রাজধানীর রাস্তায় চলাচলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের একটি দলের নকশা করা রিকশা অনুমোদন দিচ্ছে সরকার। ওই রিকশা চালাতে চালকদের দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স। চালকেরা প্রশিক্ষণ নিয়ে লাইসেন্স পাওয়ার পর ঢাকার প্রধান সড়ক বাদে পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে এসব রিকশা চালানোর অনুমতি পাবেন।

নতুন নকশার ব্যাটারিচালিত এসব রিকশা চালাতে রিকশাচালকদের যাঁরা প্রশিক্ষণ দেবেন, সরকারিভাবে সেই প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন ৩০০ জন প্রশিক্ষকের বা ‘মাস্টার ট্রেইনারের’ প্রশিক্ষণে ব্যয় করা হচ্ছে মোট ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রথম দফায় ২০০ জন প্রশিক্ষককে তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে আগামীকাল শনিবার এবং রবি ও সোমবার (২৮, ২৯ ও ৩০ জুন)।

রিকশা চালানোর প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাবদ এ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে। ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামকে। ব্র্যাকের ২৩ জন প্রশিক্ষক তাঁদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

ঢাকা উত্তর সিটি ও ব্র্যাক সূত্রে জানা গেছে, রিকশা চালানোর প্রশিক্ষক হতে নির্বাচিত ৩০০ জনের মধ্যে ২০০ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে। এর মধ্যে ১৭৫ জন হলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, যাঁরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বাকি ১০০ জন হলেন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধি।

বুয়েটের নকশা করা এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর বিষয়ে চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ৩০০ প্রশিক্ষক তৈরিতে প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে আগামীকাল শনিবার। তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁরা চালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন। ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ লকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতু থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে রেললাইন

যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ বৃহস্পতিবার নাট-বোল্টসহ যন্ত্রাংশ খোলার কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, গত ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হয়েছে। এরপর থেকে সড়ক সেতু দিয়ে ট্রেন চলছে না। যমুনা সেতুর ওপর রেললাইনের প্রয়োজন নেই। এ কারণে সেতু বিভাগ ও রেল বিভাগের মাধ্যমে যৌথ পরিকল্পনায় সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে।

যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, রেললাইন খোলা শুরু হয়েছে। উপরিভাগে যানবাহনের জটলা ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আগামীতে সেতুর দুটি লেন প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেললাইন খুলে নেওয়া হলে সড়ক সেতুতে আরও প্রায় সাড়ে তিন মিটার জায়গা বাড়বে। এটা মূল সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযোগ করতে পারব। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার বাড়বে। এ ধরনের সেতু আন্তর্জাতিকভাবে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত হয়। বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতি লেন ৬ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ। এ কারণে দুর্ঘটনা বা যানজট হয়। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেন প্রস্থ হবে প্রায় ৮ মিটার। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। প্রশস্তকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্প সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সাসেক-২) পরিচালক ড. ওয়ালীউর রহমান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, এবারের ঈদে সেতু দিয়ে এক দিনে ৬৫ হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঈদের আগে-পরে বিপাকে পড়ে। সেতুর ওপর কয়েকটি দুর্ঘটনায় এলেঙ্গা ও সিরাজগঞ্জসহ দুই পারে থেমে থেমে যানজট হয়। সেতুর উপরিভাগ প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনা ও যানজট কমতে পারে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন হয়। এর নকশায় রেলপথ ছিল না। পরে সেতুর ওপর উত্তর পাশে লোহার খাঁচা, বার ও অ্যাঙ্গেল যুক্ত করে রেললাইন বসানো হয়। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। নির্দেশনা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলার কারণে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতি বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ। সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি তৈরি হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