ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারছে না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।

বেবিচক জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন এবং কাতার সাময়িকভাবে তাদের আকাশপথ ব্যবহার সীমিত বা বন্ধ রেখেছে। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকা থেকে পরিচালিত মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলোতে। বিশেষ করে শারজাহ, আবুধাবি, দুবাই, দোহা, বাহরাইন ও কুয়েত রুটের যাত্রীবাহী ফ্লাইটগুলোকে নির্ধারিত সময়ের বাইরে বিকল্প রুটে যাত্রা করতে হয়েছে। ফলে অনেক ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।

বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, গেল কয়েক দিনে নিম্নোক্ত ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারেনি। এসব ফ্লাইটের মধ্যে রয়েছে শারজাহ রুটে এয়ার এরাবিয়ার ২টি, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের শারজাহগামী ১টি, দুবাই রুটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ১টি, কুয়েতগামী ইউএস-বাংলার ১টি, কুয়েতের জাজিরা এয়ারওয়েজের ২টি, দোহাগামী কাতার এয়ারওয়েজের ২টি, বাংলাদেশ বিমানের ১টি এবং দোহা রুটে ইউএস-বাংলার আরও ১টি ফ্লাইট। প্রতিটি ফ্লাইটই পরবর্তীতে পুনঃনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

এই অবস্থায় যাত্রীদের ভ্রমণ-সংশ্লিষ্ট হালনাগাদ তথ্য জানতে নিজ নিজ এয়ারলাইন্সের অফিস অথবা হটলাইনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে বেবিচক। 

তারা আরও জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য গন্তব্যে পরিচালিত ফ্লাইটগুলো এখন পর্যন্ত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় শিডিউলে পরিবর্তন হতে পারে। 

বেবিচক বলেছে, যাত্রীদের এই অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। একইসঙ্গে সবাইকে অনুরোধ করছি, ভ্রমণের আগে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে ফ্লাইট সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ করতে। এছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতা বিবেচনায় বিমান চলাচলে সাময়িক এ ধরনের বিঘ্ন স্বাভাবিক বলেই মনে করছে সংস্থাটি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও ফ্লাইট চলাচল আগের নিয়মেই ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বেবিচক।

এর আগে গতকাল বেবিচক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং বাহরাইন চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ জুন ২০২৫ (বাংলাদেশ সময়) রাত ০৩:০০টার পর থেকে উক্ত দেশসমূহ তাদের আকাশসীমা পুনরায় উন্মুক্ত করেছে এবং বর্তমানে দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত ও বাহরাইন রুটে সকল বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ব চক ইসর য় ল ন র ধ র ত সময় ফ ল ইটগ ল পর চ ল ত অন য য় ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল অফিসে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের সেবায় হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।

এলআর (লোকাল রিলেশন্স) ফান্ডের টাকা নিয়ে এসিল্যান্ড ও ওই কার্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দে নামজারী বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

ভূমি কার্যালয়ে সেবা গ্রহিতাদের দাবি, নামজারি বন্ধ থাকার কারণে জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ হয়ে আছে। ফলে তাদের দূরারোগের চিকিৎসা,মেয়ের বিয়েসহ আর্থিক জরুরী কাজ কর্ম করতে পারছেন না।

জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা অঞ্চল গঠিত। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের সোনারগাঁওয়ে একটি ভূমি কার্যালয় ছিল। পরবর্তীতে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ২০২৩ সালে জামপুর,সাদিপুর,নোয়াগাঁও, বারদী ও কাঁচপুর ইউনিয়নকে আলাদা করে কাঁচপুর সার্কেল অর্ন্তভূক্ত করা হয়।

বিগত সময়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেলে ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হলেও বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদানের পর থেকে জটিলতা তৈরি হয়। ওই রাজস্ব সার্কেল অফিসে সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত এলআর ফান্ডের টাকা বন্টন নিয়ে এসিল্যান্ড ও কর্মচারীদের মধ্যেদ্বন্ধ তৈরি হয়।

বিগত দিনে এলআর ফান্ড থেকে মাস শেষে এসিল্যান্ড ৫০শতাংশ ও কর্মচারী, অফিস খরচ এবং ওমেদারদের সম্মানী বাবদ ৫০ শতাংশ খচর করা হতো। এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদান করার পর এলআর ফান্ড থেকে ৭০শতাংশ তিনি দাবি করেন।

কর্মচারীরা ৩০ শতাংশ টাকায় তাদের খরচ যোগান দেওয়া সম্ভব না বলে দাবি করেন। এসিল্যান্ড তার ৭০শতাংশ টাকা ছাড়া তিনি কোন নামজারি করবেন না বলে কর্মচারীদের জানিয়ে দেন। ফলে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ হয়ে আছে। এসিল্যান্ডের আইডি থেকে দেড় মাস ধরে সেকেন্ড অর্ডার দিচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কার্যালয়ে এক কর্মচারী জানান, এসিল্যান্ড আসার পর ওই কার্যালয়ে ওমেদারদের অপসারণ করা হয়। এলআর ফান্ডের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। তাই নামজারী হচ্ছে না। তবে দু’একটি নামজারী হলেও সেগুলো মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে গোপনে হচ্ছে।  

হুমায়ুন কবির নামে এক সেবা গ্রহিতার দাবি, বর্তমানে এলআর ফান্ডের টাকা দ্বিগুন করা হয়েছে। আগে নামজারির জন্য নামজারি থেকে নামজারি করতে হলে আড়াই হাজার টাকা দিতে হতো। এখন ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। মূলজোত থেকে আগে বিঘা প্রতি ৫ হাজার দিতে হতো। এখন সেটা ১১হাজার করা হয়েছে। বর্তমান এসিল্যান্ড যোগদান করার পর থেকে এ নিয়ম করা হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়গুলোতেও দ্বিগুন টাকা নেওয়া হয়েছে।

সেবা গ্রহিতাদের দাবি, এক/দেড় মাস আগে নামজারির আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নামজারী দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিলেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার করছেন না। ফলে নামজারী করার প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে আটকে আছে। এসব সমাধানের জন্য কেউ দেখার নেই।

সেবা গ্রহিতার আব্দুল মজিদ মিয়া জানান, বারদী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের আওতায় লাধুরচর মৌজায় তার ২৬ শতাংশ জমি নামজারির জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রস্তাব পাঠালেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার না করার কারনে নামজারি হচ্ছে না। ৫দিন এসিল্যান্ড অফিসে ঘুরেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না।

কাঁচপুর ইউনিয়নের বেহাকৈর এলাকার তাহমিনা আক্তার জানান, ১৪ই নভেম্বর তার মেয়ের বিয়ে। জমি বিক্রি করে সকল ব্যয় বহন করবেন। জমি নামজারি না হওয়ার তার মেয়ের বিয়েতে ঋণ করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে জমি বিক্রি করে ঋণের সুদসহ ফেরত দিবেন।

কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাইরুজ তাসনিমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে নামজারির রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌন হয়রানি: বেরোবি শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি
  • সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা
  • হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার অপসারিত