যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্য রুটের ফ্লাইটে বিলম্ব: বেবিচক
Published: 24th, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারছে না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
বেবিচক জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন এবং কাতার সাময়িকভাবে তাদের আকাশপথ ব্যবহার সীমিত বা বন্ধ রেখেছে। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা থেকে পরিচালিত মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলোতে। বিশেষ করে শারজাহ, আবুধাবি, দুবাই, দোহা, বাহরাইন ও কুয়েত রুটের যাত্রীবাহী ফ্লাইটগুলোকে নির্ধারিত সময়ের বাইরে বিকল্প রুটে যাত্রা করতে হয়েছে। ফলে অনেক ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।
বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, গেল কয়েক দিনে নিম্নোক্ত ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারেনি। এসব ফ্লাইটের মধ্যে রয়েছে শারজাহ রুটে এয়ার এরাবিয়ার ২টি, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের শারজাহগামী ১টি, দুবাই রুটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ১টি, কুয়েতগামী ইউএস-বাংলার ১টি, কুয়েতের জাজিরা এয়ারওয়েজের ২টি, দোহাগামী কাতার এয়ারওয়েজের ২টি, বাংলাদেশ বিমানের ১টি এবং দোহা রুটে ইউএস-বাংলার আরও ১টি ফ্লাইট। প্রতিটি ফ্লাইটই পরবর্তীতে পুনঃনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এই অবস্থায় যাত্রীদের ভ্রমণ-সংশ্লিষ্ট হালনাগাদ তথ্য জানতে নিজ নিজ এয়ারলাইন্সের অফিস অথবা হটলাইনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে বেবিচক।
তারা আরও জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য গন্তব্যে পরিচালিত ফ্লাইটগুলো এখন পর্যন্ত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় শিডিউলে পরিবর্তন হতে পারে।
বেবিচক বলেছে, যাত্রীদের এই অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। একইসঙ্গে সবাইকে অনুরোধ করছি, ভ্রমণের আগে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে ফ্লাইট সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ করতে। এছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতা বিবেচনায় বিমান চলাচলে সাময়িক এ ধরনের বিঘ্ন স্বাভাবিক বলেই মনে করছে সংস্থাটি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও ফ্লাইট চলাচল আগের নিয়মেই ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বেবিচক।
এর আগে গতকাল বেবিচক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং বাহরাইন চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল।
পরবর্তীতে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ জুন ২০২৫ (বাংলাদেশ সময়) রাত ০৩:০০টার পর থেকে উক্ত দেশসমূহ তাদের আকাশসীমা পুনরায় উন্মুক্ত করেছে এবং বর্তমানে দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত ও বাহরাইন রুটে সকল বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ব চক ইসর য় ল ন র ধ র ত সময় ফ ল ইটগ ল পর চ ল ত অন য য় ফ ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
জামিন পেলেন বেরোবি শিক্ষক মাহমুদুল হক
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ‘হার্ট অ্যাটাক’ করে মারা যাওয়া ছমেছ উদ্দিন (৬৫) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে জামিন দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন।
এর আগে দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. সোয়েবুর রহমানের আদালতে জামিন আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে তিনি আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। পরবর্তীতে মাহমুদুল হকের আইনজীবীরা রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য শরনাপন্ন হলে বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ জুলাই হাজিরার দিন ধার্য রয়েছে।
মাহমুদুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম আল মামুন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যে মামলায় মাহমুদুল হককে আসামি করা হয়েছে মামলার বাদী এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি আসামিকে চেনেনও না। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পর যে শিক্ষক প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মামলা এবং তাকে গ্রেপ্তার করা জুলাই চেতনার পরিপন্থি। তিনি জানান, প্রথমে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাহমুদুল হকের জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত বক্তব্য শোনার পর পরবর্তী শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতে আমরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন জানালে বিচারক আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে জামিন আবেদনের আগে ও পরে আদালত চত্বরে জড়ো হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তারা মাহমুদুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান এবং এই মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ছমেছ উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তারা অবিলম্বে মাহমুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান এবং ঘটনাটিকে স্বাধীন চিন্তার ওপর আঘাত হিসেবে আখ্যা দেন।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মৃত্যুর ১০ মাস পর দায়ের করা হত্যা মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে তারা এর নেপথ্যে জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তির দাবি জানান।
মাহমুদুল হক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত বছরের আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে এ বছরের ৩ জুন রংপুর নগরের হাজীরহাট থানায় ৫৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নগরের রাধাকৃষ্ণপুর মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আমেনা বেগম। এ মামলার ৫৪ নম্বর আসামি মাহমুদুল হক।
অন্যদিকে ওই মামলায় বেরোবি শিক্ষককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শনিবার হাজীরহাট থানার ওসি আব্দুল আল মামুন শাহকে বদলি করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আবদুল আল মামুন শাহ রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তাঁকে রংপুর মহানগর পুলিশের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক রাজিবুল ইসলামকে হাজীরহাট থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।