রাজধানীর বিজয় সরণিতে ভেঙে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়’ ভাস্কর্যের জায়গায় গড়ে তোলা হবে ‘জুলাই শহীদদের স্মরণে ভাস্কর্য ও উন্মুক্ত স্থান’। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এই ভাস্কর্য নির্মাণ করবে। এটির পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার করপোরশন মৃত্যুঞ্জয় ভাস্কর্যের বাকি সাতটি দেয়াল ভেঙে ফেলেছে। 

সূত্র জানায়, ডিএনসিসির বোর্ড সভায় জুলাই শহীদদের স্মরণে ভাস্কর্য ও উন্মুক্ত স্থান গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রকৌশল বিভাগ পরিকল্পনা ও নকশা প্রস্তুত করছে। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হবে। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এজাজ মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন ও স্বাধীনতাকে বিবেচনায় রেখেই ভাস্কর্য তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এ সময় ছাত্র–জনতা বিজয় সরণির মৃত্যুঞ্জয় ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয়েছিল। জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্ভোধন করেছিলেন। দৃষ্টিনন্দন চত্বরে স্থাপন করা হয় ভাস্কর্যটি। এর দেয়ালে ম্যুরালও স্থান পায়। চত্বরের সাতটি দেয়ালে ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদানের নানা দিক চিত্রিত করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ স কর য ম ত য ঞ জয় ভ স কর য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে

২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে এরপরেও কিছু উদ্বেগ অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে ছাত্র বিক্ষোভ এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগ দলের যুব সংগঠনের সাথে সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হওয়ার পরে ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ‘প্রধান উপদেষ্টা’ (প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য) ভূমিকায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। 

পূর্ববর্তী সরকার বেআইনি হত্যাকাণ্ড; গুম; নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক, বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি; স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার বা আটক; পূর্ববর্তী সরকারের অন্য দেশে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দমন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমে স্বাধীনতার উপর গুরুতর বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল, যার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন রয়েছে। সাবেক সরকারের আমলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিক গ্রেপ্তার বা বিচার ও সেন্সরশিপ আরোপ, শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতার উপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ; শ্রমিক কর্মী বা ইউনিয়ন সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হুমকি এবং শিশুশ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপকভাবে দায়মুক্তির অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সনাক্ত ও শাস্তি দেওয়ার জন্য খুব কমই বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছিল। পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পূর্ববর্তী সরকারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে।

মানবাধিকার সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে জুলাই এবং আগস্ট মাসে সাবেক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের সাথে কাজ করেছে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করার জন্য তার সাধারণ বিচার ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল উভয়কেই ব্যবহার করেছে।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