্রীড়া সংগঠক মো. শাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। দেশে একাধিক আইসিসির আসর হওয়ায় এ খাতে আরো বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং কর্মসংস্থান দুটোই সম্ভব। এটাকেই মূল চিন্তায় নিয়ে ক্রিকেট ও অন্যান্য ক্রীড়াকে নিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরো গতিশীল করা যায় সেটা নিয়ে বিস্তৃতভাবে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের যে সব অঞ্চল বিদেশি পর্যটকবান্ধব সেসব জায়গায় বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা এসব বিভাগীয় শহরগুলোতে সামনের দিনে যেসব খেলা হবে, সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোকে ট্যুর প্ল্যানের অংশ হিসেবে সংযোগ করানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এতে করে অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস যেভাবে বাড়বে, বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জীবনাচার ক্রিকেট ট্যুরিজমের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা আরো সহজ হবে। এতে খেলার সঙ্গে এ দেশের ঐতিহ্য এবং অতীত নিয়েও জানতে পারবে পুরো দুনিয়া।”

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে নিজের পরিকল্পনা সাজিয়ে পরিবেশন করার কথা জানিয়ে শাখাওয়াত বলেন, “সামনে ক্রিকেট ট্যুরিজম ঘিরে যাতে এ দেশের পর্যটন খাত আরো উন্নত হয় সেটিই আমার মূল লক্ষ্য।”

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার পাশাপাশি তিনি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের প্রধান নির্বাহী এবং ভোলা জেলার ক্রীড়া সংগঠক।

গত বৃহস্পতিবার বিসিবি পরিচালকদের সভায় ৩ জনকে অ্যাডভাইজার কমিটিতে মনোনীত করে। তাদের মধ্যে  শাখাওয়াত হোসেন মনোনীত হয়েছেন। অন্য ২ জন হলেন-সৈয়দ আবিদ হোসেন সামী ও ব্যারিষ্টার শাইখ মাহাদী। এদের মধ্য থেকে পর্যটন খাত বিশেষজ্ঞ শাখাওয়াত হোসেনেক ক্রিকেট পর্যটন উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন দেশের পর্যটন উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছেন। এই অঙ্গনে জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে পুরষ্কার পেয়েছেন।

শুরু থেকেই তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন। নিয়মিত খেলার সঙ্গে আছেন। কর্পোরেট বড় দুটি ক্রিকেট আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে মো. শাখাওয়াত হোসেন গত কয়েক বছর যে সফলতা দেখিয়েছেন, তা নজর কাড়বে যে কারো। সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির উপদেষ্টা হওয়ার পরিচয়ের আগেই হোটেল ও পর্যটন ব্যবসার সাফল্য তাকে বসিয়েছে অনেক উঁচু আসনে।

ভোলায় জন্ম নেওয়া এই কর্পোরেট ব্যক্তিত্বের আছে নিজস্ব ক্ষেত্রেও দারুণ সাফল্য। শাখাওয়াত হোসেন এ দেশের পর্যটন খাত ও হোটেল নিয়ে শুধু কাজই করেন না, তিনি এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন এককভাবেই। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছেন শতশত শিক্ষার্থী। দেশের মূল জিডিপি থেকে প্রায় চার ভাগ (৩.৯৮) শতাংশ যে আয় আসে সেটি আরো বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন নতুন নতুন উদ্ভাবনী সব ধারণা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।

বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্ট যেমন অলিম্পিক, ফুটবল বিশ্বকাপ কিংবা ঘরের পাশে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় দেখা যায় সেখানে অঞ্চল ভেদে ওই ক্রীড়াযজ্ঞকে ঘিরে চলে ব্যাপক পরিবর্তন। যা জীবনমানে রেখে যায় দীর্ঘমেয়াদে উন্নতির ছাপ। সে কারণেই আধুনিক হোটেল ম্যানেজমেন্টে স্পোর্টস ট্যুরিজম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

নিজের জন্মস্থানেও ক্রিকেটের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন বেশ বড় একটা সময়। এ সঙ্গে যোগ হয়েছে সফলভাবে দুটি বিহা (বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন) টুর্নামেন্ট। সদ্য সমাপ্ত আসরে ৫১টি হোটেল থেকে প্রধান ২০টি হোটেল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বাংলাদেশ হাউসকিপার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে স্বতন্ত্র আরো একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজন করে আসছেন তিনি।

আগামী দিনে তার হাত ধরে পর্যটন ও বাংলাদেশের ক্রিকেট আরো একটা ধাপ উঁচুতে পৌঁছে যাবে, এ আশা করতেই পারে সংশ্লিষ্টরা। শাখাওয়াত হোসেনের চাওয়া একটাই, নতুনভাবে বাংলাদেশের ইতিবাচক ছবি পুরো বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। যেখানে ক্রিকেট ট্যুরিজম শব্দটাও জায়গা করে নেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

