ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য ১৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বুধবার নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির সপ্তম করপোরেশন সভায় এ বরাদ্দ রাখা হয়। যা মোট বাজেটের ৩ শতাংশ।

ডিএনসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার ৬৯ কোটি টাকা এবং ব্যয় প্রাক্কলনও ছয় হাজার ৬৯ কোটি টাকা। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেট আয়ের ৬০ শতাংশের সমপরিমাণ।

সভায় ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, রাজস্ব আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করাটা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ হবে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রস্তুত।

তিনি আরও বলেন, ব্যয়ের ক্ষেত্রে নতুন সৃষ্ট ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট বাজেটের প্রায় ৭৬ শতাংশ অর্থাৎ ৪ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে, যেখানে দুই হাজার ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থাৎ বাজেটের ৩৩ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে, যা টাকার অঙ্কে ৪৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং মোট বাজেটের ৮ শতাংশ। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক বাবদ করা হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪ শতাংশ।

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের হোল্ডিং ট্যাক্স, পরিচ্ছন্নতা, লাইটিং ও স্বাস্থ্য খাত থেকে মোট রাজস্ব আয়ের ৪৫ শতাংশ আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে। 
এছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে এক হাজার ৮০ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ৩০ শতাংশ আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ও অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সভায় ডিএনসিসির সকল ওয়ার্ডে কর্মরত ‘ওয়ার্ড সচিব’ পদবির নাম পরিবর্তন করে ‘ওয়ার্ড সুপারভাইজার’, ‘ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর’ অথবা ‘ওয়ার্ড অর্গানাইজার’ নামকরণের প্রস্তাব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এনস স বর দ দ র ড এনস স

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে

একটানা দুই বছর ধরে পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারে ছিল মন্দাবস্থা। তাতে ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, ডেলিভারি ভ্যানের মতো পণ্য পরিবহনকারী গাড়ির বেচাকেনাও কমে যায়। তবে দুই বছর পর মন্দা কাটিয়ে এই বাজারে বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে, যদিও দুই বছর আগের তুলনায় তা এখনো কম।

পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারে এমন চিত্র উঠে এসেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আমদানির হিসাব এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধনের তথ্যে। বাণিজ্যিক গাড়ির এই হিসাবে রয়েছে ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, রেফ্রিজারেটর ভ্যান, ডেলিভারি ভ্যান ইত্যাদি। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে হালকা ও ভারী পণ্যবাহী।

পণ্যবাহী গাড়ির বাজারে ভারতীয় ব্র্যান্ড টাটা, অশোক লেল্যান্ড, আইশার ও মাহিন্দ্রা, চীনা ব্র্যান্ড ফোটনের অংশীদারত্ব বেশি। এ ছাড়া জাপানের মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের পিকআপ ট্রাকও বাজারজাত হচ্ছে দেশে। এসব ব্র্যান্ডের গাড়ি সরাসরি তৈরি এবং বিযুক্ত অবস্থায় আমদানি হয়। বিযুক্ত অবস্থায় আমদানি হওয়া গাড়ি দেশে সংযোজন করে বাজারজাত করা হয়। এ ছাড়া চেসিসসহ ইঞ্জিন ও গাড়ির বডি আলাদাভাবে আমদানি করেও দেশীয় কারখানায় প্রস্তুত করা হচ্ছে বাণিজ্যিক গাড়ি।

বাণিজ্যিক গাড়ির ব্র্যান্ডগুলোর পরিবেশকেরা জানিয়েছেন, দেশে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। আবার পুরোনো গাড়িগুলো সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে মন্দাবস্থা কাটিয়ে সামনে পণ্যবাহী গাড়ির বাজার আরও বাড়বে।

দুই বছর পর বাড়ছে আমদানি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসেবে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে পণ্যবাহী বাণিজ্যিক গাড়ি সবচেয়ে বেশি গাড়ি আমদানি হয়েছে ২০২১–২২ অর্থবছরে। এ সময়ে ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, ডাম্প ট্রাক, রেফ্রিজারেটর ভ্যান তৈরি ও বিযুক্ত অবস্থায় আমদানি হয় ২৮ হাজার ৮৯৭টি। পরের অর্থবছরে তা কমে আসে ১২ হাজার ৯৩৯টিতে। দুই বছরের মাথায়, অর্থাৎ ২৩–২৪ অর্থবছরে তা আরও কমে ১২ হাজার ৮১০টিতে নেমে আসে।

দুই বছর কমতে থাকা আমদানি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে ২৪–২৫ অর্থবছরে। এ সময়ে বাণিজ্যিক গাড়ি আমদানি হয় ১৪ হাজার ১৯৭টি। এ হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে পণ্যবাহী বাণিজ্যিক গাড়ি আমদানি বেড়েছে ১১ শতাংশ।

