২০২৬ সালের জুলাইয়ে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হবে
Published: 25th, June 2025 GMT
২০২৬ সালের ১ জুলাই পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হবে বলে জানিয়েছেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের (পিপিএ) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল। তিনি বলেছেন, ‘পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের প্রারম্ভিক সুযোগ-সুবিধাদি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। টার্মিনাল, সংযোগ সড়ক ও আন্ধারমানিক নদের ওপর সেতু নির্মাণ শেষে ২০২৬ সালের ১ জুলাই পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হবে।’
পায়রা বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং অপারেশনাল কার্যক্রমবিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল (পিপিএফটি) ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান মাসুদ ইকবাল বলেন, নিজস্ব টার্মিনালের অপারেশন শুরুর আগেই অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইতিমধ্যে পায়রা বন্দর ৫২৯টি বৈদেশিক জাহাজ ও ৩ হাজার ৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ জাহাজ নিরাপদে হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হয়েছে। এতে সরকার প্রায় ২ হাজার ৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমান সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের কথা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে। এর কাজ খুব দ্রুতই শুরু হবে। এ সড়ক নির্মিত হলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়োজনে এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) পরিমল চন্দ্র বসু, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, উপপরিচালক মো.
বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমোডর মোহাম্মদ আবদুল কাদের পায়রা বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে বন্দরের ভূমিকা নিয়ে একটি ‘ভিডিও ডকুমেন্টারি’ উপস্থাপন করেন।
পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন, চায়না হারবার অ্যান্ড চ্যানেল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো, চায়না শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, সার্ভিস জেটি এবং জেটি–সংলগ্ন সড়কের কাজ ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ, ইয়ার্ড এবং জেটির কাজ ৬৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও সেতুর কাজ প্রায় শেষের পথে। এ ছাড়া বানতিপাড়া বাজার থেকে সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ছয় লেনের সড়কের কাজও শেষ হয়েছে। এ পর্যন্ত পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমে ৭ হাজার ৩৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে মতবিনিময় সভায় জানান বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমোডর মোহাম্মদ আবদুল কাদের।
সভায় ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘পায়রা বন্দরকে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একটি আঞ্চলিক সহায়ক কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পায়রা বন্দর যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারবে।’
২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়ায় দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট এ সমুদ্রবন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। অপর দিকে ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়ায় পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের (পিপিএফটি) উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুরু হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলে এই বছরটা কেমন কাটলো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার
বিশ্বকাপের ক্ষণ গুনতে গুনতে ২০২৫ সালকে বিদায় জানাল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। সামনের ২০২৬ দুই দেশের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপের বছর বলে কথা! চার বছর ধরে ফুটবলের পরাশক্তি দেশগুলো অপেক্ষায় থাকে এই সময়টির। বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে চার বছরের জন্য নিজেদের সিংহাসন ও মর্যাদাকে সমুন্নত করার এটিই একমাত্র উপলক্ষ।
আর বিশ্বকাপ মানেই উত্তাপের বড় একটি অংশজুড়ে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার নাম। বিশ্বব্যাপী দক্ষিণ আমেরিকার এই দুই দেশের কোটি সমর্থক নিজ দলের হাতে ট্রফি দেখার অপেক্ষায় থাকেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে এই অপেক্ষাটা ঘুচেছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের, লিওনেল মেসিরা ট্রফি হাতে তুলেছেন ৩৬ বছর পর। ব্রাজিলের এখনকার অপেক্ষাটা ২০০২ সালের পর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগের বছরে দুই দেশ কেমন খেলল, দেখে নেওয়া যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই দশকটাকে কেউ চাইলে আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির দশক হিসেবেও মনে রাখতে পারে। ২০২২ বিশ্বকাপ জিতে ফুটবলে নিজেদের হারানো রাজত্ব পুনরুদ্ধার করেছে ‘আলবিসেলেস্তা’রা। এর আগে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জিতে আর্জেন্টিনার উত্থানের গল্পটা শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুনট্রফি জেতায় সবচেয়ে সফল ১০ জাতীয় ফুটবল দল, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল কোথায়১৯ জুলাই ২০২৫সেবার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের জানান দেয় মেসির আর্জেন্টিনা। এরপর ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে ফিনালিসিমাও জিতে নেয় তারা। আর বিশ্বকাপের পর গত বছর আর্জেন্টিনা জিতেছে টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকা শিরোপা। মেসিকে ঘিরে আর্জেন্টিনায় এখন নতুন একটি ফুটবল–প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটেছে। ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্যাটনটা থাকবে তাঁদের হাতেই।
২০২৫ সালে আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স ছিল মূলত আগের চার বছরের ধারাবাহিকতা। লিওনেল স্কালোনির অধীনে আর্জেন্টিনার অবিশ্বাস্য ছন্দ অব্যাহত ছিল এই বছরও। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আঞ্চলিক লড়াইয়ে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে ছিল স্কালোনির দল। এ বছর সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনা ম্যাচ খেলেছে ৯টি। এর মধ্যে জিতেছে ৭টিতে, ১টি করে ড্র ও হার। এই ৯ ম্যাচে আর্জেন্টিনা গোল করেছে ১৯টি, বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ৩টি, যা আর্জেন্টিনার আক্রমণ ও রক্ষণের শক্তিমত্তারই জানান দিচ্ছে।
মেসিই এখনো আর্জেন্টিনার সেরা ফুটবলার