শাখাওয়াত হোসেন হসপিটালিটি ও পর্যটন শিল্পে ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যার মধ্যে ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স অফ ফিলোসফি (এমফিল) এবং এমবিএ।

তিনি বাংলাদেশের আতিথেয়তা ও পর্যটন শিল্পের একজন স্বনামধন্য পেশাদার ব্যক্তিত্ব। তার কর্মজীবনে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামিদামি হোটেলে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। সর্বোপরি, তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার  শক্তিশালী নেতৃত্বের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। প্রতিযোগীদের শক্তি, অর্থনৈতিক প্রবণতা, সরবরাহ এবং চাহিদা সহ সামগ্রিক বাজার সম্পর্কে তার সুদৃঢ় জ্ঞান রয়েছে।

তিনি ওয়েস্টিন ঢাকাকে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় হোটেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অপরিসীম অবদান রেখেছেন এবং এখন তিনি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসিকে সাফল্যের উচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার যাত্রা শুরু করেছেন।

এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের একজন অ্যাডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি।

শাখাওয়াত হোসেন একমাত্র বাংলাদেশি হসপিটালিটি ব্যক্তিত্ব যিনি একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পিএইচডি করছেন এবং একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে স্বীকৃত। বাংলাদেশের একমাত্র হোটেল ব্যবসায়ী যিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একেবারে প্রাথমিক স্তরে এবং এখন একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অধীনে ৩টি কার্যকরী এবং ৩টি আসন্ন আন্তর্জাতিক হোটেল দেখাশোনা করেন।

দীর্ঘ কর্মজীবনে শাখাওয়াত হোসেন অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে- সাউথ এশিয়ান ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড (SATA) ২০২৪-এ দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটন মুখ। ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ কর্তৃক TITA-তে বাংলাদেশের আতিথেয়তা পেশাদার (২০২৪)। হোটেল ইন্ডাস্ট্রি আর্কিটেকচার, ইন্টেরিয়রস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স ২০২৪-এ "বাংলাদেশের সেরা হোটেলিয়ার’ বিজনেস আমেরিকা কর্তৃক ২০২৩-এ আন্তর্জাতিক ব্যবসা শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার। লিডার্স ফোরাম বিডি কর্তৃক ২০২২-এ লিডারশিপ এক্সিলেন্স সামিট-এ আতিথেয়তা এবং পর্যটন নেতৃত্ব পুরস্কার। সাপ্তাহিক অর্থকণ্ঠ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা সেরা আতিথেয়তা ব্যবসায় পেশাদার ফেডারেশন অফ হসপিটালিটি, কর্তৃক আয়োজিত ৭ম আন্তর্জাতিক ব্যবসা জিনিয়াস বাংলাদেশ-২০২২ এর আইকন অফ দ্য হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২২ ট্যুরিজম অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (FoHTEM)। এশিয়ান কারি অ্যাওয়ার্ড ২০২১-এ বিজয়ী-এশিয়ান ক্যাটারিং ফেডারেশন, যুক্তরাজ্য কর্তৃক প্রদত্ত একটি একচেটিয়া আন্তর্জাতিক সম্মাননা।

এছাড়া তিনি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে-সদস্য, পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান মূল্যায়ন কমিটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (MOCAT), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (BIHA) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি। প্রধান উপদেষ্টা, শেফস ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ (CFB)। পরিচালক, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্প দক্ষতা কাউন্সিল (ISC), বাংলাদেশ। সদস্য, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (DCCI) বাংলাদেশ। তিনি বাংলাদেশ ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি সিলেবাস কমিটির মেম্বার। পরিচালক, ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্ক (WTN) ঢাকা চ্যাপ্টার। সহকর্মী সদস্য, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট (BSHRM)। অবৈতনিক পরামর্শদাতা, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কারিকুলাম কমিটির সদস্য, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।-বিজ্ঞপ্তি

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বায়রায় প্রশাসক নিয়োগের রায় বহাল
  • সাতক্ষীরার আদালতে ইভ্যালির রাসেলের তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড
  • শিক্ষা-গবেষণায় বৈষম্য থাকবে না, এমন শিক্ষাঙ্গন করতে চায় বিএনপি: সালাহ উদ্দিন আহমদ
  • নারী অভিযাত্রীর খোঁজে ‘ ট্র্যাক উইথ নিশাত’
  • অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
  • ‘ক্রিকেট ট্যুরিজমকে ঘিরে পর্যটনকে উন্নত করে অর্থনীতিতে অবদানই মূল লক্ষ্য’
  • ছোট উদ্যোগ, বড় দিগন্ত