কখন কত গাড়ির নিবন্ধন

গাড়ি কেনার পর নিবন্ধন করাতে হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে ২০২১ সালে। এ সময় প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ৮২৭টি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে। বিআরটিএ তথ্য অনুযায়ী, এরপর গাড়ির নিবন্ধন কমে যায়। তবে দুই বছর ধরে ধীরে ধীরে নিবন্ধনের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৪ সালে প্রতি মাসে গড়ে গাড়ি নিবন্ধন হয় ৯৫৪টি, যা এ বছর গড়ে বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২০০টি।

ভারতের ব্র্যান্ডের প্রাধান্য, বিক্রি বাড়ছে চীনা ব্র্যান্ডের

পণ্যবাহী বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারে অনেক দিন ধরেই শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় ব্র্যান্ডগুলো। এ ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে টাটা ব্র্যান্ডের গাড়ি। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক টাটা মোটরসের অনুমোদিত পরিবেশক নিটল–নিলয় গ্রুপের নিটল মোটরস। ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশে টাটা মোটরসের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে নিটল–নিলয় গ্রুপ। বাজারে সবচেয়ে বেশি অংশীদারত্ব নিয়ে দেশের বাণিজ্যিক গাড়ির জগতে প্রতিনিধিত্ব করছে তারা।

পণ্যবাহী গাড়ির বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অশোক লে–ল্যান্ড ব্র্যান্ডের গাড়ি। ইফাদ গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ইফাদ অটোস ১৯৮৫ সাল থেকে দেশে অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান বাজারজাত করে আসছে।

তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের আইশার ব্র্যান্ডের গাড়ি। আইশার ট্রাকের স্থানীয় পরিবেশক রানার গ্রুপ। ভারতের এই তিন ব্র্যান্ড পণ্যবাহী গাড়ির বাজারে অনেক দিন ধরে প্রাধান্য বিস্তার করে আসছে। তবে এখন চীনের ব্র্যান্ডেরও ধীরে ধীরে বাজার অংশীদারত্ব বাড়ছে। যেমন দেশের বাজারে খুব দ্রুত চীনের ফোটন ব্র্যান্ড চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে। এই গাড়ির পরিবেশক এসিআই মোটরস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসেবে, গত চার বছরের ব্যবধানে এই গাড়ির আমদানি গড়ে প্রতিবছর ৩৫ শতাংশ হারে বেড়েছে।

আমদানির তথ্য অনুযায়ী, এসব ব্র্যান্ড ছাড়াও ভারতের মাহিন্দ্রা ব্র্যান্ডের ট্রাক–পিকআপ এবং জাপানের মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের পিকআপ বাজারজাত হচ্ছে দেশে।

পণ্য পরিবহন বাড়ছে, গাড়ি বেচাকেনা বৃদ্ধির আশা

পণ্যবাহী গাড়ির বাজার মূলত দেশে পণ্য পরিবহনের হার বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। মোটাদাগে দুই ধরনের পণ্য পরিবহনে পণ্যবাহী গাড়ি ব্যবহৃত হয়। এক. আমদানি–রপ্তানি পণ্য। দুই. দেশীয় উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও কারখানায় তৈরি পণ্য।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, ২৪–২৫ অর্থবছরে আমদানি–রপ্তানি পণ্য পরিবহন হয়েছে ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টন, যা ২৩–২৪ অর্থবছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি।

গাড়ি বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আমদানি–রপ্তানি পণ্য পরিবহন বাড়লে পণ্যবাহী গাড়ির বেচাকেনাও বাড়বে। অর্থাৎ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়লে এই খাতের বাজারের আকারও বাড়বে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল ‘ট্রায়োন্ডা’ সম্পর্কে জেনে নিন
  • ভারতে ১৪ দিনে ২০ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানি
  • কেনিয়াকে কাঁদিয়ে বিশ্বকাপে ফিরল জিম্বাবুয়ে
  • আবারও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামিবিয়া
  • বুয়েটে স্নাতক শ্রেণির বিভিন্ন লেভেল বা টার্মের সংশোধিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ
  • এডিবি বৃত্তি: টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়নে মাস্টার্সের সুযোগ
  • বাজারে এখনো কদর ইনস্ট্যান্ট কফির
  • শুল্কছাড়েও দেশি বিনিয়োগ নেই কনটেইনার পরিবহন খাতে
  • বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়ও ৩ হজ প্যাকেজ, সাধারণ প্যাকেজে ব্যয় বেড়েছে ২৭ হাজার টাকা
  • বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে